গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের আগুনে তরুণীর মৃত্যু, দগ্ধ আরেক বোন হাসপাতালে
Published: 29th, April 2025 GMT
নীলফামারীতে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে আগুন লেগে এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। আজ দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এতে দগ্ধ হয়ে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ওই তরুণীর আরেক বোন।
এর আগে আজ মঙ্গলবার সকাল ছয়টার দিকে নীলফামারী সদরের উত্তরা ইপিজেড মোড়ের হাজিপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত তরুণীর নাম সুইটি আখতার (২২)। এ দুর্ঘটনায় তাঁর ছোট বোন তাজনিমা আখতার (২০) দগ্ধ হয়েছেন। তাঁরা নীলফামারীর ডোমার উপজেলার হরিণ চওড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী। তবে ইপিজেড এলাকায় একটি কারখানায় চাকরি করতেন তাঁরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ছয়টার দিকে রান্না করছিলেন সুইটি। এ সময় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। এতে দুই বোন দগ্ধ হন। স্থানীয় ব্যক্তিরা ঘরের দেয়াল ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করে নীলফামারী সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে থেকে তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক শাহীন শাহ বলেন, দুই বোনের শরীরের প্রায় ১০০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এর মধ্যে একজন আজ বেলা দেড়টার দিকে মারা যান। অন্যজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
আজ দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দগ্ধ দুই বোনের মা ফাতেমা বেগম হাউমাউ করে কাঁদছেন। সেখানেই কথা হয় দুই বোনের সহকর্মী সাজু শেখের সঙ্গে। সাজু প্রথম বলেন, সুইটি-তাজনিমারা তিন বোন ও এক ভাই। বড় ভাইয়ের মানসিক সমস্যা আছে। সুইটি চাকরি করে পড়ালেখার পাশাপাশি পরিবার চালাতেন। দুই মাস আগেই সেখানে কাজ করতে গিয়েছিলেন ছোট বোন তাজনিমা। একসঙ্গে পড়াশোনা করতেন দুইবোন। তাঁদের অনেক স্বপ্ন ছিল। আগুনে পুড়ে সব শেষ হয়ে গেল।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।