তারেক রহমানের নির্দেশে প্রতারণার মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
Published: 27th, March 2025 GMT
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার অভিযোগে আশরাফুজ্জামান মিনহাজ নামে একজনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারেক রহমানই মামলা করার নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ সম্পাদক মো.
মামলার বাদী ইলতুৎমিশ সওদাগর বলেন, “মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে এ প্রতারক হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে তাকে পরবর্তীতে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে স্থান করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বিষয়টি দলের নজরে আনেন। তারেক রহমান তার বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশেই মামলা করেছি। আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।”
মামলায় অভিযোগ করা হয়, আশরাফুজ্জামান একজন মেধাবী প্রতারক। নিজেকে কখনো কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক, কখনো যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড ইউনির্ভাসিটির প্রফেসর পরিচয় দিয়ে সম্মান অর্জন করেন। নিজেকে অক্সফোর্ড ইউনির্ভাসিটির প্রফেসর হিসেবে পরিচয় দেওয়া এ আসামির শিক্ষা বিষয়ক ভ্রান্ত ও মিথ্যা পরিচয়ের সূত্র ধরে সমাজে বিত্তশালী লোকের খুব কাছে যাওয়ার সুযোগ হওয়ার পথ ধরেই বিভিন্ন কাজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদানের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয় করাই তার মূল পেশা।
তার প্রতারণার সূচনা হয় ২০০৮ সালে ওয়ান ইলেভেনের সেনা সমর্থনে আওয়ামী সরকারে উত্থানের মধ্য দিয়ে। ২০০৯ সালে সাহারা খাতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর তার জামাতা পরিচয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের চাকরির পদোন্নতি করা, বদলি করা এবং নিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ সম্পদ অর্জন করে। প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের ও পুলিশের ভয়ভীতি দেখিয়ে নিরীহ ও নিরাপরাধ ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদয় করা তার মূল লক্ষ্য হওয়ার ধারাবাহিকতা সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে জেল হাজতে পাঠান।
আরো বলা হয়, জুলাই-আগস্টের বিপ্লব পরবর্তীতে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় পরিবর্তন করে "বিএনপি" এর স্ট্যান্ডিং কমিটির সমন্বয়ক ও বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে সবার কাছে ক্ষমতাধর হিসেবে সমাদৃত করার জন্য বিদেশি সীম দিয়ে ফেইসটাইম, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলেন। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছে বুঝিয়ে ভিকটিমের কাছে আস্থা অর্জন করে অর্থ আদায় করেন। চলতি মাসে আসামি তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মামলার ২ নম্বর সাক্ষী মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মনোনীত স্ট্যান্ডিং কমিটির সমন্বয়কারী ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন এবং তাকে পরবর্তীতে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে স্থান করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
পরে দলের সিদ্ধান্ত মতে ইলতুৎমিশ সওদাগর এ্যানি শেরেবাংলা নগর থানায় যান মামলা করতে। তবে থানা মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা করলেন তিনি।
ঢাকা/মামুন/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র ক রহম ন র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
সাপ্তাহিক ‘পঙক্তি’র দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারীর সমান অধিকার, সাংস্কৃতিক জাগরণ ও মুক্তচিন্তার বিকাশ ছাড়া বৈষম্যহীন সমাজ গঠন সম্ভব নয় এমন মত প্রকাশ করেছেন বক্তারা।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাপ্তাহিক পঙক্তির দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের
‘সাম্য, মর্যাদা ও আলোকিত সমাজের স্বপ্নে ৭১ ও ২৪ এর তরুণরা’
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, “নারীরা অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও পুরুষতান্ত্রিক নানা বৈষম্য ও হেনস্তার শিকার হন। আমরা দেখছি, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও নারী ও শিশুরা লাঞ্ছিত, নিপীড়িত হচ্ছে, এটি লজ্জার বিষয়। আমরা এমন সমাজ চাই না। আমরা চাই একটি সত্যিকারের বৈষম্যমুক্ত সমাজ, যেখানে নারী–পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত থাকবে।”
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া বলেন, “আমরা বর্তমানে একটি সাংস্কৃতিকভাবে খারাপ সময় পার করছি। একটি নতুন রাজনৈতিক আন্দোলন বারবার ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে যে অবক্ষয় দেখা দিয়েছে, তাতে একমাত্র একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লবই আমাদের জাতিকে রক্ষা করতে পারে।”
কবি ও কলামিস্ট সোহরাব হাসান বলেন, “ফেসবুক–ইউটিউবের যুগে একটি সাহিত্য পত্রিকা টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত কঠিন কাজ। বর্তমানে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এক ধরনের বৈরী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে মাজার, দরগা, শিল্পী ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক তৎপরতা। এই আক্রমণ জাতিসত্তার উপর আক্রমণ, আমাদের শিল্প–সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সুকুমার ভিত্তির উপর আঘাত। এর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে সাপ্তাহিক পঙ্ক্তির সম্পাদক কবি জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না ওরফে পান্না বেগম বলেন, “আজ আমি খুব আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। আমি একজন সফল নারী বলে নিজেকে সম্মান করি। আমি ২৬ বছর ধরে কাজ করি। কারোর মুখাপেক্ষী হইনি। একটি পত্রিকা কারোর সহযোগিতা ছাড়া নিয়মিত প্রকাশ করা এতোটা সহজ নয়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আজকের এই জায়গাটি তৈরি হয়েছে।”
বাংলাদেশের আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মফিজুর রহমান বাবু বলেন, “সাপ্তাহিক পঙ্ক্তি পত্রিকাটি নিয়ে প্রথম থেকেই আমার একটি চিন্তা ছিল। পত্রিকাটির নাম পঙ্ক্তি কেন? খুব চিন্তা করে এর দুইটি কারণ খুঁজে পেলাম। একটি হলো-এই পত্রিকাটির সম্পাদক একজন কবি ও সাংবাদিক। উনার কবিসত্তার চিন্তাধারা থেকে এই নামটি নির্ধারণ করেছেন। কারণ পঙ্ক্তি শব্দের অর্থ কবিতার লাইন বা সারি। আর দ্বিতীয়টি হলো- সম্পাদকের একমাত্র কন্যার নাম পঙ্ক্তি। সন্তানের প্রতি একজন মায়ের যে অসাধারণ ভালোবাসা, তারই বহিঃপ্রকাশ হলো সাপ্তাহিক পঙ্ক্তি।”
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক মানিক মুনতাসির, কবি ও সাংবাদিক বজলুর রহমান, কবি মোশাররফ হোসেন ইউসূফ, বাংলানিউজের সাংবাদিক তুলনা আফরিন প্রমুখ।
ঢাকা/এসবি