সংঘর্ষ ও খুনের পর মিরসরাই বিএনপির তিন কমিটির কার্যক্রম স্থগিত
Published: 30th, March 2025 GMT
সংঘর্ষ ও খুনের পর চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত তিনটি কমিটির কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি মিরসরাই উপজেলা, মিরসরাই পৌরসভা ও বারিয়ারহাট পৌরসভার তিনটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদিত বিএনপির কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিশেষ একটি পক্ষ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে এলাকায় জনগণকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ করে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। তাদের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে একজন নিরীহ মানুষ হত্যার শিকার হন এবং ১৫ জন গুরুতরভাবে জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সাম্প্রতিক উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মিরসরাইয়ের জনগণের পাশে থাকার লক্ষ্যে অনুমোদিত তিন কমিটির কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হলো।
কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, কমিটির বিষয়ে পরবর্তী করণীয় বসে ঠিক করা হবে। কমিটি গঠনের পর হত্যাসহ নানা নৈরাজ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৮ মার্চ মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৪ মার্চ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মিরসরাই উপজেলা, মিরসরাই পৌরসভা ও বারিয়ারহাট বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নতুন ঘোষিত বিএনপির উপজেলা আহ্বায়ক কমিটিতে আবদুল আওয়াল চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও আজিজুর রহমান চৌধুরীকে সদস্যসচিব মনোনীত করা হয়। ঘোষিত এই কমিটির বিরোধিতা করে ২৫ মার্চ দুপুরে মিরসরাই উপজেলা সদরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ করে ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের অনুসারীরা। সেই ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নতুন আহ্বায়ক কমিটিকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিএনপির দুই পক্ষের এমন উত্তেজনা শুরু হলে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে ফুল দিতে এলে দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতার শঙ্কায় ২৬ মার্চ সকালে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য মিরসরাই উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। সেদিন বেলা ১১টায় মিছিল গণজমায়েত করে প্রশাসনের দেওয়া ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে শহীদ মিনারে এসে ফুল দিয়ে যান মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের অনুসারীরা। এরপর উপজেলার বারিয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মইনুদ্দিন লিটনের বাড়ির সামনে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মোহাম্মদ জাবেদ নামের এক যুবক নিহত হন। সংঘর্ষের সেই ঘটনায় বিএনপির আরও অন্তত ১৩ নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম রসর ই উপজ ল স ঘর ষ ক কম ট প রসভ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’
জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, “আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না। মিডিয়াকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেখতে চাই না।”
তিনি বলেন, “২৪ পূর্ববতী কয়েকটি মিডিয়া অন্ধের মতো একটি দলের দালালি করেছে। তাদের সংবাদকর্মীরা যেসব মিডিয়ায় এখন কাজ করেন আজকে তারা সেটা বলতেও লজ্জা পান। আমরা চাই ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো মিডিয়ার এমন করুণ দশা না হোক।”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
বান্দরবান নিয়ে বক্তব্য: দুঃখ প্রকাশ করলেন সারজিস আলম
৭২-এর মুজিববাদী সংবিধান রেখে সংস্কার সম্ভব নয়: সারজিস
সারজিস আলম বলেন, “টাঙ্গাইলে মারুফ হত্যার আসামিদের ধরার তৎপরতা আমরা লক্ষ্য করিনি। এখনো টাঙ্গাইলের কিছু ব্যক্তি, কিছু দল ও কিছু গোষ্ঠী জুলাই-আগস্টে নিহতদের বিচারকে সামনের দিকে না নিয়ে বাধাগ্রস্ত করছে। তারা মামলা বাণিজ্য করছে। আমরা চিনে রাখছি কারা এই মামলা বাণিজ্য করছে।”
তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের সময় খুনি হাসিনা পালিয়ে গিয়েছিলেন। এ জন্য ওই সময় আমাদের কিছু সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে হয়েছিল। তবে এখন আমরা প্রত্যেকটা স্টেপ পর্যবেক্ষণ করছি। কোন মিডিয়া কার হয়ে কাজ করছে, কোন প্রশাসন জনগণের উদ্দেশ্য সার্ভ না করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য সার্ভ করছে, সেটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের কাছে চাঁদাবাজীর একটাই পরিচয়, সেটা হচ্ছে তারা চাঁদাবাজ। এই বাংলাদেশে আর কাউকে চাঁদাবাজী করতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি চাঁদাবাজকে প্রটেকশন দেওয়ার চেষ্টা করেন তাদের চাঁদাবাজির ভাগিদার হিসেবে বিবেচিত করা হবে।”
এনসিপির এই নেতা বলেন, “শুধু বাংলাদেশ নয়, দেশের বাইরেও টাঙ্গাইল ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পের জন্য পরিচিত। প্রয়োজনীয় পৃষ্টপোষকতার অভাবে এই তাঁত শিল্প ধীরে ধীরে ধ্বংস করা হয়েছে।”
সারজিস বলেন, “এই দেশে শুধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। অথচ মানুষ যাদের দেখে রাজনীতি শিখবে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মতো মানুষদেরকে এক কোণে রাখা হয়েছে। ভাসানীর মতো লোকদের ইতিহাস থেকে এক কোণে রাখা সম্ভব না।”
প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “২৪ পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বাংলাদেশের জন্য দেখতে চাই, দেশের মানুষের জন্য দেখতে চাই। আমরা প্রশাসনকে কোনো দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দালাল হিসেবে দেখতে চাই না। কোনো দল বা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য দেখতে চাই না।
সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ