‘শেখ হাসিনা তাদের রেখে পালিয়ে গেছে। এখন জয় বাংলা ব্রিগেড তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল ও সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে তুরিন আফরোজরা। হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে।’

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে আব্দুল জব্বার নামের এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় আজ রিমান্ড শুনানি হয়।

সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক সুমন মিয়া।

বেলা ১টার দিকে তুরিন আফরোজকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানিকালে তাকে এজলাসে তোলা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘তুরিন আফরোজ আলোচিত, বিতর্কিত মানুষ। ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে হাসিনার পক্ষে মিডিয়াতে তুমুল বক্তব্য দিতেন। হাসিনাকে সমর্থন করে বিরোধীদের আন্দোলন-সংগ্রামের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতেন। ফ্যাসিজম রক্ষা করতে সহযোগিতা করতেন। সুপ্রিম কোর্টে যেসব আইনজীবী একটি কলোনি তৈরিতে সহায়তা ও আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করত, তাদের এক জন তুরিন আফরোজ। তার এ ধরনের বক্তব্য রাখার এবং সহযোগিতার দুটি উদ্দেশ্য ছিল—এক.

হাসিনার আনুকূল্য লাভ করে বড় পদ পাওয়া। আরেকটি হলো—পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে মা-ভাইকে বঞ্চিত করে দখলে রাখা।’

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘প্রথমটা অর্জন করেছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তৈরি করা হয়েছিল। পুরস্কারস্বরূপ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান তুরিন আফরোজ। নিয়োগ পাওয়ার পর তারা আসামিদের বিরুদ্ধে বক্তব্য ও তাদের নিয়ে কটূক্তি করেন। পরে আবার আসামিদের পক্ষে গিয়ে বড় ধরনের আর্থিক সুবিধা নেওয়ারও অভিযোগ আছে। ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে প্রসিকিউটর পদ থেকে অব্যাহতি পান। ক্ষমতার অপব্যবহার করে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে মা-ভাইকে বঞ্চিত করে এককভাবে দখলে নেন।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বিতর্কিত ভূমিকা পালন করায় নীলফামারীর জলঢাকাতেও তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। মামলা হলেই কিন্তু সব আসামিকে ধরা হচ্ছে না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন জায়গায় মিছিল, মিটিং হয়েছে। হাসিনা তাদের ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে। তারা জয় বাংলা ব্রিগেড তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল ও সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে। যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে এবং দেশে যারা অবস্থান করছে, তারা এসব করছে। হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে। তুরিন আফরোজ এর সাথে সম্পৃক্ত। তাকে অবজারভেশনে রাখা হয়। বিভিন্ন সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাচেষ্টা মামলার সাথেও সম্পৃক্ত। তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করছি।’

তুরিন আফরোজের পক্ষে শুনানি করতে কয়েকজন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হন। তবে তুরিন আফরোজ জানান, তার আইনজীবী আছে। তখন বিচারক জানতে চান, কে আপনার আইনজীবী? তুরিন আফরোজ বলেন, ‘সাইফুল করিম।’ তবে তাকে খুঁজে পাননি তুরিন আফরোজ।

পরে আদালতে বক্তব্য রাখেন তুরিন আফরোজ। এরপর আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

ঢাকা/মামুন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র ন আফর জ আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র বাবুল কারাগারে

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আইয়ুব বাবুলকে (৫৯) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হলে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। পরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নুরুল ইসলাম জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

আইয়ুব বাবুল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের মহল্লা বাড়ির মৃত আমিনুর রহমানের ছেলে।

জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরে পটিয়া পৌরসদর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। 

এ ঘটনায় গত বছরের ১৯ আগস্ট দুপুরে পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়া জমিরিয়া কাসেমুল উলুমের (পটিয়া মাদরাসা) ছাত্র মো. নুরুল হাসান ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ২৫০-৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় আইয়ুব বাবুল এজাহারনামীয় আসামি। এছাড়াও বিএনপি অফিসে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট, বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টাসহ আরও তিনটি মামলার তিনি এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ সমকালকে বলেন, ‘পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আইয়ুব বাবুল হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। মঙ্গলবার নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আইয়ুব বাবুল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা একাধিক মামলার আসামি।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আইয়ুব বাবুল নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথম বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোট পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৮৩৬টি। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থী নুরুল ইসলাম সওদাগর পেয়েছিলেন ১ হাজার ৪৯৪ ভোট। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রম আদালতে ঝুলছে ২২ হাজার মামলা
  • মাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশ
  • চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, রোববার ফের শুনানি
  • চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন, শুনানি হতে পারে রোববার
  • আনিসুল-সালমান-মামুন রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আতিক
  • আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
  • কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ
  • মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানো যাবে না: হাইকোর্ট
  • পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র বাবুল কারাগারে