সিলেটে আওয়ামী লীগ–ছাত্রলীগ নেতাদের বাসায় হামলার ঘটনার জন্য মহানগর বিএনপির সভাপতি ও ছাত্রদল নেতা–কর্মীদের অভিযুক্ত করেছেন সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। লন্ডনে অবস্থানরত আনোয়ারুজ্জামানের এ–সংক্রান্ত একটি সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও আজ বৃহস্পতিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর বিকেলে অভিযোগটি ভিত্তিহীন দাবি করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।

এর আগে গতকাল বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেট নগরে আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের অন্তত চারজনের বাসায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ভাই লন্ডনপ্রবাসী সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম এবং ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা-ভাঙচুর হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র দাবি করেছে, বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসহযোগী সংগঠনের চারজন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান। ছাত্রলীগের মিছিলের ঘটনায় পরবর্তী সময়ে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসায় হামলার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টা পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি।’

আরও পড়ুনসিলেটের সাবেক মেয়রসহ আওয়ামী লীগ–ছাত্রলীগের তিন নেতার বাসায় হামলা, ভাঙচুর২১ ঘণ্টা আগে

হামলার ঘটনার পর করা সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, গত ৫ আগস্ট একটি দুর্বৃত্ত চক্র তাঁর বাসভবনে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। ৮ মাস পর বুধবার ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা প্রায় ২০০ মোটরসাইকেল নিয়ে এসে হামলা চালিয়েছে। এতে প্রকাশ্য মদদ দেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিএনপি কিংবা বিরোধীদলীয় কোনো নেতা-কর্মীর বাড়িতে কখনো হামলা-লুটপাট হয়নি উল্লেখ করে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, বিএনপি-ছাত্রদলের এমন হামলা-ভাঙচুর সিলেটের রাজনৈতিক সম্প্রীতিকে কলুষিত করেছে।

ভাঙচুর হওয়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসভবন। বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নগর ব এনপ ল র ঘটন ছ ত রদল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’

ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল