প্রতিবন্ধী না হয়েও গোটা পরিবারের নামে নিয়মিত ভাতা তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের নারী সদস্য মাকসুদা বেগমের বিরুদ্ধে। এই জনপ্রতিনিধিসহ পরিবারের পাঁচ সদস্যের নামে নিয়মিত সমাজসেবা অফিস থেকে তিন মাস পরপর প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন করা হয়। 

এমন অভিযোগ পাওয়ার পরই উপজেলা সমাজসেবা অফিস তদন্ত শুরু করেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিবগঞ্জ উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য মাকসুদা বেগম। তিন সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রী মিলিয়ে মোট পাঁচ জনের নামে গত সাত বছর ধরে প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন করছেন। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেককে তিন মাস পরপর ২,৫৫০ টাকা করে দেওয়া হয়। এ খবর এলাকায় জানান পর নতুন করে আলোচনার জন্ম হয়েছে। 

রাইজিংবিডির হাতে আসা মাজসেবার প্রতিবন্ধী তালিকায় শ্যামপুর ইউনিয়নের নারী ইউপি সদস্য মাকসুদা বেগম, তার স্বামী আব্দুল করিম, দুই মেয়ে মাসুমা আক্তার, তাসলিমা আক্তার ও ছেলে মাসুম বিল্লাহের নাম রয়েছে। অথচ তাদের কেউ প্রতিবন্ধী নয়। কিন্তু গত সাত বছর ধরে প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন করে আসছেন মাকসুদা বেগম। 

অভিযোগের বিষয়ে জনপ্রতিনিধি মাকসুদা বেগম কোন মন্তব্য করেনি। তবে ওই পরিবারের প্রতিবন্ধীতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম। 

তিনি বলেন, “শুধু মাকসুদা বেগমের দুটি আঙ্গুল জোড়া লাগানো। তার পরিবারে কেউ সাদৃশ্যমান প্রতিবন্ধী নেই। তবে প্রতিবন্ধী তালিকায় তাদের পরিবারের পাঁচজনের নাম রয়েছে।”

শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, “প্রতিবন্ধী না হয়েও জনপ্রতিনিধি ও তার পরিবারের নামে ভাতা উত্তোলন করা হয়। এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই একজনকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রতিবন্ধী যাচাই-বাছাই কমিটির মাধ্যমে তালিতা প্রস্তুত করে আমাদের দেওয়া হয়। আমরা শুধু তাদের ভাতার টাকাগুলো দিয়ে থাকি। তারপরেও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। অভিযোগ সঠিক হয়ে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহার আলী এ অভিযোগের বিষয়ে অবগত। তিনিও অভিযোগটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

ঢাকা/শিয়াম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র র উপজ ল বগঞ জ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ