ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে হত্যা এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টাকে (মাহফুজ আলম) পানির বোতল ছুঁড়ে মারা চক্রান্তের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। তিনি বলেন, ‘‘সাম্যের হত্যাকাণ্ড বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। কেউ কেউ এখন পরিবেশ ঘোলাটে করতে চায়।’’

শুক্রবার (১৬ মে) বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের ৩ নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির নেতা নির্বাচনের লক্ষ্যে তালহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

এ্যানি বলেন, ‘‘একজন উপদেষ্টাকে পানির বোতল মারা এটাও কম ষড়যন্ত্রের অংশ নয়। এক পক্ষকে যদি আরেক পক্ষের সঙ্গে লাগিয়ে দেওয়া যায়, একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি যদি সৃষ্টি করা যায়, তাহলে আমাদের টার্গেট, ভবিষ্যতের ভোট, যার জন্য আমাদের এত আন্দোলন-সংগ্রাম এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এটি একটি অদৃশ্য শক্তি। যা বারবার দেখা যাচ্ছিল না। কিন্তু এখন কিছুটা দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে কারা এ প্রক্রিয়াটাকে বাধাগ্রস্ত করছে।’’

তিন দফা দাবি আদায়ে গত বুধবার দুপুর থেকে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠাতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় একটি পানির বোতল তার মাথায় আঘাত করে। 

অন্যদিকে শাহরিয়ার আলম সাম্য গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুবৃত্তের ছুরিকাঘাতে আহত হন। বন্ধুরা সাম্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, “যেখানে ১৭ বছর লুটপাট হয়েছে, অনিয়ম-অত্যাচার হয়েছে। একটি নির্বাচিত সরকার এসেও সব সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। এখন অন্তর্বর্তী সরকার এ অল্প কয়দিনের মধ্যে সব দাবি মানতে পারবে না। অনেকে দাবি তুলবে। এ আলোচনাগুলো করতে হবে, সমাধানেরও চেষ্টা বের করতে হবে।”

তিনি বলেন, “কিন্তু সেখানে পুলিশ যেভাবে ছাত্রদের পিটিয়েছে, এটাও কিন্তু ঠিক করেনি। এর ভেতরে আবার ষড়যন্ত্র ঢুকছে। ষড়যন্ত্রটা হচ্ছে, পরিবেশটাকে উত্তপ্ত করার জন্য, ভোটের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য, স্বাভাবিক পরিবেশকে অস্বাভাবিক করার জন্য। একটি চক্র অর্থকরি নিয়ে বসে আছে। তারা দূর থেকে এ কাজগুলো করাচ্ছে।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট হাসিবুর রহমান, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, জেলা বিএনপির সদস্য এডভোকেট হাফিজুর রহমান ও সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ প্রমুখ।

লিটন//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ষড়যন ত র ব এনপ র উপদ ষ ট পর ব শ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প ‘বন্ধের ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে মানববন্ধন

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে এনপিবিসিএল-এ কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী দাবি আদায়ের নামে প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করে বিশৃংখলা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার ( ১৫ মে) সকালে পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের ফকিরের বটতলা এলাকায় সচেতন নাগরিক সমাজ ঈশ্বরদীর ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। 

বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে ঈশ্বরদীর শিল্প ও বণিক সমিতি, রিকশা চালক সমবায় সমিতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার নারী ও পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধন পরিচালনা করেন সচেতন নাগরিক সমাজ ও সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুজ্জামান টিপু। 

আরো পড়ুন:

মল্লিকা এক্সপ্রেস আটকে ঢাকাগামী ৪ ট্রেন চালুর দাবি

রাজশাহীতে ওসির বিচারের দাবিতে আইনজীবীদের মানববন্ধন

লিখিত বক্তব্যে সচেতন নাগরিক সমাজের নেতা ও ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘প্রকল্প এলাকায় দাবি আদায়ের নামে বিশৃংখলা সৃষ্টির কারণে প্রকল্প চালু করেও জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে অনিশ্চতার সৃষ্টি হয়েছে। যেকারণে ঈশ্বরদীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের প্রকল্পকে বন্ধ করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রখে দাঁড়াতে আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ৯৪ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই গ্রিডের সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হওয়ার কথা। এরপর ডিসেম্বরে স্টার্টআপ করার কথা। এই অবস্থায় প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করে বিশৃংখলা সৃষ্টির ঘটনা অশুভ সংকেত।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডে (এনপিবিসিএল) প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োাগ দেয়া হয়েছে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এ সময় বিএনপি ও বিরোধীদলের কাউকে নিয়োগ বা যোগদান করতে দেয়া হয়নি।’’ এ বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করতে এবং ফ্যাসিস্টদের দোসর যারা রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার দাবি জানান এস এম ফজলুর রহমান। 

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, প্রকল্পের কর্মীদের চাকরি সংক্রান্ত দাবি-দাওয়া থাকতে পারে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের হঠকারী আচরণে মনে হয়েছে তারা পরিকল্পিতভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মাঠে নেমেছে। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। দাবির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়ার পরও তারা আন্দোলনের নামে ন্যক্কারজনক এ কাজ করেছেন।  

দাবি আদায়ে আন্দোলনের নামে কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে এবং এ প্রকল্পকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রূপপুর প্রকল্পের নিরাপত্তা বিঘ্নিতকারী এবং বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের চিহ্ণিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয় মানববন্ধন থেকে। 

ঈশ্বরদী শিল্প ও বনিক সমিতির সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি বলেন, ‘‘রূপপুর প্রকল্প ঘিরে রাশিয়ানসহ বিদেশিদের আগমনে ঈশ্বরদীর আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার এবং প্রকল্পে দেশীয় প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে। রূপপুর প্রকল্প ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকার ঈশ্বরদীতে বিমানবন্দর অবিলম্বে চালুর বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই অবস্থায় প্রকল্প বন্ধ হলে ঈশ্বরদীর অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে এবং বিমানবন্দরও আর চালু হবে না।’’ 

প্রেস ক্লবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক স্পর্শকাতর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে রূপপুর প্রকল্প সার্বক্ষণিক আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার নজরদারিতে থাকে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে আন্দোলন, সমাবেশ বিশ্বে নজিরবিহীন ঘটনা। প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তার শর্ত ভেঙে মিছিল-সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা শুধু চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজই করেননি, প্রকল্পের অগ্রগতি ও পরবর্তী ধাপের আইএইএ এর লাইসেন্স প্রাপ্তিও হুমকিতে ফেলেছেন।’’  

এ সময় আরো বক্তব্য দেন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আহসান হাবিব, ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আশিকুর রহমান নান্নু, সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস আলমগীর, উন্নয়ন সংস্থা নিউ এরা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তাক আহমেদ কিরণ, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু সাঈদ লিটন, পাকশীর ব্যবসায়ী শামসুজ্জোহা পিপপু, আমিনুল ইসলাম স্বপন, মনিরুজ্জামান টুটুল, নারী নেত্রী সাথী খাতুন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ। 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র চলছে: শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী
  • উপদেষ্টাকে বোতল ছুড়ে মারা ষড়যন্ত্রের অংশ: লক্ষ্মীপুরে এ্যানি
  • সাম্য হত্যার দায় এড়ানো উপাচার্যের গন্তব্য
  • রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প ‘বন্ধের ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে মানববন্ধন