২৪ দিনে এল ২৭০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়
Published: 25th, March 2025 GMT
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রথম ঈদ সমাগত। এ উপলক্ষে বিদেশ থেকে প্রবাসীরা বৈধ পথে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পাঠাচ্ছেন। ব্যাংকাররা বলছেন, মূলত অর্থ পাচার কমে আসায় প্রবাসীরা তাঁদের আয় পাঠাতে বৈধ পথকে বেছে নিয়েছেন। এর ফলে রমজান মাসে প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এ মাসের প্রথম ২৪ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫২ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রবাসী আয়ের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ব্যাংকাররা আশা করছেন। প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের যে সংকট চলছিল তা অনেকটা কেটে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানান। তাঁরা বলেন, ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল সেটিও কমে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসী আয় আসে ১৬৬ কোটি ডলার। চার দিন পরে অর্থাৎ ১৯ মার্চে ব্যাংকিং চ্যানেল তথা বৈধ পথে আসা প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ২২৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে শুধু ১৯ মার্চ এক দিনেই এসেছে ১৩ কোটি ডলার। আবার ১ থেকে ২২ মার্চ তথা মাসের প্রথম ২২ দিনে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৪৩ কোটি ডলার, যা ২৪ মার্চে বেড়ে ২৭০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়।
সাধারণত দুই ঈদের আগে প্রবাসী আয় বছরের অন্য যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি আসে। গত বছর পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে পাঁচ দিনেই ৪৫ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। অর্থাৎ দিনে গড়ে ৯ কোটি ডলার করে এসেছিল। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গড়ে ১১ কোটি ও দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ে ১২ কোটি ডলার করে এসেছে। পরের চার দিনে প্রবাসীরা অর্থ পাঠানো আরও বাড়িয়ে দেন। এ সময় দৈনিক গড়ে প্রায় ১৫ কোটি ডলার করে পাঠিয়েছেন তাঁরা।
দেশে গত বছরের আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে টানা সাত মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। এ বছরের জানুয়ারিতে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় ৩ শতাংশ বেশি আসে।
সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাস জুলাই–মার্চে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন, যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার।
জানা গেছে ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা করে প্রবাসী আয়ের ডলার কেনা এখন অনেকটা কমে এসেছে। এর ফলে ডলারের দাম ১২৩ টাকার মধ্যেই রয়েছে। এতে পণ্য আমদানিতেও ডলারের দাম কম পড়ছে। আগে একসময় প্রতি ডলারের দাম ১২৮ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
প্রবাসী আয় হলো দেশে ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না, অথবা কোনো দায়ও পরিশোধ করার দরকার পড়ে না। অন্যদিকে রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। আবার বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের রিজার্ভ বা মজুত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বছর র একই সময় ম স র প রথম প রব স র গত বছর এস ছ ল সময় র
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (গভর্নেন্স পারফরমেন্স মনিটরিং সিস্টেম- জিপিএমএস)’ বাস্তবায়নে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার।
সম্প্রতি এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
কমিটিতে বাকি দুই সদস্য হলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি কাজের জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) পরিবর্তে নতুন সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (জিপিএমএস) চালু করা হয়েছে। এই জিপিএমএস বাস্তবায়নে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কমিটিকে সহায়তা করবেন। তাছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।
এ কমিটি জিপিএমএস বাস্তবায়নের বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসে সেকশন ১-এর আওতায় প্রস্তুত করা পরিকল্পনা অনুমোদন দেবে এবং অর্থবছর শুরুর আগে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করবে এ কমিটি।
এছাড়া, প্রতি অর্থবছর শেষে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসের সার্বিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে। জিপিএমএস বিষয়ে সরকারের দেওয়া অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা