লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় নুরুল আমিন নামের এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। একই সময়ে নিহত ব্যক্তির চার সন্তানকেও মারধর করা হয়। গতকাল সোমবার রাত ১১ টার দিকে উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের ভাইস চেয়ারম্যান সড়কের চৌধুরীর চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নুরুল আমিন তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে তোরাবগঞ্জ বাজারে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ মিছিল করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তাঁরা।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নুরুল আমিনের ছেলে মো.

মামুনের কাছে ১২৫ টাকা পাওনা রয়েছেন এক চা দোকানদার। গতকাল রাতে পাওনা টাকা নিয়ে ওই চা দোকানদারের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় মামুনের। একপর্যায়ে ওই চা দোকানদার আরও কয়েকজনকে নিয়ে মামুনের ওপর হামলা করেন। খবর পেয়ে নুরুল আমিন ও তাঁর ছেলে বজলুর রহমান, মো. ফিরোজ ও মেয়ে আছমা বেগম ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তাঁরা মামুনকে রক্ষার চেষ্টা করলে তাঁদেরও পিটুনি দেওয়া হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর শঙ্কাজনক অবস্থায় নুরুল আমিনকে সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নুরুল আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে পিটুনিতে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর বিষয়টি জানা গেছে। পিটুনির এক পর্যায়ে নুরুল আমিন একটি গর্তের মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মো. সেলিম নামের একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ওসি আরও বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবার আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত মামলা করেনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল আম ন

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত, থানায় অভিযোগ করায় নানাকে কুপিয়ে হত্যা

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় কয়েক বখাটের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন তার স্বজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর নানা আজগর আলীকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়ভাবে বখাটে হিসেবে পরিচিত আল-আমিন নামে এক যুবক ও তার সহযোগীরা। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আজগর আলী রায়দক্ষিণ গ্রামে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। অভিযুক্ত আল-আমিন একই গ্রামের মৃত কালু প্রামাণিকের ছেলে।

পুলিশ, নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, যে শিশুটিকে উত্ত্যক্ত করত বখাটেরা, তার মা পাঁচ বছর আগে মারা যান। মেয়েটি নানা আজগর আলীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ত। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে শিশুটিকে প্রায় উত্ত্যক্ত এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করত আল-আমিন। এ নিয়ে আজগর আলীসহ মেয়েটির স্বজন বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি। গত সোমবার মেয়েটির নানা আজগর আলী সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার অভিযোগটি তদন্ত করার পর তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।    

এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয় আল-আমিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আল-আমিন চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে সহযোগীদের নিয়ে আজগর আলীর চায়ের দোকানে যায়। তারা বৃদ্ধ আজগর আলীকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাটিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা চলে গেলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আজগর আলীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাতেই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আজগর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।

আজগর আলীর শ্যালক নজরুল ইসলাম জানান, মাদক সেবন, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত বখাটে আল-আমিন। 

সিংগাইর থানার ওসি তৌফিক আজম বলেন, নিহতের বড় ছেলে আইয়ুব খান বুধবার আল-আমিনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আল-আমিন ও তার সহযোগীরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ