যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া তিনটি শিশুর মায়েদের দেশটি থেকে বিতাড়িত করার কারণে তাঁরা মানসিক আঘাতের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী। গতকাল সোমবার তিনি এ কথা জানান। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাঁদের নিজ দেশ হন্ডুরাসে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্য থেকে ওই মায়েদের বিতাড়িত করা হয়। এই নারীদের স্বামীরা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। অভিবাসন ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর নীতিমালা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটেছে।

আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) ও ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন প্রজেক্ট (এনআইপি) বলেছে, জেনি লোপেজ ভিয়েলা নামের এক নারীকে গত শুক্রবার তাঁর দুই বছর বয়সী কন্যাসহ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। আরেক নারীকে তাঁর চার ও সাত বছর বয়সী সন্তানসহ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তবে তাঁর নাম জানা যায়নি।

এসিএলইউ জানায়, চার বছর বয়সী শিশুটি ক্যানসারে আক্রান্ত। তাকে কোনো ওষুধ বা চিকিৎসা ছাড়াই দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এসিএলইউ জানায়, চার বছর বয়সী শিশুটি ক্যানসারে আক্রান্ত। তাকে কোনো ওষুধ বা চিকিৎসা ছাড়াই দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

জেনি লোপেজ অন্তঃসত্ত্বা। তাঁর ১১ বছর বয়সী আরেকটি মেয়ে আছে। তার জন্ম হন্ডুরাসে। যে উড়োজাহাজে লোপেজকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, সেটিতে ওই মেয়েটিও ছিল।

ওই তিন শিশুর মাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলেও তাদের বাবারা যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন।

লোপেজের আইনজীবী মিচ গঞ্জালেজ বলেন, ‘উভয় পরিবার অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে। এ পরিস্থিতি থেকে কীভাবে বের হবে ও করণীয় কী হবে, সেটিই ভাবছে পরিবারগুলো।’

এনআইপির অভিবাসনবিষয়ক অধিকারকর্মী মিশেল মেনডেজ এ পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত মর্মান্তিক’ বলে উল্লেখ করে বলেন, পরিবার দুটি ‘গভীর মানসিক আঘাতের’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

গতকাল হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসনবিষয়ক উপদেষ্টা টম হোম্যান জানান, শিশুগুলোকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করা হয়নি; বরং মায়েরা তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে বিতাড়ন থেকে আর সুরক্ষা পাবেন না আফগানিস্তান ও ক্যামেরুনের হাজার হাজার অভিবাসী১২ এপ্রিল ২০২৫

টম হোম্যান আরও বলেন, ‘আপনি যদি অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে মার্কিন নাগরিক সন্তান জন্ম দেন, তাহলে আপনি নিজেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেন। এটা একান্তই মা–বাবার সিদ্ধান্ত ছিল.

..মায়েরা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

হন্ডুরাসের ভাইস চ্যান্সেলর আন্তোনিও গার্সিয়া এএফপিকে জানান, সরকার বিষয়টি তদন্ত করছে। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট সিওমারা কাস্ত্রো এ বিচ্ছেদ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা চাই, এ ঘটনায় যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হোক।’

আরও পড়ুনঅভিবাসীদের নিবন্ধন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন আইনের প্রয়োগ করছে যুক্তরাষ্ট্র১৩ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর বয়স পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ

আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইন কেন্দ্রীয়ভাবে যাচাইয়ে যথাযথ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

‘বংশাল থেকে জনসন, সানসিল্কসহ দামি ব্র্যান্ডের নকল পণ্য জব্দ’ শিরোনামে ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘ঢাকার চারপাশে প্রকাশ্যেই বানানো হচ্ছে বিদেশি পণ্য’ শিরোনামে ২ এপ্রিল আরেকটি দৈনিকের অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এ দুটিসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়াসহ ১০ আইনজীবী ২০ এপ্রিল রিটটি করেন।

রিটে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারানো রোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ তৈরিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অন্যতম রিট আবেদনকারী আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, রাগীব কবির ও আরফান সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও শফিকুর রহমান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

রুলে গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন প্রতিবেদনের আলোকে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারোনো রোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারোনো প্রতিরোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ তৈরি করতে কমিটি গঠন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

বাণিজ্যসচিব, অর্থসচিব, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের প্রধান নিয়ন্ত্রক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, বিএসটিআই ও ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক—এই সাত বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্ট সাত বিবাদীকে ওই কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বাজারে প্রচুর অনুমোদিত ও নকল পণ্য বিক্রি হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি; বিশেষত শিশুস্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এতে করে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

রিট আবেদনকারী আরও বলেন, এসব কারণে কিউআর কোডসহ কেন্দ্রীয় অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা চালু এবং অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ডেটাবেজ তৈরির নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

রিট আবেদনকারী আইনজীবীরা হলেন—মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, মো. রোকনুজ্জামান, রাগিব কবির, আবু শাহেদ, রেহেমিন চৌধুরী, আরফান সুলতানা, মো. সাইফুল ইসলাম, হাসান ইসহাক ভূঁইয়া, মো. আরিফ চৌধুরী ও উম্মে আইমান জেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
  • শ্রম আদালতে ঝুলছে ২২ হাজার মামলা
  • মাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশ
  • চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, রোববার ফের শুনানি
  • চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন, শুনানি হতে পারে রোববার
  • আনিসুল-সালমান-মামুন রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আতিক
  • আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
  • কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ