ভিন্নমত দমনে চীনা শাসক গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছেন জ্যাক মা!
Published: 29th, April 2025 GMT
ভিন্নমত দমনে চীনের শাসক গোষ্ঠীকে সহায়তা করছেন আলিবাবার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ধনকুবের জ্যাক মা। তাঁর বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে চাপে ফেলার অভিযোগ-সংক্রান্ত কিছু নথি গার্ডিয়ানের হাতে এসেছে। এসব নথিতে দেখা গেছে, জ্যাক মা চীনের শাসক গোষ্ঠীর হয়ে কীভাবে ভিন্নমত দমনে সহায়তা করছেন।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে ওই ব্যবসায়ীকে ‘এইচ’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি চীন থেকে অনেক বছর ধরে বিতাড়িত। তাঁর পরিবারের সদস্যরা থাকেন চীনে। চীনা কর্তৃপক্ষ এইচের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রোড নোটিশ জারি করেছে। চীন সরকার তাঁকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে জ্যাক মার সহায়তা নেয়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জ্যাক মা ওই ব্যবসায়ীকে ফোন করেছিলেন।
চীন ইতোমধ্যে ব্যবসায়ী এইচ’কে ফিরিয়ে আনতে নানা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তাঁর বোনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে ওই ব্যবসায়ীর কাছে ফোন করেন জ্যাক মা। তিনি তাঁকে দেশে ফিরতে পরামর্শ দেন। তারা দু’জন বহু বছর ধরে একে অপরের পরিচিত। চীনা কর্মকর্তারাও নানাভাবে এইচকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছেন।
সম্প্রতি ফরাসি আদালতে অভিযোগটি উত্থাপিত হয়েছে। সেখানে জ্যাক মা’র ফোন কলের ট্রান্সক্রিপ্ট প্রমাণ হিসেবে তোলা হয়েছে। নথিতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে চীনা শাসক গোষ্ঠী দেশের বাইরেও ভিন্নমত দমনে তৎপর। তবে যুক্তরাজ্যের চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র চীনের আন্তর্জাতিকভাবে ভিন্নমত দমনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪৮ বছর বয়সী ব্যবসায়ী ‘এইচ’ সিঙ্গাপুরের চীনা বংশোদ্ভূত নাগরিক। তিনি যখন মার কাছ থেকে ফোন পান, তখন তিনি ফ্রান্সের বোর্দো বন্দর শহরে অবস্থান করছিলেন। এক বছর আগে চীনা পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছিল। তারপর ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছিল। ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে ওই ব্যবসায়ীর পাসপোর্ট জব্দ করে।
নথিতে পাওয়া গেছে, ফোন কলে জ্যাক মা ওই ব্যবসায়ীকে বলেছিলেন, চীন সরকার সানের বিচার করতে চায়। আপনাকে তারা কিছু বলবে না। জ্যাক মা পরামর্শ দেন, তিনি যদি চীনা রাজনীতিবিদ সান লিজুনের বিচারকাজে সহায়তা করেন, তাহলে তাঁর সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
সান ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) একজন সাবেক নেতা। ঘুষগ্রহণ ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির জন্য তাঁর বিচার হচ্ছে। সান চীনের সাবেক উপ-নিরাপত্তামন্ত্রী। হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হলে তাঁর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আসে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সানের মতো জ্যাক মাও শির শাসনের প্রতি আনুগত্য হারিয়ে ফেলে রোষানলে পড়েন ২০২০ সালে। তাঁকে একটি ঘটনায় ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার জরিমানাও করা হয়। জ্যাক মা ওই ব্যবসায়ীকে এও বলেছিলেন, তাঁর কথা শুনে দেশে ফিরে এলে তাঁর (এইচ) লাভ হবে। তা না হলে ফাঁসির দড়ি আরও শক্ত হবে। পরে জ্যাক মাকে চীনা সরকারের আনুগত্যে ফিরে আসতে দেখা যায়। তবে গার্ডিয়ানের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতিতে না জাড়ানোর কারণ জানালেন প্রীতি জিনতা
বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিনতা এখন অভিনয়ে অনিয়মিত। অভিনয়ে তাকে দেখা না গেলেও নিজের ক্রিকেট দলের হয়ে মাঠে তাকে প্রায়ই দেয়া যায়। মাঝে গুঞ্জন উঠেছিলে রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন তিন। অবশ্য এবিষয়ে টুঁশব্দও করেননি এই অভিনেত্রী।
এদিকে মাস তিনেক আগে কংগ্রেসের পক্ষ অভিযোগ তোলা হয়েছিল, প্রীতি জিনতার ১৮ কোটি টাকার ঋণ নাকি মকুফ করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। শুধু তাই নয়, প্রীতি নাকি তার সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বিজেপির হাতে সঁপে দিয়েছেন- এমন অভিযোগও ওঠে। এরপর বলিউড নায়িকার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা শুরু হয়।
সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে প্রীতি জিনতাকে একজন জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি ভবিষ্যতে বিজেপিতে যোগ দেবেন? আপনার গত কয়েক মাসের টুইট দেখে তো তেমনটাই মনে হচ্ছে। জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীদের এটাই একটা সমস্যা। সবাই এত বিচার করতে বসে যান সবকিছু নিয়ে। আমি যেমনটা আগে বলেছি, মন্দিরে, মহাকুম্ভে যাওয়া কিংবা নিজের পরিচয় নিয়ে আমি গর্বিত। তার মানে এই নয় যে এসমস্ত কারণে আমি বিজেপিতে যোগ দেব।’
প্রীতি বলেন, ‘ভারতের বাইরে থাকার ফলে আমি দেশের প্রকৃত মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেছি এবং আর পাঁচজন ভারতীয়র মতোই গর্ববোধ করি আমার দেশকে নিয়ে।’
রাজনীতিতে না আসার কারণ গত ফেব্রুয়ারি মাসেও জানিয়েছিলেন প্রীতি জিনতা। সেসময় তিনি বলেন, ‘রাজনীতি আমার দ্বারা হবে না। বিগত কয়েক বছরে একাধিক রাজনৈতিক দল আমাকে টিকিট দিতে চেয়েছে। এমনকি রাজ্যসভার আসনের প্রস্তাবও এসেছিল। তবে আমি বিনম্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ, আমার ইচ্ছে নেই। আর আমাকে ‘সৈনিক’ বললেও অতিরঞ্জিত হবে না। কারণ, আমি একজন আর্মি পরিবারের সন্তান। আমার বাবা সৈনিক এবং আমার দাদাও। আর্মি পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমাদের মানসিকতা খানিক আলাদা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেদের উত্তর ভারতীয়, দক্ষিণ ভারতীয় কিংবা হিমাচলী বা বাঙালি বলে ভাবি না, আমাদের পরিচয় শুধুমাত্র ভারতীয়। আর হ্যাঁ, দেশভক্তি আমাদের রক্তে।’ সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।