দু’দিনের সফরে আজ ঢাকা আসছেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি। অবৈধ অভিবাসী ও নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে তিনি আলোচনা করবেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, অবৈধ অভিবাসন ও মানব পাচার প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা, পুলিশ ও বিজিবিকে প্রশিক্ষণ এবং দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক উন্নয়নমূলক বিষয় আলোচনায় আসতে পারে।

ঢাকা সফরে এসে প্রথম দিন আজ বিকেলে বাংলাদেশ ও ইতালির স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি। সন্ধ্যায় তাঁর সফর উপলক্ষে নৈশভোজের আয়োজন করেছে ঢাকায় ইতালি দূতাবাস।

আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে প্রবাসীকল্যাণ ভবনে উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। মাত্তেও পিয়ান্তেদোসির সৌজন্যে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তাতে যোগ দেবেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে ইতালিতে পাড়ি দিচ্ছেন অনেক বাংলাদেশি নাগরিক। ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে অনেক বাংলাদেশি মারাও যাচ্ছেন। সে কারণে বাংলাদেশ থেকে বৈধপথে ইতালি যাওয়ার জন্য দেশটির পক্ষ থেকে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে নিয়মিত ও বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে।

এ ছাড়া ইতালিতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের অনেক কর্মী ভিসা পেতে অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার পরও ভিসা পাচ্ছেন না। ইতালির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনেক বাংলাদেশি ইতালি যাওয়ার জন্য যে ভিসা আবেদন করেছেন, সেখানে তারা ভুয়া নথিপত্র জমা দিয়েছেন। সে কারণে অধিকতর যাচাই-বাছাই করার জন্য ভিসা দিতে দেরি হচ্ছে। তবে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে ভিসা ইস্যু নিয়ে আলোচনা উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত বছর ইতালির মন্ত্রিপরিষদের তৈরি করে ‘নিরাপদ দেশের’ তালিকা। সেখানে ১৭ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। ইতালির অভিবাসন আইন ২০০৮-এর ২৮ নম্বর ধারার ২৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এ-সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গেজেটে থাকা এসব ‘নিরাপদ দেশের’ নাগরিকদের মধ্যে যারা অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশ করবেন, তাদের থাকার অনুমতি না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র মন ত র উপদ ষ ট স জন য র জন য করব ন র সফর

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের উপস্থিতিতে অপহরণের অভিযোগ, দুইদিনেও উদ্ধার হয়নি পল্লী চিকিৎসক

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পল্লী চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

ভিডিওতে দেখা যায়, মাথায় হেলমেট এবং পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার সামনেই কয়েকজন ব্যক্তি তরিকুল ইসলামকে টেনে-হিঁচড়ে একটি অটোভ্যানে তুলছেন। এ সময় আশপাশের কয়েকজন তাকিয়ে দেখেন। তরিকুল তাদের সাহায্য চাইলেও সবাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তদের একজনকে বলতে শোনা যায়, 'এ এখানে প্রশাসনের লোক আছে।' 

অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। ভাতগ্রাম বাজারে পল্লি চিকিৎসক হিসেবে তার চেম্বার ও ওষুধের দোকান রয়েছে। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন।

এদিকে অপহরণের দুইদিন পার হলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে না পারায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বজনরা। তবে অপহরণকারীরা এ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ বার ফোন দিয়ে অপহৃত তরিকুলের ছোটভাই হিরুর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে পল্লী চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া সাদুল্লাপুর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তরিকুল ইসলামের ঔষধের দোকানে সুমন নামে এক ব্যক্তি ৬ মাস কাজ করেছেন। পরে তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হলে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি  টাকা দাবি করে আসছিলেন দোকান মালিক তরিকুলের কাছে। এ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে শালিসি বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার বিকেলে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ভাতগ্রাম বাজারে তার দোকানে যাচ্ছিলেন। পথে সুমনসহ স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক তাকে অটোরিকশা ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।

পল্লি চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া বলেন, অভিযোগ দেওয়ার দুইদিন হয়ে গেল, এখনো আমার ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ সেখানে সাদুল্লাপুর থানার একজন এএসআই উপস্থিত ছিলেন। অপহরণকারীরা সবার পরিচিত। দিনে দুপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কারণে ভাইকে নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি আমরা। তার দুই মেয়ে শুধু কাঁদছে। 

তিনি আরও বলেন, সবশেষ রোববার দুপুরে অপহৃত তরিকুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে দুর্বৃত্তরা ফোন করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন। প্রশাসনের কাছে তার বড়ভাইকে দ্রুত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। 

রোববার রাত ৯টায় সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার সমকালকে বলেন, ‘অপহরণের সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির উপস্থিতির কথা শুনেছি। কিন্তু স্পষ্ট নয়। অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলামান রয়েছে।’ 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ