লাঙ্গলবন্দে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব শুরু
Published: 5th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাত ২টা থেকে শুরু হয়ে ৫ এপ্রিল রাত ১২টা ৫১ পর্যন্ত দুই দিনব্যাপী এই উৎসব চলবে। স্নানের লগ্ন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠেছে দেশ-বিদেশ থেকে আসা লাখো পুণ্যার্থী।
স্নানোৎসবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রশাসনসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও স্নানোৎসব এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরিতকি, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নিয়েছেন। লগ্ন শুরুর পরপরই পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। পাপমোচনের বাসনায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পুণ্যার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠেছে লাঙ্গলবন্দ।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, (মহাভারতের বর্ণনামতে) পরশুরাম মুনি পাপমুক্তির জন্য ব্রহ্মপুত্র নদে যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন, তা লাঙ্গলবন্দে অবস্থিত। সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ সময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের।
এদিকে স্নানোৎসব উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার।
লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস কর্মকার জানান, পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় দেড় হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ দেশ বিদেশের প্রায় ১০ লক্ষাধিক পুণ্যার্থী অংশ নেবেন। সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। স্নান এলাকায় ১৯টি স্নান ঘাটলায় কাপড় পাল্টানো, চিকিৎসা সেবায় ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্র, শৌচাগার, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও স্নান এলাকায় টহলে থাকবেন সেনাবাহিনী,র্যাব, নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ড।
স্নানোৎসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো.
ঢাকা/অনিক/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ঙ গলবন দ স ন ন ৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল মানেই তো উত্তেজনার চূড়ান্ত রূপ। আর মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাতালোনিয়ার মন্টজুইকে যা দেখা গেল— তা যেন শুধুই একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং ছয় গোলের অনির্দেশ্য গল্প। যেখানে বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে একসঙ্গে রচনা করল রোমাঞ্চ আর বীরত্বের এক অপূর্ব মহাকাব্য। দুইবার পিছিয়ে পড়েও অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে ৩-৩ গোলে সমতা টানল কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচ শুরুই হলো যেন বজ্রপাত দিয়ে। সময়ের কাঁটায় মিনিটও পেরোয়নি। এর মধ্যেই ইন্টারের মার্কুস তুরাম এক চতুর ব্যাকহিল ফিনিশে বল ঠেলে দেন জালে। সেই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো কাতালান রক্ষণভাগ। এরপর ২১ মিনিটে কর্নার থেকে ডেনজেল ডামফ্রিসের অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে যেন বার্সার হৃদয়েই ঘা লাগে, ইন্টারের লিড তখন ২-০ গোলে।
তবে ইতিহাস বলে— বার্সেলোনার যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখনই তারা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই ধারাতেই, ডানদিক থেকে দুরন্ত ছন্দে এগিয়ে এসে বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠালেন কিশোর বিস্ময় লামিনে ইয়ামাল। ইন্টারের দ্বিতীয় গোলের মাত্র তিন মিনিট পর আসে এই গোল, যা এই ম্যাচে বার্সার ফেরার না বলা প্রতিশ্রুতি হয়ে উঠেছিল।
সেই ইয়ামাল পরে আরও একবার প্রায় গোল করে ফেলছিলেন। কিন্তু ভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়। বল লাগে পোস্টে। তবে কাতালান আশা তখনও নষ্ট হয়নি। ৩৮ মিনিটে ফেরান তোরেস ডানদিক থেকে আসা পাসে ওয়ান-টাইম ফিনিশে বল জড়ান জালে, ফিরিয়ে আনেন সমতা। ম্যাচ তখন যেন টানটান থ্রিলারে রূপ নেয় এবং শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখলে ও খেলার ছন্দে এগিয়ে থাকলেও ৬৪ মিনিটে আবারও হোঁচট খায় বার্সা। কর্নার থেকে হেডে ডামফ্রিস করেন তার দ্বিতীয় গোল। ইন্টার আবারও এগিয়ে যায়। কিন্তু বার্সা মানেই তো ক্ষণিকের বিশ্রামে আবার অগ্নি হয়ে ওঠা। দ্রুতই আসে জবাব। রাফিনহার দূরপাল্লার গর্জে ওঠা শট প্রথমে লাগে পোস্টে, এরপর ফিরে এসে লেগে যায় গোলরক্ষক ইয়ান সমারের পিঠে, এরপর বল ঢুকে পড়ে জালে। ম্যাচ আবারও ৩-৩। যদিও এটি আত্মঘাতী গোল হিসেবে গণ্য হয়, কাতালানদের জন্য তা যেন নবজন্মের এক চুম্বন।
শেষ বাঁশি পর্যন্ত দুই দলই তীব্রভাবে চেষ্টা করেছে জয় ছিনিয়ে নিতে। কিন্তু ভাগ্য সেদিন ছিল ভারসাম্যপন্থী।
এখন সব অপেক্ষা দ্বিতীয় লেগের। আগামী ৬ মে মিলানের ঐতিহাসিক সান সিরো স্টেডিয়ামে লেখা হবে এই নাটকের অন্তিম অঙ্ক। এক ম্যাচ, এক ফলাফল, এক জয়ী— আর সেই জয়ীর জন্য অপেক্ষা করছে মিউনিখের আলো-আড়ম্বরের রাত। ইউরোপীয় ফুটবলের মঞ্চে চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন।
সান সিরোর আকাশে হয়তো আবার জ্বলে উঠবে এক নতুন রূপকথার তারা।
ঢাকা/আমিনুল