২০ বছরের বেশি সময় আগে এক তরুণী মাকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এটি ছিল চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ১৩তম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা।

টেক্সাসের অ্যাটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটন এক বিবৃতিতে বলেন, মোয়েসেস স্যান্ডোভাল মেনডোজা নামের এই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড হান্টসভিল শহরের কারাগারে কার্যকর করা হয়।

২০০৪ সালের মার্চে ২০ বছর বয়সী র‍্যাচেল ও’নিল টোলেসনকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন মেনডোজা।

আদালতের নথি অনুযায়ী, টোলেসনের ওপর যৌন নির্যাতন চালান মেনডোজা। পরে তাঁকে হত্যা করেন। এরপর তাঁর লাশ একটি পরিখায় নিয়ে আগুন দেন। ঘটনার কয়েক দিন পর টোলেসনের দেহাবশেষ উদ্‌ঘাটিত হয়।

টোলেসন পাঁচ মাস বয়সী এক সন্তানের মা ছিলেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, হাইস্কুলে পড়ার সময় থেকে তিনি মেনডোজাকে চিনতেন।

টোলেসনকে হত্যার দায় স্বীকার করেন মেনডোজা। তবে তিনি তাঁর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে আজীবন কারাদণ্ডের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু তা নামঞ্জুর হয়।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে শেষ বিবৃতিতে টোলেসনের প্রিয়জনদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মেনডোজা। টেক্সাসের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবৃতিটি প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে মেনডোজা বলেছেন, ‘এভেরি (টোলেসনের সন্তান),.

..আমি তোমার মাকে তোমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছি। এর জন্য আমি দুঃখিত। জানি, আমি যা-ই বলি না কেন, যা-ই করি না কেন, তা কোনো দিনই তোমার ক্ষতি পূরণ করতে পারবে না।’

এর আগে গতকালই যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে মেনডোজার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ঠেকাতে তাঁর করা আপিল খারিজ করে দেন।

চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে। দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে ফায়ারিং স্কোয়াডে। আর বাকি দুজনের মৃত্যুদণ্ড নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে কার্যকর করা হয়েছে। নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদ্ধতিকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক বলে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ ও বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ২৩টিতে মৃত্যুদণ্ড রহিত করা হয়েছে। তিনটি অঙ্গরাজ্য—ক্যালিফোর্নিয়া, ওরেগন ও পেনসিলভানিয়ায় মৃত্যুদণ্ডের ওপর স্থগিতাদেশ রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে। দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনই তিনি নিকৃষ্টতম অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের ব্যবহার বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।

মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।

ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।

তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।

এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ