সংগঠনের সব শাখাকে স্বাধীনতা দিবস পালনের আহ্বান জামায়াত আমিরের
Published: 24th, March 2025 GMT
মহান স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। একই সঙ্গে তিনি যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা দিবস পালনের জন্য জামায়াতের সব শাখা এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে জামায়াত আমির শফিকুর রহমান এ আহ্বান জানান। বিবৃতিতে তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘সংকটময়’ উল্লেখ করে মহান আল্লাহর কাছে দেশবাসীর কল্যাণ এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের হেফাজত কামনা করেন।
বিবৃতিতে জামায়াতের আমির বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনতা গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তদানীন্তন শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। তিনি বলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও দুঃশাসনমুক্ত একটি দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সর্বস্তরের জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছরে আজ দেশের মানুষের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি হিসাব করলে দেখা যায়, বহু প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, গত জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ আবার নতুন করে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন করেছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসা জালিমের হাত থেকে মুক্ত হয়ে দেশের মানুষ মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পারছে। দেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছে এবং শান্তিতে-স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারছে।
বিবৃতিতে শফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, পতিত সরকারের দোসররা এবং দেশের স্বার্থান্বেষী মহল বিদেশি আধিপত্যবাদী শক্তির সহায়তায় ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনকে ব্যর্থ করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা দেশকে আবার অস্থিতিশীল করতে চাইছে এবং পতিত স্বৈরাচারকে ফিরিয়ে আনার অপতৎপরতা শুরু করেছে।
এ অবস্থায় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে এবং সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘শান্তি-স্বস্তির নতুন বাংলাদেশ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।’
বিবৃতিতে জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘আমরা মহান স্বাধীনতা দিবসে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ওই সমস্ত জনতাকে—যাঁদের ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করেছে। আমরা আরও স্মরণ করছি, জুলাইয়ে গণ-আন্দোলনের সব শহীদদের এবং আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের। আমরা সব শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত র আম র স ব ধ নত
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।