পবিত্র রমজানের শিক্ষা বিস্তৃত হোক জীবনব্যাপী
Published: 29th, March 2025 GMT
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ হলো সালাত বা নামাজ। ইমানের পরেই নামাজ। পবিত্র রমজান মাস হলো নামাজের মাস, যেমন তারাবিহর নামাজ ও কিয়ামুল লাইল নামাজের পাশাপাশি পবিত্র রমজানে সাহ্রির বদৌলতে তাহাজ্জুদ নামাজের অভ্যাস গড়া সহজ হয়; এশা ও ফজরের নামাজ জামাতে পড়ার সুযোগ বৃদ্ধি পায়। ফজরের নামাজ আগেভাগে পড়ে ঘুমানোর কারণে সকালে ইশরাক নামাজ পড়ার সুবিধা হয়।
পবিত্র রমজানের কারণে কাজের চাপ কম থাকায় চাশত নামাজ ও জোহরের আগে আওয়াবিন নামাজ আদায়ের সুযোগ হয়। বিকেলে অফিস বা কর্মস্থল থেকে আগে ফেরার কারণে আসরের নামাজ জামাতে পড়া যায়। একসঙ্গে ইফতার করার সুবাদে মাগরিবের নামাজের জামাতও পাওয়া যায়। অন্যান্য নফল নামাজও বেশি পড়া হয়। পবিত্র রমজানেই নামাজের পূর্ণতা আসে।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের তৃতীয় স্তম্ভ হলো জাকাত। সাহাবায়ে কিরাম পবিত্র রমজানেই জাকাত প্রদান করতেন। পবিত্র রমজানে জাকাত প্রদানে চান্দ্রবর্ষের হিসাব অনুযায়ী সঠিকভাবে জাকাত প্রদান করা সহজ হয়।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের চতুর্থ স্তম্ভ হলো হজ। পবিত্র রমজানে ওমরাহ পালন করলে নবীজি (সা.
রোজার ফিদইয়া পবিত্র রমজানেরই অংশ। রোজা একটি শারীরিক ও মানসিক ইবাদত। কিন্তু অসুস্থ ও দুর্বল ব্যক্তির জন্য কাজার পাশাপাশি অপারগতায় ফিদইয়ার বিধান রাখা হয়েছে, যা আর্থিক ইবাদত। এতে বোঝা যায় রোজার পরিধি কত ব্যাপক।
রোজার কাফফারা পবিত্র রমজানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রোজা শারীরিক ইবাদত হওয়া সত্ত্বেও দুর্বলচিত্তের ব্যক্তি যদি রোজা ভঙ্গ করেন, তবে তাঁর জন্য কাফফারার বিধান রয়েছে। এটি হলো দাস মুক্তি দেওয়া অথবা ৬০ জন গরিবকে দুই বেলা পরিপূর্ণ আহার করানো অথবা একাধারে ৬০টি রোজা রাখা। অর্থাৎ যদি কেউ রমজান মাসের একটি রোজা ভঙ্গ করেন, তবে তাঁকে ৬০ দিনের রোজা রাখতে হবে অথবা কাফফারা আদায় করতে হবে। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, দান–খয়রাত ও সমাজকল্যাণই পবিত্র রমজানের অন্যতম উদ্দেশ্য।
রোজা শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হয়। দাতা ও গ্রহীতার সুবিধার্থে পবিত্র রমজানেও এটি প্রদান করা যায়। ঈদের সঙ্গে ফিতরার সম্পৃক্ততার কারণে এর নাম হয়েছে ঈদুল ফিতর। সদকাতুল ফিতর হলো ঈদের আনন্দ সর্বজনীন করার উপায়। ধনী–গরিব সবাই যেন ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারেন, সে জন্য এই ব্যবস্থা। সদকাতুল ফিতর পবিত্র রমজানে রোজা পালনের শুকরিয়াস্বরূপ এবং এটি রোজাকে পূর্ণতা দেয়।
পবিত্র রমজানের বিশেষ উপহার হলো ইতিকাফ। মানবজীবনে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের অন্যতম মাধ্যম হলো ইতিকাফ। পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। এখান থেকেও পবিত্র রমজানের মহিমা বোঝা যায়। এক দশকের কম সময়ের ইতিকাফ নফল হলেও এই ইতিকাফ অন্য সময়ের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি ফজিলতের। ইতিকাফ বছরের যেকোনো সময় করা যায়, তবে সর্বনিম্ন সীমা হলো এক দিন অর্থাৎ সূর্যাস্তের আগে থেকে পরের দিনের সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
পবিত্র রমজানের অনন্য উপহার হলো শবে কদর। এটি এমন এক রাত, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। হাজার মাস মানে প্রায় ৮৩ বছর ৪ মাস, যা একটি মানবজীবনের সময়ের সমান। সুতরাং পবিত্র রমজানের সুফল জীবনব্যাপী।
● মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম র প
এছাড়াও পড়ুন:
চুম্বন দৃশ্যের অভিজ্ঞতা ভয়ংকর ছিল: মধু
বলিউড অভিনেত্রী মধু শাহ। নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী মধু নামেই পরিচিত। মনি রত্নম নির্মিত ‘রোজা’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান। নব্বই দশকে একটি সিনেমায় চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করেন মধু, যা ভীষণ তিক্ত অভিজ্ঞতা ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
কয়েক দিন আগে নিউজ১৮-কে সাক্ষাৎকার দেন মধু। এ আলাপচারিতা তিনি বলেন, “আজকাল সিনেমায় যে ধরনের চুম্বন দৃশ্য দেখা যায় এটি তেমন ছিল না। এটি ঠোঁটে খোঁচা দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা ছিল। সত্যি এটি আমার খারাপ লেগেছিল।”
চুম্বন দৃশ্যের অভিজ্ঞতা ভয়ংকর ছিল। তা জানিয়ে মধু বলেন, “শুটিং শুরু করার আগে আমাকে চুমু খেতে বলা হয়। কিন্তু তার আগে এ বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। এ নিয়ে যখন প্রশ্ন করি, তখন তারা আমাকে পাশে নিয়ে গিয়ে কথা বলে। তারা আমাকে ব্যাখ্যা করে, এই দৃশ্যটি কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই কারণেই আমি চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করি। কিন্তু এটা ছিল আমার করা সবচেয়ে ভয়ংকর কাজ।”
চুম্বন দৃশ্যে যখন অভিনয় করেন, তখন মধুর বয়স ছিল ২২ বছর। তা স্মরণ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “সিনেমায় চুম্বন দৃশ্যটির কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। সিনেমায় দৃশ্যটি অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য পরিচালকের সঙ্গে কোনো কথাও হয়নি। আমি এটি এড়িয়ে গিয়েছিলাম। কেবল বয়সের দিক দিয়ে নয়, আমি সবদিক থেকেই তখন খুব ছোট ছিলাম। এখনকার ২২-২৪ বছর বয়সি ছেলে-মেয়েরা ভীষণ চালাক। কিন্তু ২২ বছর বয়সে আমি খুব বোকা ছিলাম।”
১৯৯৬ সালে দীপা মেহতা নির্মাণ করেন ‘ফায়ার’ সিনেমা। এতে শাবানা আজমি, নন্দিতা দাস সমকামী চরিত্রে অভিনয় করেন। এ সিনেমা পর্দার ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে মধুর ধারণা বদলে দিতে শুরু করে। এ তথ্য উল্লেখ করে মধু বলেন, “আমি বলছি না, পর্দায় চুম্বন করা খারাপ। ‘ফায়ার’ সিনেমায় যখন শাবানাজির মতো অভিনেত্রীর অভিনয় দেখি, তখন আমার মনে হয়েছিল সত্যি তারা তাদের প্রতিবন্ধকতা ভেঙে ফেলেছেন, যা আমি তখন করতে পারিনি। আমি সেই সব শিল্পীদের প্রশংসা করি, যারা মাথা ন্যাড়া করতে পারেন বা সিনেমায় সমকামীর ভূমিকায় অভিনয় করতে পারেন।”
১৯৯১ সালে তামিল ভাষার সিনেমার মাধ্যমে রুপালি জগতে পা রাখেন মধু। একই বছর ‘ফুল আউর কাঁটা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন এই অভিনেত্রী। হিন্দি সিনেমায় পা রেখেই নজর কাড়েন। ৫৬ বছরের মধু অভিনয়ে এখন খুব একটা সরব নন। তবে প্রতি বছরে দুই একটা সিনেমায় দেখা যায় তাকে।
ঢাকা/শান্ত