জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্র–জনতার ওপর হামলায় মদদ ও পরীক্ষার অনিয়মে জড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন জাতীয় ছাত্রশক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক কাজী মেহরাব। এতে বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনে হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার না করে গাদ্দারি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একাডেমিক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের আক্রোশের শিকার হয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘রেজাল্ট টেম্পারিংয়ের’ শিকার হচ্ছেন। এই প্রশাসন ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের বলির পাঁঠা বানিয়ে তারা শিক্ষক সিন্ডিকেট জিইয়ে রেখেছে। অবিলম্বে এসব শিক্ষকের বিচারকাজ শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।

ইংরেজি বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক খন্দকার আল ফাহাদ বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিচারের দাবি করে আসছি। কিন্তু আমাদের প্রশাসন একটা কথা বলে যে, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। ঠিক কথা, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। কিন্তু তারা ঠিকই প্রতিবার শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করতে পারে; এমনটি আগেও করেছে, বর্তমানেও করছে। যে প্রশাসনকে আমরা একটি গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসিয়েছি, তারা আজ এটিকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করছে।’

ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক নাদিয়া রহমান বলেন, হামলাকারী শিক্ষার্থীদের বিচার যদি এই দেড় বছরে করা সম্ভব হয়, তাহলে মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার কেন এই দেড় বছরে করা সম্ভব নয়? তারা জাকসুর আগে মিটিংগুলোয় বলেছিল, জাকসু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব শিক্ষকের বিচার সম্ভব। কোথায় সেই বিচার? জাকসু হওয়ার পর আজ প্রায় দুই মাস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোনো ধরনের বিচারের তৎপরতা প্রশাসনের ভেতরে দেখা যাচ্ছে না।

অবিলম্বে শিক্ষকদের বিচার না হলে এই প্রশাসনকে টেনেহিঁচড়ে নামানোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, এই শিক্ষকদের বিচার না হওয়ার পেছনে আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট জড়িত আছে। যে শিক্ষকেরা রেজাল্ট টেম্পারিং করছেন, তাঁদের অধিকাংশই আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট। যদি প্রশাসন এসব শিক্ষকের বিচার না করে, তাহলে সাবেক ভিসি নুরুল আলমের প্রশাসন যেভাবে বিদায় নিয়েছিল, এই প্রশাসনকেও সেভাবে নামানো হবে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইমন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র ব চ র ছ ত রশক ত র র স গঠক

এছাড়াও পড়ুন:

ভোলার নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন

সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌড়নগর এলাকার ১৫ জেলেকে উদ্ধারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুই ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। ধলীগৌড়নগরের মঙ্গল শিকদার–লালমোহন বাজার সড়কের মাস্টার বাজার এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।

নিখোঁজ জেলেদের স্বজনেরা জানান, ১৫ দিন আগে (১০ নভেম্বর) ‘মা বাবার দোয়া’ নামের একটি মাছ ধরার নৌকা নিয়ে ১৫ জন জেলে চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ঘাট থেকে সাগরে মাছ ধরতে যান। পাঁচ দিন পর তাঁদের ফিরে আসার কথা থাকলেও এখনো তাঁরা ফেরেননি। নৌকার মাঝি মো. ফারুক (৪৫) সেদিন রাত ৮টার দিকে পাঁচ দিনের বাজার-সদাই নিয়ে সাগরে রওনা হন। এরপর থেকে তাঁদের ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে রয়েছেন—ফারুক মাঝি, আলম মাঝি, মো. মাসুদ, আবদুল মালেক, নুরুল্লাহসহ ধলীগৌরনগরের ১ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আরও কয়েকজন। পরিবারগুলো শোক ও উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে। ঘাটে নৌকার শব্দ পেলেই ছুটে যান স্বজনেরা, প্রিয়জন ফিরে আসবে এই আশায়।

নৌকার মালিক দেলোয়ার হোসেন জানান, মাঝির ফোন বন্ধ পাওয়া গেলে তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং আত্মীয়স্বজনের পরামর্শ নিতে গিয়ে থানায় খবর দিতে দেরি হয়। ধারণা করা হচ্ছে, নৌকাটি ভারতের সীমানায় ঢুকে পড়ে নিখোঁজ হতে পারে। স্বজনদের অভিযোগ, নিখোঁজের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারস্থ হলেও তেমন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ কারণে স্থানীয় লোকজন সড়ক অবরোধ করেন। জেলেদের সন্ধানে আত্মীয়স্বজনেরা ট্রলারে করে সাগরেও গিয়েছেন। কিন্তু কোনো খোঁজ মেলেনি।

লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে বিভিন্ন থানায় কপি পাঠানো হয়েছে, এমনকি ভারতেও খবর দেওয়া হয়েছে। তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমদ আখন্দ বলেন, ‘নিখোঁজের সংবাদ আমরা পেয়েছি, তবে জেলের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ করা হচ্ছে।’

নিখোঁজ জেলে খোকনের স্ত্রী রিপা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর আয়েই সংসার চলত, এখন জানি না, কী হবে।’ নিখোঁজ জেলে হেলালের স্ত্রী মিতু বেগম জানান, ‘স্বামী বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিলেন, ফিরে একসঙ্গে বাবার বাড়ি যাব। এখন তাঁর কোনো খোঁজ নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোলা পৌরসভার কর্মীদের বিক্ষোভ, ‘সন্ত্রাসীদের ধরে দে, নইলে গাড়ি কিনে দে’ স্লোগান
  • বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে খুলনায় মানববন্ধনে হামলা, মারধর
  • ঠাকুরগাঁওয়ে বাউলদের মানববন্ধনের প্রস্তুতিকালে হামলা, আহত ২
  • ভোলার নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন
  • জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীদের আবারও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
  • মানিকগঞ্জে বাউলদের ওপর হামলায় মামলা, আসামি ২০০
  • জাবিতে নবীনদের বরণে নাট্যোৎসব ‘জাগরণী’ মঙ্গলবার থেকে