রাতের অন্ধকারে এক নারীর ওপর লাঠি-কিরিচ নিয়ে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। পাশে থাকা তিন বছরের শিশুসন্তানটি তখন আতঙ্কে ছুটতে থাকে। ভেসে আসছিল কান্নার আওয়াজ আর চিৎকার চেঁচামেচি। এমনই একটি ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভার সুলতানপুর গ্রামের কাজীপাড়ায়।

হামলার শিকার নারীর নাম তাহেরা আকতার। ফেসবুকে ভিডিওটি আপলোড করেন তাঁর কলেজপড়ুয়া মেয়ে সানজিদা সাথী। গতকাল শুক্রবার বেলা ২টা ৩৮ মিনিটের দিকে তিনি ভিডিওটি ফেসবুকে দেন। আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত দেড় লাখের বেশি মানুষ ভিডিওটি দেখেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে তাহেরা আকতারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আহত তাহেরা আকতার রাউজান পৌরসভার সুলতানপুর গ্রামের কাজীপাড়ার আবদুল হাকিমের স্ত্রী। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আপলোড করা ভিডিওটি দেখে বোঝা যায়, কাঁপা হাতে কেউ এটি ধারণ করেছেন। ভিডিওটিতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি ওই নারীর ওপর হামলা করছেন। চিৎকার শুনে কেউ একজন সেদিকে টর্চের আলো ফেলেন। সেই আলোতে কখনো হামলাকারী আবার কখনো ভুক্তভোগী নারীকে দেখা যাচ্ছিল।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় ৩ জনের নামোল্লেখ এবং ৭ থেকে ৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেছেন তাহেরার স্বামী আবদুল হাকিম। রাতেই ঘটনার মূল আসামি স্থানীয় দলিল লেখক গোলাম দস্তগীরকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জমি নিয়ে বিরোধের জেরেই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

তাহেরা আকতার আজ শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁকে একজন কিরিচ এবং বাকিরা লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে তাঁর মাথায় ১০টি সেলাই করতে হয়েছে।

রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক শ্রাবন্তী চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁর মাথার কিছু অংশ এতে কেটে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে মামলা হয়েছে। ঘটনার মূল আসামি গোলাম দস্তগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আকত র

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের

মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের  ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।  

এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। 

বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ