ভুল টার্গেটে খুন হন আইনজীবী সুজন: পুলিশ
Published: 10th, April 2025 GMT
মৌলভীবাজারে ভাড়াটে খুনিরা এক নিরাপত্তারক্ষীকে খুন করতে গিয়ে ভুলে আইনজীবী সুজন মিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এ ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– মূল পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া ওরফে মুজিব (২৫), মো.
পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে পুলিশ সুপার জানান, মূল পরিকল্পনাকারী মুজিবের সঙ্গে তার পাশের বাড়ির একটি ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড মিসবাহর পূর্বশত্রুতা ছিল। তাকে ‘শিক্ষা’ দিতে ভাড়াটিয়া খুনি নিয়োগ করে মুজিব। এ জন্য পূর্বপরিচিত লক্ষ্মণের মাধ্যমে অপর খুনিদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় এবং মুজিব মোবাইল ফোনে টার্গেটের (মিসবাহ) ছবি পাঠায়।
গত ৬ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে মৌলভীবাজার পৌরসভা এলাকার ফুটপাতে চটপটির দোকানের পাশে বসে থাকা অবস্থায় আইনজীবী সুজন মিয়াকে মিসবাহ ভেবে তাঁকে ভিডিও কলে দেখিয়ে নিশ্চিত করে খুনিরা। এরপরই চেয়ারে বসা অবস্থায় সুজন মিয়ার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ১০ থেকে ১২ জন দুষ্কৃতকারী।
এসপি বলেন, এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত বুধবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের পরিচয় উদ্ঘাটন করা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, সদর মডেল থানার ওসি গাজী মো. মাহবুবুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি জাফর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।