চাঁদপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় কৃষক নিহত, প্রতিবেশী গ্রেপ্তার
Published: 10th, April 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে সরকারি খালে মাছ ধরা ও খালপাড় দখল নিয়ে প্রতিপক্ষের মারধরে বশির প্রধানীয়া (৪০) নামের এক কৃষক নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মামলাটি করেন নিহত ব্যক্তির স্ত্রী।
নিহত বশির প্রধানীয়ার বাড়ি উপজেলার বহরী গ্রামে। গতকাল বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশে খালেরপাড়ে তিনি খুন হন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, আজ সকাল ১০টায় নিহত কৃষকের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে রমিজ উদ্দিন বয়াতীসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও চারজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন।
ওসি সালেহ আহাম্মদ জানান, প্রধান আসামি রমিজ উদ্দিন বয়াতীকে গতকাল দুপুরে উপজেলার বহরী এলাকা থেকে আটক করা হয়। আজ সকালে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পরিবার, পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্র জানায়, নিহত বশির এলাকায় কৃষিকাজ করতেন। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। অভিযুক্ত রমিজ উদ্দিন বয়াতীর বাড়িও বহরী গ্রামে। বশির ও রমিজ পরস্পরের প্রতিবেশী। দুজনের মধ্যে বাড়ির পাশে একটি সরকারি খালপাড়ের দখল ও খালের মাছ ধরা নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে এর আগে ওই দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার মারামারির ঘটনা ঘটে।
গতকাল দুপুর ১২টায় ওই সরকারি খালে মাছ ধরতে যান বশির প্রধানীয়া ও তাঁর দুই ছেলে। এতে বাধা দেন রমিজ উদ্দিন ও তাঁর লোকেরা। এ নিয়ে বশির ও রমিজ উদ্দিনের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে রমিজ উদ্দিন ও তাঁর লোকেরা বশির প্রধানীয়া ও তাঁর ছেলে বিল্লাল হোসেন ও মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘জামাই-শ্বশুরের’ দোকানে চা–পান করতে আসেন দূরের লোকজনও
কবির হোসেন (৩৬) ও তাঁর শ্বশুর সোলেমান মোল্লা (৫৫) মিলে বছর পাঁচেক আগে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দেন। জামাতা-শ্বশুরের যৌথ অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় চলছে চায়ের দোকানটি। দুজনে মিলে প্রতিদিন গড়ে বিক্রি করেন প্রায় ৩০০ কাপ দুধ-চা। প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার টাকার চা বিক্রি হয় দোকানটিতে।
নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিন এখানে ‘খাঁটি দুধের চা’ পান করতে আসেন। গাভীর দুধ দিয়ে জামাতা-শ্বশুরের হাতের পরম যত্নে বানানো সুস্বাদু ওই দুধ-চা স্থানীয় লোকজনের কাছে বেশ সমাদৃত। দূর থেকেও অনেকে আসেন চা–পান করতে। স্থানীয়ভাবে এটি ‘জামাই-শ্বশুরের’ চায়ের দোকান হিসেবে পরিচিত। দোকান থেকে উপার্জিত আয় দিয়েই চলছে তাঁদের সংসার।
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের কলেজগেট এলাকায় চায়ের ওই দোকানের অবস্থান। জামাতা কবির হোসেনের বাড়ি উপজেলার পৈলপাড়া গ্রামে। কবিরের শ্বশুর সোলেমান মোল্লার বাড়ি উপজেলার নবকলস গ্রামে।
সম্প্রতি এক সকালে ওই চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড়। ছোট্ট পরিসরে সাজানো টুল-টেবিলে বসে চা–পান করতে করতে আড্ডা দিচ্ছেন তাঁরা। রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তর্ক চলছে সেখানে। ক্রেতাদের চা পরিবেশনায় ব্যস্ত শ্বশুর-জামাতা।
কাজের ফাঁকে কথা হয় তাঁদের সঙ্গে। কবির হোসেন বলেন, তাঁর একমাত্র শ্যালক মানসিক প্রতিবন্ধী। তাঁর শ্বশুরের আর কোনো ছেলে না থাকায় তাঁকেই (কবির) ছেলে মনে করেন তিনি। তাঁর বাবা মারা গেছেন অনেক আগে। এ জন্য শ্বশুরকেই বাবার আসনে বসিয়েছেন। পাঁচ বছর আগে দুজনে মিলে ভাড়া করা এই চায়ের দোকানটি দিয়েছেন। নিজে সাতটি গাভী পালনপালন করেন। ওই গাভীর দুধ দিয়ে চা তৈরি করে বিক্রি করেন তাঁরা। তিনি ও তাঁর শ্বশুর পালা করে দোকানে বসেন এবং চা বিক্রি করেন। উপজেলা সদর ও আশপাশের এলাকা ছাড়াও চাঁদপুর জেলা শহর ও মতলব উত্তর উপজেলা থেকেও লোকজন এই দোকানে আসেন চা–পান করতে।
ক্রেতাদের হাতে দুধ-চা তুলে দিচ্ছেন কবির হোসেন।