মহা অষ্টমীর স্নানে লাখো পুণ্যার্থীতে মুখর লাঙ্গলবন্দ
Published: 5th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মহা অষ্টমী পুণ্যস্নানে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে। দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ পুণ্যার্থীর পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো লাঙ্গলবন্দ এলাকা।
আদি ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে স্নানোৎসব শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টা ১১ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে যা শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টায় শেষ হবে।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল ও ভুটানসহ দেশ ও বিদেশ থেকে ব্যাপক পুণ্যার্থীরা এ স্নানোৎসবে অংশ নিয়েছেন। এদিকে লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পাদন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ।
এদিকে লাঙ্গলবন্দের স্নানে পুণ্যার্থীদের আসার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সকাল থেকে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মহা অষ্টমী স্নানোৎসবে অংশ নিতে লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকায় ঘাটগুলোতে পুণ্যার্থীরা ভিড় করেন। নারী-পুরুষ পুণ্যার্থীরা সড়ক পথ ও নৌপথে স্নানে অংশ নিতে আসেন। পুণ্যার্থীরা ললিত সাধুর ঘাট, অন্নপূর্ণা মন্দিরঘাট, নাসিম ওসমানঘাট, গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর মন্দির রাজঘাট, কালীগঞ্জ ঘাট, মাকরী সাধুর শান্তি আশ্রমঘাট, মহাত্মা গান্ধীর শশ্মানঘাট, ভদ্রেশ্বরী কালীমন্দির ঘাট, জয়কালী মন্দিরঘাট, রক্ষাকালী মন্দিরঘাট, পাষাণকালী মন্দিরঘাট, স্বামী দ্বিগিজয় ব্রহ্মচারীর আশ্রম, চর শ্রীরামপুর ব্রহ্মাঘাট, দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি ঘাট, মীরকুণ্ডি পরেশ সাধুঘাট, সাবদী রক্ষাকালী ঘাট, তাজপুর-জহরপুর মুনি ঋষিপাড়া ঘাট ও লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রমঘাটে স্নানে আসেন। ঘাটগুলোতে পুরোহিতের কাছে মন্ত্রপাঠ করে স্নানে নেমে পড়েন তাঁরা।
লাঙ্গলবন্দের মন্দিরগুলোতে চলছে পূজা-অর্চনা ও ভক্তিমূলক গান। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো থেকে পুণ্যার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে খিচুড়ি, দুধ, পানিসহ বিভিন্ন খাবার। অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে লাঙ্গলবন্দ এলাকাজুড়ে চলছে উৎসবমুখর পরিবেশ।
কুমিল্লা থেকে এসেছেন অর্পিতা আচার্য্য। তিনি বলেন, ছেলে ও ছেলের বউকে নিয়ে স্নান করতে এসেছি। পাপমোচনে ও আমরা সবাই যাতে ভালো থাকতে পারি, ব্রহ্মার কাছে সেই প্রার্থনা করেছি।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্লান উৎসবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এবার এক হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি, র্যাব, আনসার, বিজিবি সদস্যরাও নিয়োজিত থাকবে। বসানো হয়েছে সাতটি ওয়াচ টাওয়ার ও ৭০টির অধিক সিসি টিভি ক্যামেরা। উৎসবে সাতটি মেডিকেল ক্যাম্প ও ১০টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য।
এছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ সব জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান স্লান উৎসব চলাকালীন সময় প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী কর্মীও রয়েছেন। ২০টি ঘাটে পূণ্যার্থীরা স্লান করবেন।
এবার পর্যাপ্ত পরিমানে স্নান ঘাট পুণ্যার্থীদের জন্য সংস্কার, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের জন্য নলকূপ স্থাপন, বিপুলসংখ্যক কাপড় পরিবর্তন কক্ষ ও বিপুল পরিমানে অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া ব্রহ্মপূত্র নদের কচুরিপানা পরিস্কার করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নিরাপত্তায় এবার আমাদের সঙ্গে সেনাবাহিনী রয়েছে। পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে ম্যাপ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করি এবার স্নানোৎসব আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপন করতে পারবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ল ঙ গলবন দ স ন ন ৎসব মন দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
তেল চোর দেলোয়ারকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবেন : টিপু
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, আওয়ামীলীগের তৃণমূল থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত খুন, গুম ও নির্যাতন এটা ছিল ওই শেখ হাসিনার নিত্যদিনের খোরাক। বাংলাদেশের মানুষকে বন্দুকের নল দেখিয়ে একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছিল।
আয়না ঘর বানিয়ে মানুষকে গুম করে তার ক্ষমতার মাস্কটে টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। যেমনি ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল খুনি শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ মুজিবুর রহমান ৭৫ এর আগে গণতন্ত্রকে হত্যা করে চেয়েছিল একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সেদিন রুখে দিয়েছিল।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৪টায় কলাগাছিয়া ইউনিয়নের আলতাফ কমিউনিটি সেন্টারে ইউনিয়ন বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে সে সকল সম্পদ সকল টাকা-পয়সা ওই আওয়ামী লীগের সকল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাদের মন্ত্রী-এমপি তাদের নেতাকর্মীরাসহ তারা লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। এখন বিদেশে বসে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছে।
কিভাবে বাংলাদেশের মানুষকে অশান্তিতে রাখবে, কিভাবে বিএনপিকে ধ্বংস করা যায়। কিন্তু আমরা বিএনপি নেতা কর্মীরা বলে দিতে চাই ওই শেখ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাসহ যারা এই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে তাদেরকে কখনোই আর বাংলাদেশের মাটিতে জায়গা দেওয়া অবদান।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গডফাদার ছিল খুনি শেখ হাসিনা, তেমনি ভাবে আমাদের নারায়ণগঞ্জেও গডফাদার ছিল ওসমান পরিবার শামীম ওসমান সহ তাদের পুরো পরিবার, তেমনি ভাবে কলাগাছিয়াও কিন্তু একজন চোর ছিল। তার কি নাম ছিল তেল চোর দেলোয়ার। ওই কিন্তু একজন বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলন হত্যার মামলার আসামি।
ওকি এখনো এলাকায় আছে যদি থাকে তা হলে আপনারা ধরে ওকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে দিবেন। কোন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন হত্যা মামলার আসামি দোসরদের সহযোগী তারা। এই নারায়ণগঞ্জের মাটিতে যাতে চলাফেরা থাকতে না পারে সেজন্য আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব রুখে দিবেন।
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদুল্লাহ মুকুলের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড. জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক এড. সরকার হুমায়ূন কবির, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজী নুরউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হুমায়ূন কবির, বন্দর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মহি উদ্দিন শিশির, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি এড. মতিউর রহমান মতিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদ হোসেন।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেজ, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হুমায়ূন কবির, সহ- সভাপতি দিদার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সজিব খন্দকার, বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোহেল প্রধানসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।