বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌনকর্মের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দণ্ডনীয় হবেন—নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে যুক্ত করা এমন বিধানের বৈধতা নিয়ে রিট হয়েছে। এ–সংক্রান্ত বিধানটি সংবিধানের সঙ্গে কেন সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে রিটে।

‘এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশনের’ পক্ষে সংগঠনের সেক্রেটারি এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.

রাশিদুল হাসান আবেদনকারী হিসেবে রিটটি করেছেন। তাঁদের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান আজ সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালেদীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।

২০০৮ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনটি সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আইনে সংশোধনী আনা হয়। চলতি বছরের ২৫ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করা হয়।

অধ্যাদেশের ৫ ধারায় বলা হয়, ওই আইনের ধারা ৯ক এর পর নতুন ধারা ৯খ সন্নিবেশিত হবে। আর ৯খ ধারায় বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌনকর্ম করলে দণ্ডের বিষয়ে বলা আছে। এর ভাষ্য, যদি কোনো ব্যক্তি দৈহিক বলপ্রয়োগ ছাড়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১৬ বছরের বেশি বয়সের কোন নারীর সঙ্গে যৌনকর্ম করেন এবং যদি ওই ঘটনার সময় ওই ব্যক্তির সঙ্গে ওই নারীর আস্থাভাজন সম্পর্ক থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তি অনধিক সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।

২০২৫ সালের অধ্যাদেশের ৫ ধারার মাধ্যমে সন্নিবেশিত ৯খ ধারার বৈধতা নিয়ে মূলত রিটটি করা হয়েছে বলে জানান রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী ইশরাত হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক অপরাধ হিসেবে ৯খ ধারায় বলা হয়েছে, যা মূল আইনে ছিল না। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার পর, তা না রাখলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাত বছরের দণ্ড হবে বলা হয়েছে। শুধু ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি’ না রাখার কারণে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হলে তা ব্যক্তিস্বাধীনতা ও নারীর সম্মতির অধিকার লঙ্ঘন করে। প্রতিশ্রুতি না রাখার কারণে শুধু লিঙ্গের ভিত্তিতে একজনকে অপরাধী এবং অপরজনকে অপরাধী হিসেবে গণ্য না করার সুযোগ নেই। সংবিধান অনুসারে আইনের চোখে সবাই সমান। যখন ঘটনা ঘটছে, তখন তা অপরাধ নয়, পরবর্তী সময়ে প্রতিশ্রুতি না রাখলে তা অপরাধ হিসেবে দেখা হয়েছে বিধানটিতে। এমন অনুমান বা ধারণার ভিত্তিতে অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করা যায় না।

আরও পড়ুনধর্ষণ মামলার জট কমাতে ‘বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌনকর্ম’ আলাদা ধারা করা হয়েছে২৮ মার্চ ২০২৫

রিটের আবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশের ৫ ধারার মাধ্যমে সন্নিবেশিত ৯খ ধারা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে রিটে।

আরও পড়ুন‘বিয়ের প্রলোভনে যৌন সম্পর্ক’ কি শুধু পুরুষেরই অপরাধ২৩ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য নকর ম অপর ধ বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি মুলতবি

এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠার জন্য জারি করা অধ্যাদেশটির বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামের নতুন দুটি বিভাগ প্রতিষ্ঠায় গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জুয়েল আজাদ ১৭ মে রিটটি করেন। আজ রিটটি শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ৭৯ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী জুয়েল আজাদ শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী ও আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হলে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। আগামী সপ্তাহে রিটটি শুনানির জন্য আসবে।

‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ শিরোনামের ওই অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগ কর আইন প্রয়োগ ও কর আদায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। রাজস্ব সংগ্রহের মূল কাজ করবে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ।

আরও পড়ুনএনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ প্রতিষ্ঠার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিট১৭ মে ২০২৫

রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, সংবিধানের ২৬, ৩১ ও ২৯(১) অনুচ্ছেদের আলোকে ওই অধ্যাদেশটি কেন সাংঘর্ষিক এবং আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি সংস্কার বিষয়ে অংশীজনদের (দলগত) প্রস্তাব প্রকাশ করতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রুল বিচারাধীন অবস্থায় ওই অধ্যাদেশের কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে। আইনসচিব ও অর্থসচিবকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুরাইয়া মতিনের মৃত্যুতে ফতুল্লা প্রেসক্লাবের শোক
  • ‎আবু সাঈদ হত্যা: ৬ আগস্ট অভিযোগ গঠনের আদেশ 
  • আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ৬ আগস্ট
  • শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে শিক্ষার্থীদের আদালত চত্বরে অবস্থান, সড়ক অব
  • কিশোরগঞ্জে আইনজীবীর বাড়িতে ডাকাতি, ২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট
  • আবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন
  • দুদকের মামলায় রাজশাহীর সাবেক জেলা রেজিস্ট্রার কারাগারে
  • বরগুনায় বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন আদালতে নাকচ
  • লাল চাঁদ হত্যাকাণ্ড: তদন্তে বিচারিক কমিশন গঠন চেয়ে রিট কার্যতালিকা থেকে বাদ
  • এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি মুলতবি