পৃথিবীর চারপাশে নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা
Published: 2nd, April 2025 GMT
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে পৃথিবীর চারপাশে ভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের সন্ধান করছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে লুকানো সেই বৈদ্যুতিক শক্তির খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার একদল বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নতুন ধরনের এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডল জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। শান্ত কিন্তু শক্তিশালী এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। পৃথিবীর বায়ু ও মহাকাশের সংযোগে প্রধান ভূমিকা পালনও করে থাকে এই শক্তি। নাসার এনডুরেন্স মিশনের মাধ্যমে এই ক্ষেত্রের খোঁজ মিলেছে।
পৃথিবীর অনেক ওপরে বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে পাতলা হতে শুরু করে, এর ফলে সেখানে পরমাণু চার্জযুক্ত কণা ভেঙে হালকা ইলেকট্রন ও ভারী আয়নে পরিণত হয়। সাধারণভাবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আয়নকে নিচে টেনে নিয়ে আসে আর ইলেকট্রন হালকা বলে ওপরে ভেসে থাকে। কিন্তু বৈদ্যুতিক চার্জ আলাদা থাকতে চায় না। ইলেকট্রন পালাতে শুরু করলে তার সঙ্গে আয়নকে একসঙ্গে ধরে রাখার জন্য একটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই ক্ষেত্র আয়নকে ওপরে ঠেলে দেয় আর ইলেকট্রনকে ধীর করে দেয়। এই ভারসাম্যকে বিজ্ঞানীরা অ্যাম্বিপোলার বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র বলেন। এটি একটি অদৃশ্য টানাটানির মতো কাজ করে। চার্জকে আলাদা হওয়া থেকে রক্ষা করে। পৃথিবী থেকে ২৫০ থেকে ৭৭০ কিলোমিটার ওপরে এই ক্ষেত্রের উপস্থিতি দেখা যায়। এর প্রভাব সূক্ষ্ম, কিন্তু বেশ শক্তিশালী।
নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের বিষয়ে নাসার বিজ্ঞানী গ্লিন কলিনসন বলেন, অ্যাম্বিপোলার ক্ষেত্র কণাকে উত্তপ্ত করার পরিবর্তে শান্তভাবে কণাকে ওপরে নিয়ে যায়, যেখানে অন্যান্য শক্তি সেগুলোকে আরও ওপরের মহাকাশে নিয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা দেখছেন, এই ক্ষেত্র হাইড্রোজেন আয়নকে সুপারসনিক গতিতে পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী। মাধ্যাকর্ষণের ঊর্ধ্বমুখী শক্তির চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী এই শক্তি।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবাহিত চার্জযুক্ত কণার তথ্য জানতে ২০২২ সালের ১১ মে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করেছিল নাসার এনডুরেন্স মিশন। রকেটটি পৃথিবীর ওপরে ৭৬৮ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছানোর আগে বায়ুমণ্ডলের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেসব তথ্য পর্যালোচনা করেই নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: আর্থ ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ধরন র ব দ য ত ক ক ষ ত র র এই ক ষ ত র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নের দাবি
শ্রমিক সমাজের মুক্তির জন্য ইসলামী শ্রমনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র্যালি, আলোচনা সভা ও সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল থেকে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
গাজীপুরে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ইসলামী শ্রমনীতি ছাড়া যে শ্রমিকের মুক্তি সম্ভব না, তা আজ প্রমাণিত। স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও বিদ্যমান শ্রম নীতিমালাই বাস্তবায়ন করা যায়নি। দেশের অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে, জিডিপির আকার বড় হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। টাকার অংকে শ্রমিকের বেতন বাড়লেও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকৃত মজুরি বরং আরো কমেছে। এই বাস্তবতায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামকে ভিত্তি বানাতে না পারলে শ্রমিকের ভাগ্য কোনোদিনই পরিবর্তন হবে না।
ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান নোয়াখালীর সেনবাগে তার নির্বাচনি এলাকায় শ্রমিক-জনতা সমাবেশে বলেছেন, ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নে সামগ্রিক আন্দোলন করা ছাড়া শ্রমিকের সামনে আর কোনো পথ নেই। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সে পথেই হাঁটবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কেবল একটি দিন নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও ন্যায্যতার প্রতীক। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই এ চেতনাকে ধারণ করে শ্রমজীবী জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এবারের দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী যে উদ্দীপনা ও অংশগ্রহণ আমরা দেখেছি, তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণাদায়ক।
মে দিবসে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, নড়াইল, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, মাগুরা, মেঘনাঘাটসহ সাংগঠনিক জেলাগুলো সভা-সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক