ছোটবেলার ঈদ ঝামেলাবিহীন, সহজ-সরল ছিল: নুসরাত ফারিয়া
Published: 1st, April 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া অভিনীত ‘জ্বীন-৩’ সিনেমা ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে। ঈদ উৎসবে এটি আলাদাভাবে আনন্দ যোগ করবে। তা ছাড়া গত বছর অসুস্থ থাকায় ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেননি। সবকিছু মিলিয়েই নুসরাত ফারিয়ার এবারের ঈদটা একটু বিশেষ।
ঈদ উৎসবের সঙ্গে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। নুসরাত ফারিয়ারও ব্যতিক্রম নয়। ঈদে ঈদি দেওয়া-নেওয়ার বিষয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “এখন আর ছোটবেলার মতো ঈদি পাই না। বরং এখন অনেক বেশি লোকজনকে আমাকেই ঈদি দিতে হয়। তারপর আমার বড় যারা রয়েছেন, বন্ধু আছেন, পরিবারের লোকজন আছেন, তারা অবশ্য আমাকে এখনো ঈদি দিয়ে চলেছেন। এ বিষয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলেই মনে করি।”
ছোটবেলার ঈদ আর বড়বেলার ঈদে কতটা পার্থক্য? জবাবে নুসরাত ফারিয়া বলেন, “ছোটবেলার ঈদ অনেক ঝামেলাবিহীন, সহজ-সরল ছিল। এখন আর সেটা নেই। তবু ঈদ মানেই তো আনন্দ। এই আনন্দ কতটা তা হয়তো ঠিক ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। সারা মাস রোজা রাখার পর একটা দিন এভাবে সেলিব্রেট করার আনন্দই আলাদা। বাড়িতে সকলের সঙ্গে কাটানো, এটা আসলে একাত্মতার দিন, সকলে এক হয়ে যাওয়ার দিন। ছোটবেলার ঈদের থেকে বড়বেলার ঈদ অনেক বদলে গেছে, সেটা ঠিক। তবু এই উৎসব আমার কাছে আজও আগের মতোই স্পেশাল।”
আরো পড়ুন:
কত টাকা আয় করল সালমান-রাশমিকার সিনেমা?
বুলেট প্রুফ গ্লাসের ওপার থেকে দেখা দিলেন সালমান
কামরুজ্জামান রোমান পরিচালিত ‘জ্বীন-৩’ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন আব্দুন নূর সজল। তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন নুসরাত ফারিয়া। সিনেমাটির ‘কন্যা’ শিরোনামের গান শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে।
ঈদুল ফিতরের দিন বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহে ‘জ্বীন-৩’ মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্স ও লায়নে মুক্তি পায় এটি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া জানিয়েছে, খুব শিগগির সবগুলো মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পাবে ‘জ্বী-৩’।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব
পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে।
এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র্যান্ডেল।
এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব।
১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।
রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”
চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”
গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”
ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”
ঢাকা/তারিকুল/এস