কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ট্রাক থেকে ছিটকে পড়ে হেলপার নিহত
Published: 11th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ট্রাক থেকে ছিটকে পড়ে সৈকত (২৬) নামের এক যুবক নিজের ট্রাকে চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হয়েছেন। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ঢাকামুখী লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল আনসারি জানান, রাত ২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে একটি চলন্ত একটি কাভার্ডভ্যান আরেকটি চলন্ত ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এ সময় ট্রাকের হেলপার ট্রাক থেকে ছিটকে পড়ে নিজের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে সেখানে তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়। রোববার সকালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
তিনি আরো বলেন, ‘ছেলেটাকে বাঁচানোর জন্য আমি নিজেই এক ব্যাগ রক্ত দিয়েছি। কিন্তু গাড়ির চাকা তার কোমরের ওপর দিয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা যান। শত চেষ্টা করার পরেও ছেলেটিকে বাঁচাতে না পেরে খুব কষ্ট লাগছে’।
কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত
এছাড়াও পড়ুন:
‘দিলীপ সাহেব আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দের কারণ ছিলেন’
ভারতীয় সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা দিলীপ কুমার। ২০২১ সালের ৭ জুলাই মারা যান তিনি। সোমবার (৭ জুলাই) তার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। বিশেষ এই দিনে স্বামীকে নিয়ে আবেগঘন একটি পোস্ট দিয়েছেন স্ত্রী সায়রা বানু।
সায়রা বানু তার ইনস্টাগ্রামে দিলীপ কুমারে স্থিরচিত্র ও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। আর এতে নিজের অনুভূতির নানা ছায়া বর্ণনা করেছেন। সায়রা বানু বলেন, “দিলীপ সাহেবের অভাব কখনো পূরণ হবে না। আমি তার সঙ্গেই আছি; চিন্তায়, মনে, জীবনে, এক হয়ে। এই জীবনে, পরজন্মেও, আমার আত্মা তার অনুপস্থিতিতেও তার পাশে হাঁটতে শিখেছে।”
ভক্ত-অনুরাগীদের ভালোবাসা স্মরণ করে সায়রা বানু বলেন, “প্রতি বছর এই দিনে আমি তার স্মৃতিগুলো কোমল ফুলের মতো আলিঙ্গন করি। তার ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী, বন্ধুবান্ধব এবং পরিবার—তারা কখনো ভুলতে পারেন না। তাদের ভালোবাসা ভরা বার্তা, স্মৃতিচিহ্ন প্রার্থনার মতো আসে। আর আমি কৃতজ্ঞতাচিত্তে পাঠ করি।”
আরো পড়ুন:
এয়ারপোর্টে কেন কাঁদছেন নোরা ফাতেহি?
কত কোটি টাকার মালিক রণবীর কাপুর?
দিলীপ কুমারের কর্মের প্রভাব ব্যাখ্যা করে সায়রা বানু বলেন, “দিলীপ সাহেব আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দের কারণ ছিলেন না। তিনি সম্পূর্ণ একটি যুগ ছিলেন। ছয় প্রজন্মের অভিনেতাদের জন্য এক অনুপ্রেরণা এবং আগামী প্রজন্মের দিশারী।”
ভালোবেসে সায়রা বানুর সঙ্গে ঘর বাঁধেন দিলীপ কুমার। তবে এ জুটির ভালোবাসার শুরুটা বলিউড সিনেমার গল্পের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তারা যখন প্রথম প্রেমে পড়েন তখন দিলীপ কুমারের বয়স ৪৪ বছর এবং সায়রা বানুর ছিল ২২ বছর। কিন্তু বয়স তাদের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
দিলীপ-সায়রা বানুর বিয়ের বিষয়ে সায়রা বানুর মা নাসিম বানু বিশেষ অবদান রেখেছিলেন। মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাংলোতে বিয়ে হয়েছিল তাদের। বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব। ১৯৬৬ সালে দিলীপ কুমারকে বিয়ে করেছিলেন সায়রা বানু। বিয়ের চার বছর পর অর্থাৎ ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গোপী’ সিনেমায় প্রথম রিল লাইফে তাদের রোমান্স করতে দেখা যায়। এ জুটি ‘ছোটি বহু’ (১৯৭১), ‘সাগিনা’ (১৯৭৪), ‘বৈরাগ’ (১৯৭৬), ‘দুনিয়া’ (১৯৮৪)-এর মতো সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছেন।
দিলীপ কুমারের আসল নাম ইউসুফ খান। তার বাবার নাম ছিল মোহাম্মদ সারোয়ার খান। তিনি পেশায় ফল ব্যবসায়ী ছিলেন। কৈশোরে মুম্বাই থেকে পুনে গিয়ে ব্রিটিশ সৈন্যদের জন্য পরিচালিত একটি ক্যান্টিনে কাজ নেন ইউসুফ খান। কিছুদিন পর আবারো মুম্বাইয়ে (তৎকালীন বোম্বে) ফিরে বাবার সঙ্গে ব্যবসায় যোগ দেন তিনি। সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় সেই সময়ের প্রখ্যাত সাইকোলজিস্ট ডা. মাসানির। মূলত, তিনি তাকে ‘বোম্বে টকিজ’ এর মালিকের সঙ্গে ইউসুফ খানের পরিচয় করিয়ে দেন।
১৯৪৩ সালে ‘বোম্বে টকিজ’-এ চাকরির জন্য যান ইউসুফ খান। কিন্তু সেখানকার স্বত্বাধিকারী দেবিকা রানী তাকে অভিনেতা হওয়ার প্রস্তাব দেন। নাম বদলে দিলীপ কুমার রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৯৪৪ সালে মুক্তি পায় দিলীপ কুমারের প্রথম সিনেমা ‘জোয়ার ভাটা’। প্রথম দিকে দিলীপ কুমারের কয়েকটি সিনেমা বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়। ১৯৬০ সালে ভারতের ইতিহাসের অন্যতম ব্যবসাসফল সিনেমা ‘মুঘল এ আজম’ দিলীপ কুমারের ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
দীর্ঘ ছয় দশকের বলিউড জীবনে ৬৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন দিলীপ কুমার। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো— ‘নয়া দৌড়’, ‘মধুমতি’, ‘গঙ্গা যমুনা’, ‘রাম আউর শ্যাম’, ‘দাগ’, ‘আজাদ’, ‘দেবদাস’, ‘মুঘল-ই-আজম’, ‘কোহিনূর’, ‘পয়গাম’, ‘আদমি’, ‘শক্তি’, ‘লিডার’ প্রভৃতি। ১৯৯৮ সালে ‘কিলা’ সিনেমায় তাকে শেষবার রুপালি পর্দায় দেখা গেছে।
ঢাকা/শান্ত