সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আহমেদ বিন আলী আল সাইগ প্রধান অতিথি হিসেবে জমজমাট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) আবুধাবির পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের সভাপতিত্বে স্থানীয় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশে প্রথমবার স্বাধীনতা দিবস উদযাপন হচ্ছে। যার কারণে সবার মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। ড.

মুহাম্মদ ইউনূস ও বাংলাদেশের জনগণকে আমিরাতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। 

এ ছাড়াও, আমিরাতে নিযুক্ত এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম ৩২টি দেশের রাষ্ট্রদূতরাও এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয় এবং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে।

এ সময় দুবাইতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেলসহ, বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাই কনসুলেটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার, বিমান, জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ, বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র স ব ধ নত অন ষ ঠ ন আম র ত

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক

রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।

গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ