অসময়ে ব্রহ্মপুত্রে ভাঙন, ঝুঁকিতে বসতভিটা
Published: 15th, April 2025 GMT
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ১০ দিনে বিলীন হয়েছে সাতটি বসতভিটা, ১১০ বিঘা ফসলি জমিসহ গ্রামীণ সড়ক। এ ছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে রসুলপুর মারকাজ জামে মসজিদ, রসুলপুর আলহাজ রোস্তম আলী নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও রসুলপুর ঈদগাহ মাঠসহ বসতভিটা। এমন চিত্র কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের রসুলপুর এলাকার।
সরেজমিন দেখা গেছে, বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের রসুলপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ায় অসময়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। অনেকের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদে বিলীন হয়ে গেছে। এবারই প্রথম নয়, কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের শিকার হচ্ছেন ওই এলাকার মানুষ। বছরের পর বছর ভাঙনে বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেকে। এ ছাড়া আগে ভাঙন দেখা দিত বর্ষা মৌসুমে। এখন ভাঙছে শুষ্ক মৌসুমে। পানির স্রোত নেই। অথচ ভাঙছে নদের পার।
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের শিকার হয়েছেন বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের রসুলপুর এলাকার নুর আলম, আব্দুল বারেক, রায়হান, আব্দুর রশিদ, হেলাল উদ্দিন, রুহুল আমিন, নায়েব আলী ও সাহেব আলী। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন সময় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করা হয়। এ কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। অসময়ে দেখা দিয়েছে ভাঙনের তীব্রতা। এতে তাদের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে না পারলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন।
ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, গত ১০ দিনে ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হয়ে গেছে তাঁর বসতবাড়িসহ ৯ জনের সাতটি বসতবাড়ি ও প্রায় ১১০ বিঘা জমি। এখন শুকনো মৌসুম। এই সময়ে ভাঙন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে আরও ক্ষতি হবে। তাঁর দাবি, ৩০ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। কিন্তু এখানে মাত্র ৫০০ জিওব্যাগ দেওয়া হয়েছে।
কথা হয় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিষয়টি জেনেছেন তিনি। তাঁর কাছে অনেকে ভাঙন এলাকার ছবিও পাঠিয়েছেন। ভাঙন রোধে ৫০০ জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। পরে আরও ৫০০ জিওব্যাগ বরাদ্দ হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নদ ব ল ন হয় বসতভ ট এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে সীমান্ত এলাকা থেকে যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার
পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাড়ি থেকে রাজু ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলির কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সদর থানা-পুলিশ। নিহত রাজু ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ঝুলিপাড়া এলাকায়। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, রাজু গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলেন। এরপর তিনি কখন বাইরে গেছেন, স্বজনদের কেউ জানেন না। রাত তিনটার দিকে তাঁকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে আহত অবস্থায় তাঁকে দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দেবীগঞ্জ উপজেলার কাছাকাছি গেলে তিনি মারা যান। পরে লাশ বাড়িতে আনা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজু স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেছেন। পরে তিনি গিয়ে দেখেন, তাঁর দুটি পায়ের হাঁটু ও আশপাশে গুলির চিহ্ন। ভারত সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। কারণ, তাঁর পায়ে স্পষ্ট গুলির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি জানাজানির পর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে ওই এলাকায় বিজিবির দুটি টহল দল দায়িত্বরত ছিল। তখন সীমান্তে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফও গুলি করেনি বলে জানিয়েছে। এমনকি পরিবার থেকে প্রথম দিকে তাঁদের জানানো হয়, তিনি হৃদ্রোগে মারা গেছেন। তবে তিনি যে আহত হয়েছেন, সেটা সীমান্ত এলাকায় হয়েছেন নাকি বাংলাদেশের ভেতরে হয়েছেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন আছে, সেটি তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে গুলি কারা করেছে বা কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।