লক্ষ্মীপুরে চোর সন্দেহ চররুহিতার ৯নং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের দপ্তর সম্পাদক রাজু হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত রাজু হোসেনের স্ত্রী জোসনা আক্তার বাদী হয়ে সোমবার (৩১ মার্চ) রাতে এ মামলা করেন।

মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ এবং ২৯ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা হচ্ছে, সদর উপজেলার শাকচর এলাকার কবির হোসেন, ইব্রাহিম খলিল, লিটন হোসেন ও রেখা বেগম। গ্রেপ্তারদের মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয় নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

আবদুল মোন্নাফ। তিনি বলেন, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলছে।

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে চাচার হাঁসুয়ার কোপে ভাতিজা নিহত

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে শ্রমিকদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৪

রাজু হোসেন চররুহিতার ৯নং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি রাজুর পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গ জড়িত। রাতের আধারে কবির হোসেন নামে এক ব্যক্তির অটোরিকশা চুরির অপবাদ দিয়ে তাকে পিঠিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহিৃত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান শ্রমিকদলের নেতাকর্মীরা।

মামলা সুত্রে জানা যায়, রোববার (৩০ মার্চ) রাতে সদর উপজেলার সবুজের গোঁজা এলাকায় প্রতিবেশী  কবির হোসেনের ঘরে মোবাইল চার্জ দিয়ে যায় রাজু  হোসেন। এ সময় রাজুকে চোর সন্দেহে আটক করে কবির হোসেন ও সহযোগীরা। এক পর্যায়ে অটোরিকশার চোর সন্দেহে কাজল কোম্পানীর ইটভাটার সামনের রাস্তায় গাছের সঙ্গে বেঁধে গণপিটুনি দেয়। পাশাপাশি রাতভর নির্যাতন চালানো হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সোমবার সকালে রাজুকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পর মারা যায়। এরপর পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত কবির হোসেনসহ চারজনকে আটক করে। পরে তাদের হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ঢাকা/লিটন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ