পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী। স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় এই প্রেস ব্রিফিং। যেখানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ ও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব। তবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছেন তিনি। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেও কৌশলে দিয়েছেন উত্তর। বিবিসি সেসব বিষয়গুলোকে তুলে ধরেছে- 

এড়িয়ে যাওয়া বিষয়গুলো

সম্প্রতি পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছেন, পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণে ভারতের ৫০ জন সেনা নিহত হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের গুরুত্বপূর্ণ একজন মন্ত্রীর এমন দাবি সংবাদ সম্মেলনে খণ্ডন করেননি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। যদিও উপস্থিত সাংবাদিকরাও তাকে এ প্রসঙ্গে কোনো প্রশ্ন করেননি।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ভারতীয় পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে তারা। এ সম্পর্কে বিক্রম মিশ্রিকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি এই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকারি তথ্য সঠিক সময়ে জানানো হবে।

পররাষ্ট্র সচিবকে প্রশ্ন করা হয়- কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গতকাল পাকিস্তানে বিমান হামলায় ১০০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। এই বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব দেননি তিনি। বিক্রম মিশ্রী বলেন, বিমান হামলার পর মাত্র ৩৬ ঘণ্টা পেরিয়েছে। এ নিয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য গণমাধ্যমকে অপেক্ষা করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিক্রম মিশ্রিকে প্রশ্ন করা হয়- ভারত দাবি করেছে তারা পাকিস্তানের লাহোরে একটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। ভারতের লক্ষ্যবস্তুতে এমন আরও কিছু আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপারেশনাল বিষয়ে গভীরে যেতে চাই না। প্রসঙ্গত, লাহোরে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আঘাত হানার কথা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনার সামনে এনসিপি, আপ বাংলাদেশ, শিবির, জুলাই ঐক্য, ইনকিলাব মঞ্চ

আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার রাত দশটা থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রাত দেড়টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন। 

এতে জাতীয় নাগরিক পার্টি, জুলাই ঐক্য, শিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, কওমী মাদরাসার শিক্ষার্থী, ইনকিলাব মঞ্চ, ছাত্র পক্ষের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন উপস্থিত হচ্ছেন। ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে মিছিল। 

এ দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশ-র‍্যাব অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান করছেন। তারা নানা স্লোগান দিচ্ছেন। তারা 'ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামীলীগ নো মোর', খুনি লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে, ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা' ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

কর্মসূচিতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, আপ বাংলাদেশের আলী আহসান জুনায়েদ, রাফে সালমান রিফাত, মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ, শিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ ওসমান হাদিসহ কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। 

এ ছাড়া এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তাসনীম জারা, যুগ্ম আহবায়ক মনিরা শারমিন, নুসরাত তাবাসসুম, তাজনূভা জাবীন, সারোয়ার তুষার অংশ নিয়েছেন। 

ছাত্রসংগঠনের মধ্যে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, জুলাই ঐক্যের এবি জুবায়ের, মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ প্রমুখ উপস্থিত আছেন। 

শিক্ষার্থীদের অবস্থানকে কেন্দ্র করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ। এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

কর্মসূচিতে এনসিপির যুব উইংয়ের প্রধান তারিকুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় এখানে অপেক্ষা করবো। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আগে আমরা যমুনার সামনে থেকে যাচ্ছি না। 

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে ইন্টেরিমকে আর সময় দিতে রাজি নই, লাশ হয়ে ফিরবো না হয় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। 

কর্মসূচিতে এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, নয় মাস কেটে গেছে দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম নেই। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেখেছি- বিচার না করে ছয়শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাদের পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমরা দাবি জানিয়েছি, আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে। 

এ দিকে বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই প্রসেস করে সব ফরমালিটি শেষ করে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

এ দিকে নাহিদ ইসলাম ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন  যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নিষিদ্ধ করার প্রহসন মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আইসিটি আইনে দল হিসেবে বিচার করার বিধান যুক্ত করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ