গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র চলছে: শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী
Published: 16th, May 2025 GMT
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী বলেছেন, দেশে চলমান আন্দোলন, রাজনৈতিক উত্তাপ ও সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাগুলোর পেছনে একটি গভীর ষড়যন্ত্র সক্রিয় রয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত, ভোটের পরিবেশ অশান্ত এবং জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা।
শুক্রবার লক্ষ্মীপুরে স্থানীয় বিএনপির কাউন্সিল উপলক্ষে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের তালহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন তিনি।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ছাত্রদলের উদীয়মান নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটি নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং একটি চক্রান্তের অংশ। একইভাবে একজন উপদেষ্টাকে (মাহফুজ আলম) জনসভায় পানির বোতল ছুড়ে মারা, পুলিশের দ্বারা শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে আহত করা, এসব ঘটনাও আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। সবকিছু মিলিয়ে একটি অদৃশ্য শক্তি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে কাজ করছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার্থীরা মিছিল করছে, দাবি তুলছে। এদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। কথা বলে, যুক্তি দিয়ে তাদের বিদায় জানাতে হবে। শক্তির মাধ্যমে এসব দমন করা গণতন্ত্রের জন্য ভালো বার্তা বহন করে না।
তিনি বলেন, ১৭ বছরের দুর্নীতি, লুটপাট, অনিয়ম-অত্যাচারের পর একটি অন্তর্বর্তী সরকার এসে সব সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। সবাইকে বুঝতে হবে, সব দাবি একসঙ্গে মানা সম্ভব নয়। তবে দাবি উঠবে, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমান, সদস্য হাফিজুর রহমান ও সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প ‘বন্ধের ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে মানববন্ধন
পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে এনপিবিসিএল-এ কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী দাবি আদায়ের নামে প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করে বিশৃংখলা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ১৫ মে) সকালে পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের ফকিরের বটতলা এলাকায় সচেতন নাগরিক সমাজ ঈশ্বরদীর ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে ঈশ্বরদীর শিল্প ও বণিক সমিতি, রিকশা চালক সমবায় সমিতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার নারী ও পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধন পরিচালনা করেন সচেতন নাগরিক সমাজ ও সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুজ্জামান টিপু।
আরো পড়ুন:
মল্লিকা এক্সপ্রেস আটকে ঢাকাগামী ৪ ট্রেন চালুর দাবি
রাজশাহীতে ওসির বিচারের দাবিতে আইনজীবীদের মানববন্ধন
লিখিত বক্তব্যে সচেতন নাগরিক সমাজের নেতা ও ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘প্রকল্প এলাকায় দাবি আদায়ের নামে বিশৃংখলা সৃষ্টির কারণে প্রকল্প চালু করেও জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে অনিশ্চতার সৃষ্টি হয়েছে। যেকারণে ঈশ্বরদীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের প্রকল্পকে বন্ধ করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রখে দাঁড়াতে আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ৯৪ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই গ্রিডের সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হওয়ার কথা। এরপর ডিসেম্বরে স্টার্টআপ করার কথা। এই অবস্থায় প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করে বিশৃংখলা সৃষ্টির ঘটনা অশুভ সংকেত।’’
তিনি বলেন, ‘‘বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডে (এনপিবিসিএল) প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োাগ দেয়া হয়েছে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এ সময় বিএনপি ও বিরোধীদলের কাউকে নিয়োগ বা যোগদান করতে দেয়া হয়নি।’’ এ বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করতে এবং ফ্যাসিস্টদের দোসর যারা রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার দাবি জানান এস এম ফজলুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, প্রকল্পের কর্মীদের চাকরি সংক্রান্ত দাবি-দাওয়া থাকতে পারে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের হঠকারী আচরণে মনে হয়েছে তারা পরিকল্পিতভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মাঠে নেমেছে। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। দাবির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়ার পরও তারা আন্দোলনের নামে ন্যক্কারজনক এ কাজ করেছেন।
দাবি আদায়ে আন্দোলনের নামে কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে এবং এ প্রকল্পকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রূপপুর প্রকল্পের নিরাপত্তা বিঘ্নিতকারী এবং বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের চিহ্ণিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।
ঈশ্বরদী শিল্প ও বনিক সমিতির সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি বলেন, ‘‘রূপপুর প্রকল্প ঘিরে রাশিয়ানসহ বিদেশিদের আগমনে ঈশ্বরদীর আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার এবং প্রকল্পে দেশীয় প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে। রূপপুর প্রকল্প ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকার ঈশ্বরদীতে বিমানবন্দর অবিলম্বে চালুর বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই অবস্থায় প্রকল্প বন্ধ হলে ঈশ্বরদীর অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে এবং বিমানবন্দরও আর চালু হবে না।’’
প্রেস ক্লবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক স্পর্শকাতর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে রূপপুর প্রকল্প সার্বক্ষণিক আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার নজরদারিতে থাকে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে আন্দোলন, সমাবেশ বিশ্বে নজিরবিহীন ঘটনা। প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তার শর্ত ভেঙে মিছিল-সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা শুধু চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজই করেননি, প্রকল্পের অগ্রগতি ও পরবর্তী ধাপের আইএইএ এর লাইসেন্স প্রাপ্তিও হুমকিতে ফেলেছেন।’’
এ সময় আরো বক্তব্য দেন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আহসান হাবিব, ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আশিকুর রহমান নান্নু, সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস আলমগীর, উন্নয়ন সংস্থা নিউ এরা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তাক আহমেদ কিরণ, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু সাঈদ লিটন, পাকশীর ব্যবসায়ী শামসুজ্জোহা পিপপু, আমিনুল ইসলাম স্বপন, মনিরুজ্জামান টুটুল, নারী নেত্রী সাথী খাতুন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা/শাহীন/বকুল