‘মুখে আল্লাহ বলো ভাই সকলে ওরে মুসলমান,

হিন্দু ভাইরা বলো সবাই কৃষ্ণ ভগবান।

ইমান আনো দেলে সবাই মিলে হিন্দু-মুসলমান,

মুসলমানে জপো সবাই নবীর পাক কোরআন।

পড়ো নামাজ রোজা পাইবা মজা পরকালে গিয়া,

মিছে মায়ায় ভবের মাঝে রইলা সব ভুলিয়া।'

এভাবে সহজ ভাষায় সাধারণ মানুষের জন্য ধর্ম, নীতিকথা আর নানা সুখ-দুঃখের বিষয় গ্রাম্য কবিতায় তুলে ধরেছেন মো.

আজগর আলী (৬৮)। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার লাউশন গ্রামে তাঁর বাস।

সম্প্রতি আজগর আলীর বাড়ির আঙিনায় বসে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, নব্বই দশকের আগের কথা। তখন প্রযুক্তির এতটা বিকাশ ঘটেনি। সে সময়ে গ্রামেগঞ্জে ঘুরে কিছু স্বভাবকবি দীর্ঘ কবিতা লিখতেন। সুরে সুরে এসব কবিতা পথচলতি মানুষকে ও হাটবাজারে আসা মানুষকে শোনাতেন। তাঁরা এসব কবিতায় আনন্দ খুঁজে পেতেন। প্রেম-বিরহের কাহিনি থেকে শুরু করে সমসাময়িক নানা ঘটনা এসব কবিতার বিষয়বস্তু হতো। এসব কবিতাকে কেউ বলতেন ‘হাটুরে কবিতা’, আবার কেউ বলতেন ‘পথকবিতা’। রচয়িতারা চারণকবি, পথকবি অথবা হাটুরে কবি হিসেবে পরিচিত হতেন।

প্রযুক্তির প্রসারে মানুষের জীবনে বিনোদনের নতুন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হয়। আবেদন কমতে থাকে গ্রামীণ কবিদের। এখন আর কেউ এসব শুনতে চান না। তাই ভাটা পড়ে তাঁর হাটুরে কবিতা লেখায়। গ্রামের মেঠো পথ, ছোট-বড় বিভিন্ন হাটবাজার আর নদীর ঘাট ঘুরে, সুরে সুরে গাওয়া পুঁথি ফেরি করা হয় না আর তাঁদের। তবে কালেভদ্রে তাঁর মতো কবির ডাক পড়ে।

এত দিন ধরে কবিতা লিখে মানুষকে আনন্দ দিলেন, কিন্তু নিজের মূল্যায়ন করতে পারলেন না; সেই আক্ষেপ আজগর আলীর। তিনি বলেন, গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করেন। এরপর নানা কারণে আর পড়ালেখা এগোয়নি তাঁর। তবে ছোটবেলা থেকেই মুখে মুখে ছন্দ দিয়ে কথা বলতে পারতেন তিনি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে তাঁর যশ বাড়তে থাকে। ১৮-২০ বছর বয়সে একদিন সাহস করে লিখে ফেলেন পুরো একটি হাটুরে কবিতা। গ্রামের দুই-একজন এটি দেখে পরামর্শ দিলেন, থানা সদরে গিয়ে প্রকাশ করতে। তাঁদের পরামর্শ মেনে প্রথম কবিতা ছাপিয়ে হাটে গিয়ে লোকজনকে শোনালেন। খুশি হয়ে অনেকে কিনে বাড়ি নিয়ে গেলেন।

আজগর আলী বাড়ি ফিরে কবিতা বিক্রির পয়সা গুণে অবাক হলেন। খরচের চেয়ে বেশি টাকা পেয়েছেন তিনি। সেই থেকে কবিতা লেখার কাজটি তাঁর নেশা হয়ে ওঠে। বাড়ি থেকে চলে যেতেন বিভিন্ন হাটবাজারে। ছন্দে ছন্দে সেই কবিতা শুনে লোকজন প্রশংসা করতে থাকেন তাঁর। এর মধ্যে বিয়ে করে ঘরসংসারে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন আজগর আলী। প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে তিন মেয়ে আর দুই ছেলে তাঁর। সব মিলিয়ে তাঁর ১১ জন নাতি-নাতনি।

একেক করে আজগর আলী ৪৫টি কবিতা লিখেছেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ জন্য গ্রহণ করেছেন নিবন্ধন নম্বর। এসব কবিতার মধ্যে বেশির ভাগই বিভিন্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া চমকপ্রদ ঘটনা, প্রেমকাহিনি ও চিত্তাকর্ষক বিষয় নিয়ে রচিত। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ঘটনা ও ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়েও কবিতা লিখেছেন তিনি।

অতীতের কথা স্মরণ করে আজগর আলী বলেন, এলাকার ও দেশ-বিদেশের আলোচিত ঘটনা নিয়ে লেখা গ্রাম্য কবিতার হাটবাজারে খুব কদর ছিল। ছন্দে ছন্দে এসব কবিতা পড়ে শোনালে অনেকেই খুশি হয়ে শুনতেন। এখন এসব কবিতার আর কদর নেই আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগে সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন। সেখানে ইচ্ছেমতো সবকিছু দেখা ও শোনা যায়।

ছেলেমেয়েরা একসময় গ্রাম্য কবিতা লেখার বিষয়ে উৎসাহ দিলেও এখন মানা করে দিয়েছে বলে জানান আজগর আলী। তবু জীবনে আর যে কয়েক দিন বাঁচবেন, তিনি এসব নিয়েই থাকতে চান।

পাশের বস্তুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহিনুর ইসলাম বলেন, গ্রামের একজন সাধারণ মানুষ হয়েও আজগর আলী অসাধারণ একজন কবি। গ্রাম্য কবিতা, যাকে হাটুরে কবিতা বলা হয়; তার জন্য পরিচিত তিনি। তাঁদের জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে তাঁর লেখা কবিতা শুনে ও পড়ে। এখন আর কেউ এসব কবিতা শুনতে চায় না। ফলে চলন নেই।

উপজেলার সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভিলেজ ভিশনের পরিচালক শরীফ খন্দকার বলেন, ‘আজগর আলীর কবিতা আমরা হাটবাজারে শুনতাম। জমানো পয়সা দিয়ে কিনে এনে আসর জমিয়ে নিজেরা পড়তাম অথবা শুনতাম। এখন আর সেদিন নেই। গ্রামের এসব লুকায়িত প্রতিভাধর মানুষকে সবার সামনে নিয়ে আসা দরকার।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গুম করা হতো তিনটি ধাপে 

শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে ভিন্নমত পোষণকারী ব্যক্তিদের কীভাবে গুম করা হতো, সেটি গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। কমিশন বলেছে, ‘তিন স্তরের পিরামিড’–এর মাধ্যমে গুমের বিষয়টি বাস্তবায়ন করা হতো।

এই পিরামিডের সর্বোচ্চ স্তরে ছিল ‘কৌশলগত নেতৃত্ব’। যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ছিলেন।

পিরামিডের দ্বিতীয় স্তরে ছিলেন বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। আর পিরামিডের তৃতীয় স্তরে থাকা বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার সদস্যরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতেন।

গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ৪ জুন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয় কমিশন। ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ: আ স্ট্রাকচারাল ডায়াগনসিস অব এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিশনের কাছে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ ৩৪৫ জন।

আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থায় গত সাড়ে ১৫ বছরে এমন একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, যেখানে গুমের ঘটনায় নীরব সম্মতি থাকার বিষয়টি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছিল বিষয়টি (গুমের মতো গুরুতর অপরাধেও নীরব থাকা)। গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি তখন অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হতো না।

■ গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কাছে ১,৮৫০ অভিযোগ এসেছে।  ■ যাচাই-বাছাই হয়েছে ১,৩৫০টি। ■ এখনো নিখোঁজ ৩৪৫ জন।

গুমের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার মধ্যে নীরবতা কেন ছিল, তা খুঁজেছে কমিশন। এর একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে তখন বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার ভেতরে বিষয়টি (গুম) অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতো না। বরং সেগুলোকে হয়তো একটি বৃহত্তর অভিযানের অংশ হিসেবে দেখা হয়েছে, যা বাহিনীর অভ্যন্তরে ‘জাতীয় নিরাপত্তা’ এবং ‘জনশৃঙ্খলা রক্ষার’ প্রয়োজনে স্বাভাবিক ও দায়িত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে এসব কাজকে বিচ্যুতি নয়, বরং প্রতিষ্ঠানের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়মিত দায়িত্ব হিসেবেই পালন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যায় জড়িত একজন কর্মকর্তার নথিতে তৎকালীন র‍্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের (পরে পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে অবসরে যান, এখন পলাতক) মূল্যায়ন ছিল, ওই কর্মকর্তা কর্মদক্ষতার দিক থেকে ‘খুবই সন্তোষজনক’ এবং তাঁর নেতৃত্বগুণ ‘উচ্চমানের’।

ওই কর্মকর্তা সম্পর্কে বেনজীর আরও লিখেছিলেন, তিনি ‘ভদ্র’, ‘সৎ স্বভাবের’ এবং ‘অত্যন্ত দক্ষ’। ওই কর্মকর্তা সম্পর্কে নথিতে কোনো নেতিবাচক তথ্য লেখা হয়নি। যদিও তিনি গুমের ঘটনায় জড়িত ছিলেন।

অবশ্য অন্য একজন কর্মকর্তার বিষয়ে নথিতে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অনেক অভিযোগ লেখা আছে। এমনকি সেখানে বিস্তারিতভাবে বলা আছে, ওই কর্মকর্তা নিয়মিতভাবে র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার তৎকালীন পরিচালক জিয়াউল আহসানের (পরে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার বা এনটিএমসির মহাপরিচালক হন, এখন কারাগারে) কাছে ‘ফিশ থেরাপি’ (মাছ উপহার) পাঠাতেন। তবে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে তাঁর জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো তথ্য নথিতে উল্লেখ নেই।

গণ–অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠন করে। এই কমিশনকে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ (সত্য উন্মোচন) শীর্ষক প্রথম অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেয় গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। সেখানে গত ১৫ বছরে সংঘটিত বিভিন্ন গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায় গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।

কমিশনের প্রতিবেদনে একটি বন্দিশালায় প্রহরীর দায়িত্ব পালন করা একজনের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। বন্দিশালায় প্রথম গিয়ে ওই প্রহরী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁকে বলা হয়েছিল, ‘বন্দীদের সাথে কখনো স্বাভাবিক আচরণ করা যাবে না, যেটা স্বাভাবিক মানুষের সাথে করা হয়। তাদের সবকিছু থেকে বঞ্চিত রাখতে হবে, সব অধিকার থেকে। যাতে সে কষ্ট অনুভব করতে পারে।’

ওই প্রহরী কমিশনকে বলেছেন, বন্দিশালার দায়িত্ব থেকে তিনি অব্যাহতি চেয়েছিলেন। তখন তাঁকে বলা হয়েছিল, দায়িত্ব পালন না করলে তাঁর প্রাণের ঝুঁকি আছে।

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে গুম

গত ৬ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গুমে জড়িত ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনই ডিজিএফআইয়ের (প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর) সাবেক মহাপরিচালক এবং একজন সাবেক পরিচালক। তাঁরা হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদীন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদ-উল-ইসলাম।

গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ছয় কর্মকর্তা যখন ডিজিএফআইয়ের উচ্চ পদে ছিলেন, তখন সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও হাসিনুর রহমান এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান গোপন বন্দিশালায় আটক ছিলেন।

মেজর জেনারেল পদমর্যাদার একজন সেনা কর্মকর্তা গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি যখন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (সিটিআইবি) পরিচালক ছিলেন, তখন আমান আযমীর গুমের বিষয়ে তিনি সাইফুল আলম ও আহমেদ তাবরেজ শামসকে জানিয়েছিলেন। এ ছাড়া ডিজিএফআইয়ের একজন কর্মকর্তা কমিশনকে বলেছেন, আমান আযমী ও মাইকেল চাকমাকে গোপন বন্দিশালায় আটকে রাখার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। 

কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠা ডিজিএফআইয়ের অন্তত তিনজন কর্মকর্তা গত নভেম্বর পর্যন্ত পিআরএলে (অবসরোত্তর ছুটি) ছিলেন। তাঁরা তখনো সেনা আইনের অধীন ছিলেন। বিশেষ করে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে তাঁদের সেনাবাহিনীর অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ত। এখন তাঁদের হদিস নেই।

গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সমন্বিতভাবে অন্যায় নির্দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত। কারণ, কর্মকর্তারা অন্যায় আদেশ মানতে বাধ্য নন। এই নীতির কথা সবাই জানতেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কর্তব্যে চরম অবহেলা ছিল। তাঁরা অধস্তনদের দিকনির্দেশনা বা মানসিক সহায়তার কোনো উদ্যোগ নেননি।

এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের ন্যায়সংগত আদেশ পালন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে কোনো অন্যায় আদেশ পালনে কেউ বাধ্য নন। গুম–খুনের আদেশ যাঁরা বাস্তবায়ন করেছেন, তাঁদের বিচক্ষণতার অভাব রয়েছে। এসব অন্যায় আদেশ বাস্তবায়ন করা তাঁদের দায়িত্ব নয়, সেটি তাঁরা অনুধাবন করতে পারেননি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বিচারহীনতার একটি সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খামেনিকে হত্যায় ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দেন ট্রাম্প
  • সাংবাদিক পরিচয়ে গেস্ট হাউসের কক্ষে কক্ষে তল্লাশি, দম্পতির কাছে বিয়ের প্রমাণ দাবি
  • ডেঙ্গু-করোনায় দুই মৃত্যু, আক্রান্ত ২৭৫ জন
  • চলতি মাসের ১৫ দিনে করোনায় ৪ জনের মৃত্যু
  • গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতার সুযোগে প্রপাগান্ডার সয়লাব
  • কারাগারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ১
  • রাতারাতি তারকা হলে দীর্ঘ সময় দর্শকের মনে থাকা কঠিন: রিচি
  • গুম করা হতো তিনটি ধাপে 
  • প্রফেসর সাহেব