ইলন মাস্কের প্রতারণা মামলা খারিজের আবেদন খারিজ আদালতে
Published: 30th, March 2025 GMT
বিপদ যেন হাতছানি দিয়েই ডাকছে বিশ্বের এক নম্বর বিলিয়নিয়ার তথা শীর্ষ অতি ধনী ইলন মাস্ককে। ইতিমধ্যে তাঁর বৈদ্যুতিক গাড়ির কোম্পানি টেসলার শেয়ারের দাম এবং স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কোম্পানি স্টারলিংক ব্যবসায় মার খেতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা একটি প্রতারণা মামলা খারিজের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিচারক বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে হওয়া প্রতারণা মামলা খারিজ করার আবেদন খারিজ করেন।
ওই মামলায় দাবি করা হয়েছে যে ইলন মাস্ক সাবেক সোশ্যাল মিডিয়া টুইটারের (বর্তমানে এক্স) শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। অভিযোগ হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিটিতে প্রাথমিক বিনিয়োগের তথ্য প্রকাশ করতে মাস্ক লম্বা সময় নিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে ম্যানহাটনের জেলা বিচারক অ্যান্ড্রু কার্টারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, শেয়ারহোল্ডাররা যথাযথভাবে দাবি করেছেন যে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষস্থানীয় উপদেষ্টা ইলন মাস্ক নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এ-সংক্রান্ত তথ্য যেভাবে দিয়েছেন, তা সঠিক ছিল না। তিনি টুইটারের ভবিষ্যৎ নিয়েও বিভ্রান্তিকর টুইট করেছেন এবং ‘নীরবে’ তাঁর টুইটার অংশীদারত্ব করায়ত্ত করেছেন। এসব কৌশলের মাধ্যমে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে জালিয়াতি করেন।
বিচারক অ্যান্ড্রু কার্টার অবশ্য পদক্ষেপ নেওয়াসংক্রান্ত কিছু দাবি খারিজ করেছেন। তিনি মামলার উপযুক্ততা নিয়ে রায় দেননি। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (এসইসি) দেরিতে তথ্য প্রকাশের জন্য ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে।
ইলন মাস্কের আইনজীবীরা অবশ্য এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের মন্তব্য করার অনুরোধে কোনো সাড়া দেননি।
এই মামলার বাদীদের নেতৃত্বে রয়েছে ওকলাহোমা ফায়ারফাইটার্স পেনশন অ্যান্ড রিটায়ারমেন্ট সিস্টেম। বাদীরা বলেছেন, ইলন মাস্ক ২০২২ সালের ২৪ মার্চ যে টুইটারের ৫ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন, সে তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে তিনি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্ধারিত সময়সীমা উপেক্ষা করেছেন। তিনি এসইসিতে ফাইলিং তথা নথিপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার কেনার তথ্য প্রকাশ করার আগে অতিরিক্ত ১১ দিন অপেক্ষা করেছেন। বাদীদের অভিযোগ, সময় ক্ষেপণ করে মাস্ক ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করেন। এতে শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতি হয়েছে। কারণ, তাঁরা কৃত্রিমভাবে দাম কমানোর ফাঁদে পড়ে টুইটারের শেয়ার বিক্রি করেছেন। ২০২২ সালের অক্টোবরে মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার পুরোপুরি কিনে নেন।
৪৩ পৃষ্ঠার সিদ্ধান্তে বিচারক অ্যান্ড্রু কার্টার বলেছেন, ইলন মাস্কের ৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ারের তথ্য প্রকাশকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে দেখা যেতে পারে।
অ্যান্ড্রু কার্টার বলেন, শেয়ারহোল্ডাররা ২০২২ সালের ২৬ মার্চ দুটি টুইটের জন্যও মামলা করতে পারেন, যেখানে মাস্ক বলেছিলেন যে তিনি টুইটারের একজন প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি করার কথা গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তাভাবনা করছেন, এবং টুইটার কিনে তার পাখির লোগোটিকে কুকুরে পরিণত করবেন, ‘হা হা হা’।
মাস্কের আইনজীবীরা বলেছেন, টুইটগুলো প্রতারণার উদ্দেশ্যে করেননি। কিন্তু বিচারক কার্টার বাদীদের যুক্তিকে ‘অন্তত আকর্ষণীয়’ বলে মনে করেন।
মাস্ক তাঁর ৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার কেনার তথ্য প্রকাশ করার পর ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল টুইটারের শেয়ার ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
এদিকে সম্প্রতি এক খবরে বলা হয়েছে, বিপদেই পড়ে গেছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। রাজনীতিতে নাম লেখানোর পর একের পর এক ঝামেলা লেগেই আছে তাঁর জীবনে। টেসলার শেয়ারের দাম কমছে, তাতে কমছে নিজের সম্পদমূল্য। আবার বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে মানুষ বিক্ষোভও করছে। পাশাপাশি এবার মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্সের অন্তর্ভুক্ত স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কোম্পানি স্টারলিংকের ব্যবসাও মার খেতে শুরু করেছে। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক র ২০২২ স ল র খ র জ কর ট ইট র র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
নারায়ণগঞ্জ শহরের শায়েস্তা খান সড়কে অবস্থিত জনতা ব্যাংক বিবি রোড কর্পোরেট শাখার এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহককে হয়রাণির অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী গ্রাহক খুরশিদা জানান, বড় বোনকে সঙ্গে নিয়ে ডিপিএসের টাকা তুলতে গেলে নানা টালবাহানা করেন ওই কর্মকর্তা। এর আগে বড় বোনের ডিপিএস ভাঙ্গানোর সময়ে টাকা চেয়ে না পেয়ে ক্ষিপ্ত ছিলেন তিনি। গুণধর ওই কর্মকর্তার নাম আশরাফ। তিনি ওই শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জনতা ব্যাংকের ভিজিল্যান্স ডিপার্টমেন্টের উপ মহাব্যবস্থাপক বরাবর ইমেইলে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে খুরশিদা জানান, গত ১৪-০৯-২০২৫ তারিখে আমি আমার ডিপিএস ৮৩০০০০৯৯ নম্বর এর টাকা আমার বড় বোনকে সঙ্গে নিয়ে উত্তোলন করতে যাই। আমার বোনকে দেখে একজন কর্মকর্তা আমাকে পরে আসতে বলে। অনেকক্ষন পর আমার বোন জামাই এসে ওই কর্মকর্তাকে বললে তিনি বলেন, দরখাস্ত করতে হবে। জবাবে আমার বোন জামাই বলেন, দরখাস্ত দেন, সবতো আপনাদের কাছে। এরও কিছুক্ষন পর তিনি একটি কাগজ দিয়ে বলেন আমি পূরণ করতে পারবো না। পরে আমি অন্য একজনকে দিয়ে পূরণ করে তার কাছে জমা দিলে তিনি খুব ধীরলয়ে কাগজটি নাড়াচাড়া করতে থাকেন। বিভিন্ন কিছু গুছাতে থাকেন।
এরপর বলেন, কাকে দিয়ে ফিলাপ করিয়েছেন। আমি একজনের নাম বলি। ওই সময়ে আমার বোন জামাই বলে, কে ফিলাপ করলো এটা জানার কি খুব দরকার। সঠিক হয়েছে কি-না তা দেখেন।
এ নিয়ে আমার বোন জামাইয়ের সঙ্গে তার তর্ক হলে তিনি এক পর্যায়ে কাগজ নিয়ে ম্যানেজার সাহেবের রুমে ঢুকেন। তখন ম্যানেজার সাহেব আমাদের ডেকে নেন, ঘটনা শুনেন। পরে তিনি বলেন, আজ হিসেব করে আপনার সেভিংস একাউন্টে টাকা জমা হবে আপনারা চলে যান।
ম্যানেজার সাহেবের কাছে ওই কর্মকর্তার পরিচয় জানতে পারি, ওনার নাম আশরাফ উনি ওই ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার।
এখানে উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১০ জুলাই আমার বড় বোন পারভীন ডিপিএসের টাকা তুলতে গেলে ওই কর্মকর্তা আশরাফ সাহেব তার কাছে টাকা চান। বিষয়টি আমার বোন জামাই শুনতে পেয়ে তার কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি (আশরাফ সাহেব) তখন বলেন, টাকা চাই নাই পেয়ারা খেতে চেয়েছি। তখন তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওই ঘটনার কারনেই তিনি আমার বোনকে দেখে সেদিন আমাকে নূন্যতম সহযোগীতা না করে হয়রাণি করতে চেয়েছেন।