‘ফিলিস্তিনের এই ধ্বংসাবশেষের দায় কি আমরা এড়াতে পারব?’
Published: 6th, April 2025 GMT
“আমি যখন এই পোস্ট লিখছি ততক্ষণে গাজার অস্তিত্ব কী মুছে গেছে? আমরা কি পারলাম না এই শহরটাকে, এই দেশটাকে বাঁচাতে? ফিলিস্তিনের এই ধ্বংসাবশেষের দায় কি আমরা কেউ এড়াতে পারব?”—
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে এভাবেই কথাগুলো ফেসবুকে লিখেছেন ঢাকাই সিনেমার নায়ক সিয়াম আহমেদ।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে গাজায় ফের ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। ওইদিন থেকে এখন পর্যন্ত দিনে গড়ে ১০০ শিশুকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী।
আল জাজিরা জানিয়েছে, গত ১২ ঘণ্টায় দখলদাররা খান ইউনিস এলাকা লক্ষ্য করে সবচেয়ে বেশি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সেখানে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছেন। ইসরায়েলি সেনারা খান ইউনিসের কয়েকটি আবাসিক ভবন ও অস্থায়ী তাবুতে হামলা চালিয়েছে। এতে অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন, সেখান থেকে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন। ধ্বংসস্তূপে মানুষ আটকে থাকায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
আরো পড়ুন:
বরবাদ নিয়ে স্রেফ ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল: ডিওপি শৈলেশ
পরীমণি কার সঙ্গে খাবে, শোবে, তা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার: তসলিমা নাসরিন
এমন পরিস্থিতিতে গাজাবাসীর জন্য হৃদয় কাঁদছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষদের। ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ রবিবার বিকালে নিজের ফ্রি প্যালেস্টাইন স্যুটের একটি ছবি প্রকাশ করে লেখেন, “ফিলিস্তিনের জন্য আমার মনের কান্না কখনো থামাতে পারিনি। যখন ‘জংলি’র গল্প লেখা হচ্ছিল তখনো পাখির জায়গায় আমি বারবার ফিলিস্তিনি শিশুদেরকেই কল্পনা করতাম। আমরা কি শিশুদের জন্য একটা সুন্দর পৃথিবী উপহার দিয়ে যেতে পারব না? যখন যুদ্ধবিরতি চলছিল তখনো আমি শান্তি পাচ্ছিলাম না। শুধু মনে হতো, এই বিরতি কতক্ষণের? কতক্ষণ এই মানুষগুলো বাঁচবে আসলে? এই যে ঈদের পরপরই তাদের ওপর নরক নেমে আসল, তার দায় কি এই পৃথিবী নেবে না?”
হতাশা প্রকাশ করে এই নায়ক লেখেন, “এই বিশ্ব লিডারস, ইসলামিক স্কলারস, নোবেল লরিয়েটস, সাধারণ মানুষ, আমরা কেউ কি এড়াতে পারব এর দায়? আল্লাহ, তুমি জান্নাতের দরজা খুলে দাও। এই পৃথিবী আর গাজাবাসীর জন্য নয়। আমরা পারিনি, আমরা পারলাম না।”
চিত্রনায়িকা তমা মির্জাও গাজায় ইসরায়েলি হামলার একটি ছবি প্রকাশ করে লেখেন, “এটা গোটা মুসলিম দেশের মুসলমানদের শাহাদতের চিত্র!” শোবিজের অনেক তারকা এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ইসর য় ল র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়: ডাকসু
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগের সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায় বলে দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
রবিবার (২ নভেম্বর) ডাকসুর ভিপি মো. আবু সাদিক, জিএস এসএম ফরহাদ ও এজিএস মুহা: মহিউদ্দিন খান স্বাক্ষরিত ‘রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কাৃরের বিরোধিতা এবং ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো অক্ষুণ্ন রাখার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ডাকসুর প্রতিবাদ' শীর্ষক এক প্রতিবাদলিপিতে এ কথা বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ২ কমিটি
ঢাবিতে সপ্তাহব্যাপী শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার এক সম্মিলিত বিপ্লব। কেবল সরকার পরিবর্তন নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, স্বাধীন ও শক্তিশালী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গঠন, প্রশাসনিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল এই বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোন প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে যা সরাসরি ছাত্র–জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহা-হিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়।
যে বৈষম্যমূলক চাকরি ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করেই জুলাই বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল সেই কাঠামো পরিবর্তনের বিরুদ্ধাচরণ করে বিএনপি নতুন প্রজন্মের ন্যায্য দাবি অস্বীকার করছে। পাশাপাশি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশনের বিরোধিতা, অনুচ্ছেদ–৭০ সংস্কারে আপত্তি, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান আলাদা দুজন ব্যক্তির মতো আধুনিক গণতান্ত্রিক প্রস্তাবে বিরোধিতা, আইন পেশায় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা, স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস গঠনে তাদের আপত্তি রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথে বড় বাঁধার সৃষ্টি করছে। এভাবে বিএনপি মূলত জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে অস্বীকার করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
প্রতিবাদলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সংস্কারগুলো ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থ নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং আধুনিক, গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তৈরির লক্ষ্যেই প্রস্তাবিত হয়েছে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ গঠনের নৈতিক দায়িত্ব ছাত্র ও সর্বস্তরের জনগণের। তাই সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণ থেকে নিতে হবে। আর গণভোটই জনগণের ম্যান্ডেট নিশ্চিতের উপযুক্ত মাধ্যম। গণভোটের মাধ্যমেই জনগণ ঠিক করবে দেশের স্বার্থে কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোকে তারা সমর্থন দিবে।
কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব যদি রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তবে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে জানিয়ে প্রতিবাদলিপিতে আরো বলা হয়, জুলাই বিপ্লব শুধু শাসক বা সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন নয় বরং জুলাই বিপ্লব হলো ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলোপ করে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী