মৎস্য পণ্য রপ্তানিতে দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতা চাইলেন উপদেষ্টা ফরিদা
Published: 22nd, April 2025 GMT
বাংলাদেশের মৎস্যখাতে দক্ষিণ কোরিয়া কারিগরি সহায়তার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সামুদ্রিক মৎস্য এবং এ সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, মেরিকালচার ও গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মঙ্গলবার পোর্ট সিটি বুসানে কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের মৎস্য বিষয়ক ভাইস মিনিস্টার এবং জাতীয় মৎস্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট চোল ইয়ং সি এর সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা গভীর সমুদ্রে অবৈধ মাছ ধরার বিরুদ্ধে নজরদারি জোরদার, গভীর সমুদ্রে টুনা মাছ ধরায় সক্ষমতা অর্জন, সামুদ্রিক সম্পদের মজুদ নির্ণয়ে সহায়তা, সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণায় সক্ষমতা বৃদ্ধি, গবেষকদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় অধ্যয়নের সুযোগ প্রদান, মূল্য সংযোজন পণ্য উন্নয়ন এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট উন্নয়নের মাধ্যমে মৎস্য পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতা কামনা করেন।
দ্বি-পাক্ষিক আলোচনায় উপদেষ্টা কোরিয়ান মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলদেশ সরকার সাধারণ মানুষের আমিষ চাহিদা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি জানতে পেরেছেন যে, কোরিয়ান সরকার তার জনগণকে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে মাছের যোগান দেয়ার জন্য নানা পদক্ষেপে গ্রহণ করেছে। তবে, উভয় দেশেরই কমন ও বৈশ্বিক অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। যার মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রে দূষণ, আইইউই ফিসিং, অধিক মৎস্য আহরণ, অবৈধ ফিসিং গিয়ার ব্যবহার বিশেষভাবে উল্লেখ্য।
উপদেষ্টা এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ ও কোরিয়া প্রজাতন্ত্র একত্রে কাজ করতে পারে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ জন্য উভয় দেশের সরকার ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা যেতে পারে মর্মে উপদেষ্টা প্রস্তাব করেন।
কোরিয়ার ভাইস মিনিস্টার প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, মৎস্যখাতে বাংলাদেশের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। ভাইস মিনিস্টার আশ্বস্ত করেন, দক্ষিণ কোরিয়া সরকার মৎস্যখাতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপায় খুঁজে বের করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, আলোচনার ক্ষেত্রগুলোতে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং আরও সহযোগিতার বিকাশ উভয় পক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ভাইস মিনিস্টার আরও বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া ইতোমধ্যেই অবৈধ মাছ ধরার পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে টুনা মাছ ধরার ট্র্যাকিং-এর অত্যাধুনিক ব্যবস্থা উদ্ভাবন করেছে। নির্দিষ্ট প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই ক্ষেত্রগুলোতে বাংলাদেশকে কোরিয়া সহযোগিতা করতে পারে। তিনি প্রযুক্তিগত গবেষণা সহযোগিতার ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
উপদেষ্টা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সাক্ষাতের সময় কোরিয়া প্রজাতন্ত্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত তৌফিক ইসলাম শাতিল উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএফডিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) জনাব সুরাইয়া আখতার জাহান, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ৫ দিনের সরকারি সফরে দক্ষিণ কোরিয়াতে অবস্থান করছেন। সফরকালে তিনি ইতোমধ্যে কোরিয়া মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (কেএমআই)-এর সভাপতি, কোরিয়ান ফিশারিজ রিসোর্সেস এজেন্সি (এফআইআরএ) -এর সভাপতি, পুকিয়ং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, কোরিয়া ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ অন্যান্যদের সাথেও দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল বুসান ফিস প্রসেসিং এবং এক্সপোর্ট সেন্টার গংসু ফিস ভিলেজ পরিদর্শন ও প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তাদের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।