ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, পুতিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরেও রাশিয়ার হামলা অব্যাহত রয়েছে। 

রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানান, খ্রিস্টানদের ইস্টার উৎসব উপলক্ষ্যে তিনি ইউক্রেনে ৩০ ঘণ্টার জন্য সমস্ত সামরিক কার্যক্রম বন্ধ রাখতে তার বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভকে নির্দেশ দেন, এই সময়ের মধ্যে সব ধরনের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখতে, তবে যেকোনও উসকানি বা হামলার জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে।

অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, কিয়েভ এই অস্ত্রবিরতিতে সম্মান দেখাবে, তবে তিনি অভিযোগ করেন— রাশিয়া ইতোমধ্যেই এই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। যদি রাশিয়া সত্যিই নিঃশর্ত ও পূর্ণ বিরতিতে যেতে চায়, ইউক্রেনও সেই পথে হাঁটবে। আমাদের দিক থেকে পদক্ষেপ হবে সম্পূর্ণ (রাশিয়ার) সমানুপাতিক। ইউক্রেন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের পূর্ণ অস্ত্রবিরতির পক্ষে মত দিয়েছে।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই সিবিহা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, পুতিন এখন বলছেন ৩০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি, অথচ আমরা চেয়েছিলাম ৩০ দিনের। তার কথায় আর বিশ্বাস রাখা যায় না—আমরা কাজে বিশ্বাসী।

এদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, যদি পুতিন সত্যিই শান্তির ব্যাপারে আন্তরিক হন, তাহলে এখনই সময় পুরো আগ্রাসন বন্ধ করে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দেওয়ার—শুধু এক দিনের ইস্টার বিরতির নয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ