জব্বারের বলী খেলায় এবারও চ্যাম্পিয়ন ‘বাঘা শরীফ’
Published: 25th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের জব্বারের বলী খেলার এবারের ১১৬তম আসরেও শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছেন কুমিল্লার তরুণ বলী ‘বাঘা শরীফ’। শ্বাসরুদ্ধকর পেশি শক্তির লড়াইয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো এবারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। গতবারের মতো এবারও তার কাছে পরাজিত হয়েছেন একই জেলার আরেক তরুণ বলী মো. রাশেদ।
প্রায় আধঘণ্টা ধরে তাদের দুজনের মধ্যে চলে শ্বাসরুদ্ধকর পেশি শক্তির লড়াই। গতবছরের জব্বারের বলী খেলায় প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন তরুণ বলী বাঘা শরীফ।
বলী খেলার শুরু থেকেই লালদীঘির মাঠের চারপাশ মানুষের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যেও আকর্ষণীয় বলী খেলা দেখা থেকে পিছপা হননি শিশু থেকে বয়স্ক কেউই। চারপাশের হাজারো দর্শকের মুহুর্মুহু করতালি, ঢোল ও বাশির শব্দের তালে তালে কিছুক্ষণ পর পর বলীরা উঠতে থাকেন মঞ্চে। এবারের জব্বারের বলী খেলায় অংশ নিয়েছেন ১২০ জন বলী। যাদের বেশিরভাগই তরুণ ও যুবক। বেশ কয়েকজন ছিলেন বয়স্কও। বিকেল চারটা থেকে শুরু হয় বিশেষ আকর্ষণের বলী খেলা। প্রথম রাউন্ডে ৮০ জন বলী অংশ নেন। পরে প্রথম রাউন্ডের চারজন ও আগের বছরের শীর্ষ চারজন নিয়ে হয় চ্যালেঞ্জ রাউন্ড।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে বেলুন উড়িয়ে ১১৬তম জব্বারের বলী খেলার উদ্বোধন করেন। এরপরই লালদীঘি মাঠে একের পর এক বলীর লড়াইয়ে শুরু হয় শক্তির মহারণ। পরে প্রধান অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা.
বলী খেলা উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার থেকে নগরের লালদিঘীপাড়ের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দোকানিরা বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে এসেছেন এই মেলায়। মেলায় মিঠাই, চুটকি, শুকনো মিষ্টি, মাটির তৈরি তৈজসপত্র, খেলনা, বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র, হাতপাখা, কুলো, গাছের চারা, মুড়ি মুড়কি, পাটি, দা-বটিসহ এমন কোনো পণ্য নেই যা নিয়ে আসেননি ব্যবসায়ীরা। তিনদিনের এই মেলা শেষ হবে আগামীকাল শনিবার।
ইতিহাসবিদদের মতে, ব্রিটিশ শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে স্থানীয় আব্দুল জব্বার সওদাগর লালদিঘী মাঠে কুস্তি প্রতিযোগিতা আয়োজন করেন। পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামবাসীসহ সারাদেশের মানুষের কাছে এটি আব্দুল জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিতি পায়। ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ছাড়াও বার্মার আরাকান অঞ্চল থেকেও নামি-দামি বলীরা এ খেলায় অংশ নিতেন। লালদিঘী ময়দানে প্রতিবছর ১২ বৈশাখ অনুষ্ঠিত হয় এই বলী খেলা। ঐতিহ্যবাহী এই খেলাকে ঘিরে খেলার আগের দিন ও পরের দিন পর্যন্ত চলে তিন দিনের বৈশাখী মেলা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বল খ ল
এছাড়াও পড়ুন:
লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল
১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।
১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।
১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।
মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।
বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।
আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।
কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।
ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি