মৌলভীবাজারে অতর্কিত ছুরিকাঘাতে আইনজীবী নিহত
Published: 7th, April 2025 GMT
মৌলভীবাজারে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সুজন মিয়া (৩২) নামের এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র চত্বরের উত্তর পাশের ফুটপাতে এ ঘটনা ঘটে।
সুজন মৌলভীবাজার শহরতলির পূর্ব হিলালপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং প্রায় সাত বছর ধরে জেলা জজ আদালতে আইন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে সুজন ঘটনাস্থলে একটি ফুচকার দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় কয়েকজন সুজনকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আহমেদ ফয়সল জামান বলেন, ‘তাঁকে (সুজন) আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তাঁর গলার দিকে স্ট্যাবের (ছুরিকাঘাত) দাগ ছিল। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।’
নিহত সুজনের বাবা জহিরুল ইসলাম আজ সোমবার জানান, কেন কে বা কারা তাঁকে হামলা চালিয়েছে, এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পাঁচ–ছয় মাস আগে সুজন মিয়ার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তবে বউকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরে তোলা হয়নি।
এদিকে ঘটনাস্থলের কিছু ভিডিও ফুটেজ পাওয়ার দাবি করেছেন মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি, কিছু ভিডিও ফুটেজ পেয়েছি। প্রত্যক্ষদর্শী যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছি। কেউই ওদের (হামলাকারীদের) চিনতে পারেননি। তবে সবাই বলছেন, তাদের বয়স অল্প। বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে আমরা তদন্তে অগ্রসর হচ্ছি। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।