নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী আদমজীনগর মার্চেন্ট ওয়ার্কার্স (এম.ডব্লিউ) উচ্চ বিদ্যালয় গত পাঁচ বছর ধরে প্রধান শিক্ষকবিহীনভাবে চলছে।

রাজনৈতিক প্রভাব ও অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বে অচল হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কাঠামো, যার ফলে শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বিপর্যস্ত।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সভায় বিদ্যালয়ের বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক রওশন আরার একের পর এক হাইকোর্ট রিট দায়ের এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

তথ্য মতে, ২০২১ সালে নন-এমপিভুক্ত কেজি শাখার টিউশন ফি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একটি অভিযোগে প্রদান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

কিন্তু তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। উল্টো প্রমাণ পাওয়া গেছে, তিনি ৭,৭৭,১৯৪ টাকা বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বরে জমা দিয়েছেন। এরপর শিক্ষা অধিদপ্তর ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন।

তবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং স্বৈরাচারী ঘরানার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহকারী প্রধান শিক্ষক রওশন আরার রিট দায়ের করা, এই দুইয়ের চাপে গাজী নাজমুল হুদা এখনও বিদ্যালয়ে ফিরতে পারেননি।

সর্বশেষ হাইকোর্টের দেওয়া ৬ মাসের রিটের মেয়াদ ১৭ মে শেষ হয়েছে। চতুর্থ বারের মত তার যোগদান ঠেকাতে আবারও রিট দায়ের করা হচ্ছে বলে জানান গাজী নাজমুল হুদা।

এদিকে, বিদ্যালয়ে গত ৯ মাস ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, যিনি নিয়মিত কমিটি না থাকায় কাগুজে দায়িত্ব পালন করলেও কার্যত প্রশাসনিক কার্যক্রম অচল অবস্থায় রয়েছে।

গাজী নাজমুল হুদা বলেন, “আমি পাঁচ বছর ধরে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। বেতন না থাকায় স্ত্রী-সন্তান ও বাবা-মায়ের ভরণপোষণে হিমশিম খাচ্ছি। বিদ্যালয়ে যোগদান করতে পারলেই হয়তো ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম।”

অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির অভিযোগও ক্রমাগত বাড়ছে। রওশন আরার বিরুদ্ধে অডিটের নামে ১০ লক্ষাধিক টাকার অপচয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অর্থ কেটে নেওয়া, এবং অডিট কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করার অভিযোগ উঠেছে।

এক শিক্ষক বলেন, “রওশন আরা আমাদের জানিয়েছেন, অডিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করতে হলে টাকা লাগবে। এজন্য বেতন থেকে অংশ কেটে নিচ্ছেন।”

অভিভাবকদের অভিযোগ আরও গুরুতর। তাদের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে একাধিকবার ‘মানববন্ধনের নাটক’ সাজানো হয়েছে।

এক অভিভাবক বলেন,“আমার সন্তানন জানেই না কেন তাকে মানববন্ধনে দাঁড় করানো হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাপ দিয়ে ওদের নামিয়ে আনে।”

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুরাইয়া আশরাফী বলেন,“ বোর্ডেও নির্দেশ অনুযায়ী প্রধান শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহাল করা আইনগত এবং মানবিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক অচলাবস্থায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

এই পরিস্থিতিতে অভিভাবক ও এলাকাবাসী শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ দাবি করেছেন। তারা দ্রুত সরকারি তদন্ত কমিটি গঠন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা, এবং যোগ্য প্রধান শিক্ষককে পুনর্বহালের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে মুকুলের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন  

বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আতাউর রহমান মুকুলের উপর নেক্কার জনক হামলার নিন্দা জানিয়ে বন্দরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। 
এর ধারাবাহিকতা শুক্রবার (৪ জুলাই) বাদ জুম্মা বন্দরে সোনাকান্দা কিল্লা জামে মসজিদের সামনে ১৯,২০ ও ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে  মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন,“আতাউর রহমান মুকুল ভাই এই এলাকার মানুষের জন্য একজন নিবেদিতপ্রাণ । তিনি দুইবার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বন্দরবাসীর জন্য বহু উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন এবং সকল শ্রেণির মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছেন।

বক্তারা  আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শাসনামলে যখন বিএনপির নেতাকর্মীরা চরম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তখন মুকুল ভাই ছিলেন সবার ভরসার জায়গা। তিনি কারও পাশে দাঁড়াতে দ্বিধা করেননি, আইনি ও মানবিক সহায়তা দিয়ে বহু মানুষকে রক্ষা করেছেন। একজন অভিজ্ঞ, সাহসী ও সম্মানিত রাজনীতিবিদের ওপর এমন বর্বরোচিত হামলা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত।

বন্দরের ২০ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা গোলাম নবী মুরাদের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি নেতা আব্দুস সবুর খান সেন্টু, ফখরুল ইসলাম মজনু,  এড: বিল্লাল হোসেন, এড: আনিছ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক শিশু বিষয় সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন স্বপন, সদর থানা বিএনপি নেতা আব্দুর রাশেদ টিটু, ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ফারুক চৌধুরী,২০নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক  সভাপতি আঃ জব্বর পাঠান, ২০ নং ওয়ার্ড সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়া হান্নান, বিএনপির নেতা আরমান, মোঃ শাহিন, অলিদ মুন্সি, মোঃ এসাক আলী, মোঃ আসলাম, শহীদ হোসেন, ইয়া নবী, হাসান মৃধা, ও খোকন মির্জা প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুকুলের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ২৩ ও ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপি মানববন্ধন 
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ এলাকাবাসীর
  • দোহারে বিএনপি নেতা শিক্ষক হারুনুর রশিদের খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
  • সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা না থাকলে ভোট বর্জনের হুঁশিয়ারি হিন্দু মহাজোটের
  • চালিতাবুনিয়ায় নদীভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সেচ্ছাসেবীদের মানববন্ধন
  • বন্দরে মুকুলের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন  
  • শহরে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ 
  • গাজীপুরে গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যার বিচারের দাবিতে কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন 
  • বিল্ডিংয়ের বাড়তি অংশ ভাঙার দাবিতে দক্ষিণখানে মানববন্ধন