আদালতপাড়ায় এক হয়ে যুবককে পেটালেন সাবেক দুই স্ত্রী
Published: 13th, April 2025 GMT
সাবেক দুই স্ত্রী এক হয়েছে জুতা দিয়ে পিটিয়েছেন নুর মোহাম্মদ নামে এক যুবককে। রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে পুরান ঢাকার নিম্ন আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শাহনাজ আক্তার নুর মোহাম্মদের প্রথম স্ত্রী, হ্যাপী দ্বিতীয়। এদিন একটি মামলার ধার্য তারিখ ছিল। তারা তিনজনই আদালতে হাজির হন। হাজিরা শেষে মারামারির ঘটনা ঘটে। শাহনাজ আক্তার ও হ্যাপী আক্তার পায়ের জুতা খুলে নুর মোহাম্মদকে পেটান। এ সময় নুর মোহাম্মদ সাহায্যের আকুতি জানান। উপস্থিত জনতা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। তবে তারা তা মানেননি। মাঝেমধ্যে নুর মোহাম্মদ সুযোগ খুঁজে দৌড়ে পালানোরও চেষ্টা করেন। তাতেও সফল হননি। তারা দৌড়ে গিয়ে তাকে ধরে আবার মেরেছেন। এতে কিছুটা আহত হন নুর মোহাম্মদ। তার পরনের শার্ট, গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলেন তারা। যেভাবে পেরেছেন কিল, ঘুষি, জুতাপেটা করেছেন সাবেক এই দুই স্ত্রী। কিছুটা সময় পরে তাদের আইনজীবী তাদের নিয়ে যান।
শাহনাজ আক্তার ও হ্যাপী আক্তারের আইনজীবী পাপিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘আজ একটা মামলার ধার্য তারিখ ছিল। আসামি নুর মোহাম্মদ আদালতে হাজির হন। তার সাবেক দুই স্ত্রীও আদালতে হাজির হন। শুনানি শেষে শাহনাজ আক্তার ও হ্যাপী আক্তার মিডিয়ার সাথে কথা বলছিলেন। তখন নুর মোহাম্মদ দুইজনকেই তলপেটে লাথি মারেন। এরপরের ঘটনা তো আপনারা দেখলেন।’’
হ্যাপী আক্তার বলেন, ‘‘বিয়ের কয়েক মাস পর সে আমাকে জোর করে তালাক দেওয়ায়। এরপর লুকিয়ে বেড়ায়। এরওর কাছে বলে বেড়ায় আমি খারাপ। আমি যদি এত খারাপ হয়, বিয়ের আগে দেখোস নাই? আমি বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। কোনো অন্যায় ছিল না আমার। ধুমধাম করে, ওর চাহিদা পূরণ করে বিয়ের ব্যবস্থা করেছে। ও একটা ফ্রট। ওর সুষ্ঠু বিচার চাই। ও যেন আর কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করতে না পারে।’’
শাহনাজ আক্তার বলেন, ‘‘২০১৫ সালে আমাদের বিয়ে হয়। ২০১৭ সালে আমার প্রথম বেবি (মেয়ে) হয়। ২০২২ সালে দ্বিতীয় মেয়ে হয়। মেয়ে হওয়ায় ও আমাকে ডিভোর্স দেয়। পরে জানতে পারি ও দ্বিতীয় বিয়ে করছে। আকুতি-মিনতি করে বলেছি, ছোট একটা বাসা নিয়ে মেয়েসহ আমাকে রাখ। আমাকে কোনোভাবে রাখে নাই। মেয়ে দুইটাকেও দেখতে দেয় না। আমাকে শেষ করে ফেলছে। ওর এ ধরনের ক্রাইমের সাথে ওর পরিবারও জড়িত। ওদের ফাঁসি চাই। ওরে আমি আমার জীবনের চেয়ে বেশি পছন্দ করছি। ওর ফাঁসি চাই।’’
নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘‘হ্যাপী আক্তার প্রতারণা করে আমাকে বিয়ে করছে। তাকে বলছি, আমার স্ত্রীকে ছাড়তে পারবো না। সে এত খারাপ মানুষ না। হুমকি দেয়, প্রথম স্ত্রীকে তালাক না দিলে থানায় নিয়ে যাব। বাধ্য করে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিই।’’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমার প্রথম স্ত্রীর পরিবার আর্থিকভাবে চাপ দেয়। এ নিয়ে তাদের সাথে মনোমালিন্য হয়। এ কারণে তাকে তালাক দিই। দ্বিতীয় ফ্রট এসে বলে বাচ্চার দায়িত্ব নেবে। প্রথম স্ত্রীর ভাই কয়েকদিন পর পর শুধু টাকা চায়। না দিলে বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ দেয়। মিথ্যা রটনা রটায়। হেয় প্রতিপন্ন করে। আমার মেয়ে বলে, আব্বু বিভিন্ন লোকজন বাসায় আসে, তারা থাকে। আমার মারধর করে অন্য রুমে রেখে দেয়। পরে তাকে তালাক দিই। হ্যাপী আমাকে প্রতারণা করে বিয়ে করে। সে আমার প্রথম স্ত্রীকেও মিসগাইড করছে। আজ কোর্টে আসছি। আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। আমার কী অবস্থা করছে দেখেন।’’
ঢাকা/মামুন/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ম হ ম মদ প রথম স ত র র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ৬ আগস্ট
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠন হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশ আগামী ৬ আগস্ট।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ আজ বুধবার এ তারিখ ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এই মামলায় ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ আসামি পলাতক।
আরও পড়ুনআবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন২৯ জুলাই ২০২৫আজ শুনানির সময় গ্রেপ্তার ছয়জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এর আগে এই মামলায় পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত চারজন আইনজীবী ও গ্রেপ্তার আসামিদের পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে দুই দিন শুনানি করেন। আর প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলায় অভিযোগ গঠনের আরজি জানান।
গত ৩০ জুন আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।