মঙ্গলবারও দর পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। বেশির ভাগ শেয়ারের দর কমে সূচক আগের দিনের চেয়ে কমেছে। তবে সূচকের চেয়ে বড় পতন হয়েছে লেনদেনে। গতকাল ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইর লেনদেন তিনশ কোটি টাকার নিচে নেমেছে।
গতকাল ডিএসইর লেনদেন নেমেছে ২৯১ কোটি টাকায়। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বরের পর প্রথম এ বাজারে তিনশ কোটি টাকার কম কেনাবেচা হয়েছে। আগের দিন ডিএসইতে লেনদেন ছিল ৪৫৪ কোটি টাকা। একদিনে লেনদেন কমেছে ১৬৩ কোটি টাকা।
এদিকে লাগাতার দর পতনের পরও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে রাজধানী মতিঝিলে ডিএসইর পুরাতন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কিছু বিনিয়োগকারী। তারা বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেন।
গতকালের লেনদেন শেষে দেখা গেছে, ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ১২৬টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৯৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টির দর। এছাড়া তালিকাভুক্ত ৩৭ মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৯টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ১১টির।
খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে– ব্যাংক, বীমা, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক এবং টেলিযোগাযোগ খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর কমেছে। অন্যান্য খাতে মিশ্র ধারা ছিল। তবে ব্যাংকের শেয়ারদরই সূচকে বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পতনের ধারায় দিনের লেনদেন শুরু হয় । প্রথম ১৫ মিনিটে ডিএসইএক্স সূচক ২১ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৯৩১ পয়েন্টে নামে। পরে সূচক পতন থামে। লেনদেনের প্রায় পুরোটা সময় উত্থান-পতনে কেটেছে। দিন শেষে ১৭ পয়েন্ট কমে ডিএসইএক্স দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৩৬ পয়েন্টে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র র ল নদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
২১ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে বিএসইসির আদেশ জারি
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ২১ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে আদেশ জারি করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৪ জন মামলার আসামি রয়েছেন।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ স্বাক্ষরিত এ আদেশ জারি করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার কমিশন সভায় বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।
যে কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে, তাদের বিষয়ে আলাদা অফিস আদেশ জারি করেছে বিএসইসি। এই তালিকায় ব্যক্তিগত কর্মকর্তা থেকে নির্বাহী পরিচালক রয়েছেন।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মচারী বিধিমালা, ২০২১ এবং সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিভিন্ন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে এ বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়।
গত ৫ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়ের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মামলার আসামি বরখাস্তকৃত ১৪ কর্মকর্তা হলেন- রেজাউল করিম, পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা, অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম, উপ-পরিচালক বনী ইয়ামিন, আল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক জনি হোসেন, রায়হান কবীর, সাজ্জাদ হোসেন ও আব্দুল বাতেন, লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ।
এছাড়া মামলাবিহীন বরখাস্তকৃত ৭ কর্মকর্তা হলেন পরিচালক আবুল হাসান, পরিচালক ফখরুল ইসলাম, উপপরিচালক নানু ভূইয়া, অতি: পরিচালক মিরাজুন সুন্নাহ, সহকারী পরিচালক তরিকুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক আমিনুল হক খান ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সমীর ঘোষ।
এর আগে গত ৪ মার্চ বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কমিশন। এতে বিএসইসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়। ওই ঘটনার জেরে ৫ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেন সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একপর্যায়ে তারা কমিশনের মূল ফটকে তালা দেন; সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট বন্ধ করে দেন এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। পরে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং অবরুদ্ধদের উদ্ধার করেন।
৬ মার্চ সেনা ও কোস্টগার্ড সদস্যদের নিরাপত্তায় মধ্যে দিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন। ওই দিন বিকেল ৫টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান (পুলিশ সদস্য) মো. আশিকুর রহমান।
মামলার আসামিরা হলেন বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম ও রেজাউল করিম, পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা, অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম, উপ-পরিচালক বনী ইয়ামিন, আল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক জনি হোসেন, রায়হান কবীর, সাজ্জাদ হোসেন ও আব্দুল বাতেন, লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ।
তবে এর মধ্যে সাইফুর রহমানকে আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আরেক নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম পদত্যাগ করেছেন। বাকি ১৪ জন কর্মকর্তা জামিন নিয়ে কাজে ফিরেছিলেন। গত ২১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় সেই মামলায় কর্মকর্তাদের জামিনও হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে ১৪ জনসহ আরো ৭ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করল রাশেদ মাকসুদের কমিশন।
ঢাকা/এনটি/