জিডি করতে তিন প্যাকেট সিগারেট নেওয়া সেই এএসআইকে বদলি
Published: 10th, April 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে তিন প্যাকেট বেনসন সিগারেটের দাম নেওয়ায় অভিযুক্ত সেই পুলিশ সদস্যকে টাঙ্গাইল জেলায় বদলি করা হয়েছে। তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত রোববার পাসপোর্ট হারানো বিষয়ে সালমান কবীর নামে এক ভুক্তভোগী সিরাজদীখান থানায় গেলে এএসআই মাহফুজুর রহমান তাঁর কাছ থেকে তিন প্যাকেট বেনসন সিগারেট বা এর সমমূল্য ১ হাজার ২০০ টাকা ঘুষ নেন। এ বিষয়ে পরদিন সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরই বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতে পারেন।
এ বিষয়ে সিরাজদীখান থানার ওসি শাহেদ আল মামুন জানান, অভিযুক্ত এএসআই মাহফুজুর রহমানকে টাঙ্গাইল জেলায় বদলি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, শুধু বদলি নয়, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সিরাজদীখান থানা সূত্রে জানা গেছে, এএসআই মাহফুজুর রহমানের বদলির আদেশ এক মাস আগেই হয়েছিল। কি কারণে তিনি কর্মস্থল ছেড়ে যাননি, সে বিষয় নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কম খরচে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল
দ্রুত সময়ের মধ্যে কম খরচে মামলা নিষ্পত্তি করে মানুষকে মামলার অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, তিনটি লক্ষ্য নিয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান আইনের সংশোধন করা হচ্ছে। আগামী মাস থেকে এ সংশোধনের কাজ শুরু হবে। আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। গরীব মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার (লিগ্যাল এইড ) কার্যালয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন (সংশোধন) অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ-২০২৫ নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পক্ষ থেকে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ এর খসড়া উপস্থাপন করা হয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশে প্রতি বছর ৫ লাখ মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে লিগ্যাল এইডে ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি হয়। আগামীতে এই হার ২ লাখে নিয়ে যাওয়ার আমাদের লক্ষ্য রয়েছে। এতে মামলার সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমবে। এজন্য আইন পরিবর্তন করতে হবে। ছোট ছোট যেমন আপোষযোগ্য পারিবারিক মামলা, চেক ডিজঅনারসহ অন্যান্য মামলা আপসে বাধ্যতামুলক করা হবে।
তিনি বলেন, আদালতে মামলার যে অস্বাভাবিক চাপ, তা শুধুমাত্র বিচারিক কাঠামোকে নয়, ন্যায় বিচারপ্রাপ্তির সম্ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। এ চাপ কমাতে হলে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি পদ্ধতি আরও গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন মামলার চাপ কমানো সময়ের দাবি। এ জন্য মামলার আগে আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামুলক করা গুরুত্বপুর্ণ।
দ্রুত সময়ে অল্প খরচে মামলার নিষ্পত্তি করতে সিভিল প্রসিডিউর কোড ইতিমধ্যে সংশোধন করা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি সংস্কারের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এ সময় লিগ্যাল এইডের মামলা নিষ্পত্তিতে একজন বিচারকের জায়গায় ৩ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।
মতবিনিময় সভায় অংশীজনদের মধ্যে বক্তব্যে দেন জাতীয় আইনগত প্রদান সংস্থার পরিচালক আজাদ সুবহানি, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সায়েম খান প্রমুখ। এছাড়া চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা জেলার আইনজীবী সমিতি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ইউএনডিপি প্রতিনিধি, জিআইজেড প্রতিনিধি, আইএলও, ব্রাক, ব্লাস্ট ও প্রশিকার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, লিগ্যাল এইডের প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি আছে। গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ গরীব ও অসহায় মানুষ জানে না সরকারের এমন একটি আইনিসহায়তা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রচারের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি বিভাগীয় শহরে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে বলে মত দেন তারা।