চেক প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) জিয়াদুর রহমান আজ সোমবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই আদালতের বেঞ্চ সহকারী আতিকুর রহমান।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, চেক প্রতারণার মামলায় গত ১৯ জানুয়ারি সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। পরে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দেন। আজ সোমবার আদালত সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিলেন।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, চেক প্রতারণার অভিযোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সাকিব আল হাসানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আইএফআইসি ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাহিবুর রহমান। আদালত সেদিন সাকিব আল হাসানসহ চার আসামিকে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারির আদেশ দেন।

মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ঠিক করা হয়েছিল ১৯ জানুয়ারি। সেদিন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের পরিচালক ইমদাদুল হক। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী শাহাগীর হোসাইন আদালতে সেদিন হাজির হননি।

বাদীপক্ষ থেকে সাকিব আল হাসান ও গাজী শাহাগীরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। আদালত পরে সাকিব আল হাসান ও গাজী শাহাগীরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। মামলার অপর আসামি মালাইকার বেগম মারা গেছেন বলে আদালতকে জানানো হয়। আদালত তাঁর মৃত্যু-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাকিব আল হাসান। সাত বছর আগে (২০১৭ সাল) আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে প্রতিষ্ঠানটি দেড় কোটি টাকা ঋণ নেয়। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। পরে ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে নোটিশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার দুটি চেক দেয় ব্যাংকে। তবে অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেক দুটি প্রত্যাখ্যান করা হয়। পরে টাকা পরিশোধ করার জন্য সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডকে আইনি নোটিশ পাঠায় আইএফআইসি ব্যাংক। এরপরও টাকা পরিশোধ না করায় গত ১৫ ডিসেম্বর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের মালিক সাকিব আল হাসানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন অ য গ র স ক ব আল হ স ন র পর শ ধ পর য় ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট

সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার আগে হাজতখানার ভেতর থেকে এ বি এম খায়রুল হককে বের করা হয়। এ সময় তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।

হাজতখানার ভেতর থেকে হাঁটিয়ে আদালতের ভেতরের একটি সরু রাস্তা দিয়ে খায়রুল হককে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে আনা হয়। পরে দুজন পুলিশ কনস্টেবল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের হাত ধরে রাখেন। তিনি হেঁটে হেঁটে নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠেন। পরে দোতলা থেকে আবার হেঁটে হেঁটে তিনতলায় ওঠেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়। তখন সময় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট। নিজের দুই হাত পেছনে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তখনো বিচারক আদালতকক্ষে আসেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে থাকেন। কিছুক্ষণ দেখার পর আবার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।

সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতকক্ষে আসেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. ছানাউল্লাহ। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ বি এম খায়রুল হকের নাম ধরে ডাকেন।

তখন রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা শাহবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেক মিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। এসআই খালেক মিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। সেই সংক্ষিপ্ত রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মতপ্রকাশ করেন যে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচন দুটি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলেও সংবিধান সংশোধনের জন্য মত দেন। ওই সংক্ষিপ্ত আদেশটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আদেশের পক্ষে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি), সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) মত দেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের এই তিন বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ মর্মে ঘোষণার বিপক্ষে মত দেন।’

প্রিজন ভ্যানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আজ বুধবার ঢাকার আদালত এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • বিএসবির বাশার প্রতারণার আরও ৯ মামলায় গ্রেপ্তার
  • সালমান, শিবলী ও সায়ান পুঁজিবাজারে ‘আজীবন অবাঞ্ছিত’
  • সালমানকে ১০০ কোটি, সায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা
  • আমির হোসেন আমু ও আবদুস সোবহান গোলাপ নতুন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার