বাউলদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
Published: 27th, November 2025 GMT
মানিকগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি জায়গায় বাউলদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নির্দিষ্ট আলোচ্য সূচির বাইরে বিবিধ আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়, বিশেষ করে বাউল ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে যে উত্তেজনা বিরাজ করছে সেটি এবং আসন্ন নির্বাচন ও উপদেষ্টাদের মধ্যে যাঁরা নির্বাচন করতে চান, তাঁরা চলে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন কি না বা এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়েছে কি না।
এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচন বা বাউল বিষয়ে কোনো আলাপ হয়নি। তবে তিনি যেটা জানেন, সেটা হচ্ছে যাঁরা বাউলদের ওপর হামলা করেছেন, তাঁদের খুব দ্রুত গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী মানিকগঞ্জের পুলিশ কাজ করছে। অন্যান্য যে জায়গায় হামলা হয়েছে, সেসব জায়গায় পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে। সাংবাদিকেরা দ্রুত ফলাফল জানতে পারবেন।
পালাগানের আসরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বাউলশিল্পী আবুল সরকারকে ১৯ নভেম্বর রাতে মাদারীপুরের একটি গানের আসর থেকে আটক করে পুলিশ। তাঁর মুক্তির দাবিতে ২৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জে মানববন্ধনের জন্য সমবেত হওয়া বাউলদের ওপর হামলা করে ‘মানিকগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও তৌহিদি জনতা’ ব্যানারে থাকা একদল ব্যক্তি।
আবুল সরকারের গ্রেপ্তার ও বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এর মধ্যে গতকাল ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বাউলদের ওপর আবারও ‘তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে হামলা চালানো হয়েছে।
বাউলদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার এবং আবুল সরকারকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্র–জনতার ওপর হামলায় মদদ ও পরীক্ষার অনিয়মে জড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন জাতীয় ছাত্রশক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক কাজী মেহরাব। এতে বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনে হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার না করে গাদ্দারি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একাডেমিক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের আক্রোশের শিকার হয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘রেজাল্ট টেম্পারিংয়ের’ শিকার হচ্ছেন। এই প্রশাসন ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের বলির পাঁঠা বানিয়ে তারা শিক্ষক সিন্ডিকেট জিইয়ে রেখেছে। অবিলম্বে এসব শিক্ষকের বিচারকাজ শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।
ইংরেজি বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক খন্দকার আল ফাহাদ বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিচারের দাবি করে আসছি। কিন্তু আমাদের প্রশাসন একটা কথা বলে যে, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। ঠিক কথা, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। কিন্তু তারা ঠিকই প্রতিবার শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করতে পারে; এমনটি আগেও করেছে, বর্তমানেও করছে। যে প্রশাসনকে আমরা একটি গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসিয়েছি, তারা আজ এটিকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করছে।’
ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক নাদিয়া রহমান বলেন, হামলাকারী শিক্ষার্থীদের বিচার যদি এই দেড় বছরে করা সম্ভব হয়, তাহলে মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার কেন এই দেড় বছরে করা সম্ভব নয়? তারা জাকসুর আগে মিটিংগুলোয় বলেছিল, জাকসু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব শিক্ষকের বিচার সম্ভব। কোথায় সেই বিচার? জাকসু হওয়ার পর আজ প্রায় দুই মাস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোনো ধরনের বিচারের তৎপরতা প্রশাসনের ভেতরে দেখা যাচ্ছে না।
অবিলম্বে শিক্ষকদের বিচার না হলে এই প্রশাসনকে টেনেহিঁচড়ে নামানোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, এই শিক্ষকদের বিচার না হওয়ার পেছনে আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট জড়িত আছে। যে শিক্ষকেরা রেজাল্ট টেম্পারিং করছেন, তাঁদের অধিকাংশই আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট। যদি প্রশাসন এসব শিক্ষকের বিচার না করে, তাহলে সাবেক ভিসি নুরুল আলমের প্রশাসন যেভাবে বিদায় নিয়েছিল, এই প্রশাসনকেও সেভাবে নামানো হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইমন প্রমুখ।