রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টায় ঝটিকা মিছিল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপিসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.

জাফর আলম, তুরাগ থানা ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বাবু, বংশাল থানা ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ওয়ারেজ সিকদার, তুরাগ থানা যুবলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহেদ আলম, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য শহীদুল হক চৌধুরী রানা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও সম্প্রতি যাত্রাবাড়ী এলাকায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল সমন্বয়কারী জাহিদুল ইসলাম তুষার এবং তুরাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি মো. রেজাউল করিম।

আরো পড়ুন:

পুলিশ সপ্তাহ শুরু মঙ্গলবার, নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

মোবাইল গেমে আসক্ত এইচএসসি পরীক্ষার্থীর কাণ্ড

ডিবি জানায়, ২৭ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ৩টায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে মো. জাফর আলমকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-রমনা বিভাগের একটি টিম। অন্যদিকে ডিবি-মতিঝিল বিভাগের একটি আভিযানিক দল রাজধানীর বংশাল থানাধীন ইংলিশ রোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিকেল সোয়া ৩টায় মো. শাহেদ আলমকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া দুপুর পৌনে ২টায় ডিবি-লালবাগ বিভাগের একটি টিম রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে মো. ওয়ারেজ সিকদারকে গ্রেপ্তার করে।

ডিবি সূত্র জানায়, ডিবি-রমনা বিভাগের একটি টিম রাজধানীর গোপীবাগ এলাকা থেকে সকাল ৭টায় শহীদুল হক চৌধুরী রানাকে এবং ডিবি-উত্তরা বিভাগের একটি টিম সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কামারপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. সিরাজুল ইসলাম বাবুকে গ্রেপ্তার করে।

এছাড়া ডিবি সাইবার বিভাগের একটি টিম রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর শনির আখড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জাহিদুল ইসলাম তুষারকে গ্রেপ্তার করে।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ২৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টায় ডিবি সাইবার টিম কর্তৃক উত্তরা পূর্ব থানার ১৮ নম্বর সেক্টর থেকে মো. রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করে।

উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত।

ঢাকা/এমআর/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ব ভ গ র একট ল ইসল ম আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেল কক্ষে তল্লাশি, সমালোচনা 
  • সাবেক ওসি হাসান আল মামুন কারাগারে 
  • ভারতে কোনো বাংলাদেশি থাকলে উপযুক্ত চ্যানেলে পাঠাতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচনের জন‌্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • গাজীপুরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে মারধর, আটক ৪৩
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা