সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক
Published: 1st, May 2025 GMT
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত ভুল তথ্য ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ সময়ে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই ছিল রাজনৈতিক। গতকাল বুধবার তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত ভুল তথ্য ছিল ১ শতাংশ। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে তা বেড়ে ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সংখ্যার হিসাবে গত প্রান্তিকে এ ধরনের ভুল তথ্য ছিল মাত্র ১১টি। সেটি এ বছরের প্রথম তিন মাসে সাত গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭টিতে। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ-সংশ্লিষ্ট আটটি ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পেয়েছে ডিসমিসল্যাব।
সংস্থাটির গবেষণায় দেখা গেছে, জানুয়ারি-মার্চ সময়ে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠানগুলো ১ হাজার ২৩৬টি তথ্য যাচাইয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র ভুল তথ্য পাওয়া গেছে ৮৬৭টি, যা আগের প্রান্তিকে রেকর্ড করা ৮১৬টির তুলনায় কিছুটা বেশি। ভুল তথ্যের প্রায় অর্ধেকই (৪৫ শতাংশ) রাজনীতি সম্পর্কিত ছিল। এর পর ছিল ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য (১৩ শতাংশ), যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় সামান্য কম।
অপরাধ-সম্পর্কিত ভুল তথ্য বেড়েছে
বছরের প্রথম তিন মাসে প্রচারিত খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই ও ডাকাতি-সংক্রান্ত খবর ছিল ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ছিল ভারতের, যা বাংলাদেশের বলে ভুলভাবে প্রচার করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে একটি ইউটিউব চ্যানেলে হোটেল থেকে লাফিয়ে পড়া এক ভিডিও প্রচার করে বাংলাদেশের বলে দাবি করা হয়, কিন্তু সেটি ছিল মূলত ইন্দোনেশিয়ার।
রাজনৈতিক ভুল তথ্য
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই রাজনৈতিক। আগের বছরও রাজনীতি-সংক্রান্ত ভুল তথ্য প্রচারিত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ (৩৪.
ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য
ধর্ম-সম্পর্কিত ভুল তথ্যের সংখ্যা সর্বশেষ প্রান্তিকে কিছুটা কমেছে। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্যের পরিমাণ ছিল মোট যাচাইকৃত ভুল তথ্যের ১৮ শতাংশ, যা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ শতাংশে। তবে এর ধরন ছিল একই রকমের। যেমন, পুরোনো বা সম্পাদিত ছবি-ভিডিও সাম্প্রতিক বলে প্রচার করা।
বেড়েছে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্যের পরিমাণ বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল ২৭টি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন। সেখানে এ বছরের প্রথম তিন মাসে এই সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪টিতে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব ভুল তথ্যের ২৪ শতাংশ ছিল রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বছর র প রথম ত ন ম স র প রথম প র ন ত ক র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
জন্মহার বাড়াতে চীনের নতুন উদ্যোগ, শিশুদের জন্য মা-বাবা পাবেন ভাতা
তিন বছরের কম বয়সী প্রতিটি শিশুর জন্য মা-বাবাদের বছরে ৩ হাজার ৬০০ ইউয়ান (প্রায় ৫০০ ডলার) করে ভাতা দেবে চীন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৬১ হাজার টাকা। জন্মহার বাড়াতে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত ভাতা দেওয়া হবে।
দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এই ভর্তুকি প্রায় দুই কোটি পরিবারকে শিশু লালন-পালনের খরচ সামলাতে সহায়তা করবে।
প্রায় এক দশক আগে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি দেশটির বিতর্কিত এক সন্তান নীতি বাতিল করে। তবে এরপরও চীনের জন্মহার কমেই যাচ্ছে।
চীনের একাধিক প্রদেশ ইতিমধ্যেই জনগণকে আরও বেশি সন্তান নিতে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের অর্থ সহায়তার পাইলট প্রকল্প চালু করেছে। কারণ, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি এখন জনসংখ্যাগত দিক থেকে গুরুতর সংকটের মধ্যে আছে।
গত সোমবার চীন সরকার ঘোষিত নতুন কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি শিশুর জন্য অভিভাবকদের সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৮০০ ইউয়ান পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু লালন-পালনের ক্ষেত্রে চীন এখন বিশ্বের ব্যয়বহুল দেশগুলোর একটি। চীনে একটি শিশুকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত লালন–পালন করতে গড়ে ৭৫ হাজার ৭০০ ডলার খরচ হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৯৩ লাখ টাকা।চীনের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভির খবরে বলা হয়েছে, এই নতুন নীতিটি চলতি বছরের শুরু থেকে কার্যকর বলে ধরা হবে। এর মানে, ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে যেসব পরিবারে সন্তান জন্মেছে, তারাও আংশিক ভর্তুকির জন্য আবেদন করতে পারবে।
চীনে জন্মহার বাড়াতে এর আগে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল।
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় হোহহত শহরের কর্তৃপক্ষ গত মার্চে ঘোষণা দেয়, অন্তত তিনটি সন্তান থাকা দম্পতিরা প্রতি সন্তানের জন্য সর্বোচ্চ এক লাখ ইউয়ান পর্যন্ত অর্থসহায়তা পাবেন।
বেইজিংয়ের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত শেনইয়াং শহরের কর্তৃপক্ষ যেসব দম্পতির তিন বছরের কম বয়সী তৃতীয় সন্তান আছে, তাদের প্রতি মাসে ৫০০ ইউয়ান করে দিচ্ছে।
গত সপ্তাহে স্থানীয় প্রশাসনগুলোকে বিনা মূল্যে প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছে চীন সরকার।
চীনের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভির খবরে বলা হয়েছে, এই নতুন নীতিটি চলতি বছরের শুরু থেকে কার্যকর বলে ধরা হবে। এর মানে ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে যেসব পরিবারে সন্তান জন্মেছে, তারাও আংশিক ভর্তুকির জন্য আবেদন করতে পারবে।চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু লালন-পালনের ক্ষেত্রে চীন এখন বিশ্বের ব্যয়বহুল দেশগুলোর একটি। চীনে একটি শিশুকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত লালনপালন করতে গড়ে ৭৫ হাজার ৭০০ ডলার খরচ হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৯৩ লাখ টাকা।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে চীনের জনসংখ্যা টানা তৃতীয় বছরের মতো কমেছে।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশটিতে ৯৫ লাখ ৪০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি আগের বছরের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও মোট জনসংখ্যা কমতির দিকেই আছে।
বর্তমানে চীনের জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি। তবে এই বিশাল জনগোষ্ঠী দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছে, যা বেইজিংয়ের জন্য জনসংখ্যাগত উদ্বেগ তৈরি করছে।
আরও পড়ুনসন্তান লালন-পালনে অনীহা বাবাদের, ৬০ বছরে প্রথম কমল চীনে জনসংখ্যা১৭ জানুয়ারি ২০২৩আরও পড়ুনজনসংখ্যা কমে যাওয়া চীনের জন্য কতটা বিপদের২১ জানুয়ারি ২০২৩