চার বছর আগে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের দক্ষিণ মুন্সিহাটি এলাকায় চকলেটের লোভ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের দায়ে মো. নাসির (২৫) নামের এক যুবককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মুন্সী মো.

মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। 

এদিন রায় ঘোষণার আগে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়। রায়ে আসামির স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে জরিমানার টাকা আদায় করে ভিকটিম বা তার পরিবারকে দেওয়ার জন্য আদেশ দেন আদালত।

মামলার সূত্রে জানা যায়, আসামি নাসির বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীকে আদর করতেন ও চকলেট বিস্কুট কিনে দিতেন। ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর দুপুর ২টার পর আসামি নাসির ভিকটিমকে চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে কামরাঙ্গীরচর থানাধীন দক্ষিণ মুন্সিহাটের নুরু বাবুর্চির বাড়ির পেছনে একটি কারখানার অফিস রুমের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় ভিকটিম চিৎকার করলে এক পর্যায়ে আসামি তাকে ছেড়ে দেয়। ভিকটিম কান্না করতে করতে বাসায় এসে তার মাকে ঘটনাটি জানায়। পরে ভিকটিমের মা ও তার স্বামী আসামিকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে গেলে সে পালিয়ে যান। 

এদিকে ভুক্তভোগী শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করেন। 

মামলার পর একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর মো. নাসিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর আসামি দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। মামলাটি তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. রিয়াদ উদ্দিন ২০২২ সালের ৩১ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আজ বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন আদালত।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বছর র চকল ট

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ