বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ: বিএনপিপন্থি ৪ আইনজীবীকে শোকজ
Published: 18th, May 2025 GMT
হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামিকে জামিন না দেওয়ায় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ করায় বিএনপিপন্থি চার আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
তারা হলেন- ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম, ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক মিলন, ফোরামের সদস্য মো. জাবেদ ও এস এম ইলিয়াস হাওলাদার।
রোববার ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের সই করা নোটিশে বলা হয়, ‘শনিবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আপনারা অপেশাদার আচরণ করেছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ কারণে কেন আপনাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, আগামী তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও মহাসচিবের কাছে তা লিখিতভাবে জানাতে বলা হলো।
শনিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.
জানা যায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি হানিফ মেম্বার গত ১২ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক ওই আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী। শনিবার ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারক নামঞ্জুরের পর গালিগালাজ ও অসদাচরণের ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ মডেল থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় হানিফ মেম্বার নামের এক আসামির জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। খোরশেদ আলমসহ কয়েকজন আইনজীবী জামিন শুনানি করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। পরে আইনজীবীরা স্যারের সঙ্গে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। ফ্যাসিবাদের দোসর, দালাল বলেন। আদালতের কজলিস্ট ছুড়ে ফেলে দেন। তারা বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, হুমকি দেন।’
এ বিষয়ে ঢাকার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের সঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের একটি কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খোরশেদ আলম বিচারককে বলছেন, ঘটনার তারিখ, সময়, ঘটনাস্থল সেইম। দুইটা মামলা, এটা হয় না কি? এরপর এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক।
তবে এ ঘটনার সময় কয়েকজন আইনজীবী আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আবদুল খালেক মিলন এবং অন্যরা বিচারকের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন। এক আইনজীবী ধমকের সুরে বলেন, ‘চুপ।’ তারা বিচারককে বলেন, ‘আপনি আওয়ামী লীগের দালাল।’ পরে বিচারককে গালাগাল করেন তারা।
এদিকে যে আসামির জন্য বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা জামিন চেয়েছিলেন, সেই আসামি হানিফ মেম্বার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলে জানা গেছে। গত ৬ মে ফজলুল হক নামের এক ব্যক্তি হানিফ মেম্বারসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৭০-৮০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ হত য চ ষ ট অসদ চরণ আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
মিল্টন সমাদ্দার ও তাঁর স্ত্রী কারাগারে
আশ্রয়কেন্দ্র ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’–এর প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দার ও তাঁর স্ত্রী মিঠু হালদারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মিরপুর থানায় করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ শনিবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মিল্টন সমাদ্দারের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান।
আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মিরপুর থানায় করা মামলায় মিল্টন সমাদ্দার ও তাঁর স্ত্রী মিঠু হালদার জামিনে ছিলেন। ৫ মে মিল্টনের মা মারা যান। পরে সেদিন তিনি সস্ত্রীক গ্রামের বাড়ি বরিশালে চলে যান। পরদিন ৬ মে মামলার শুনানির দিন তাঁরা আদালতে হাজির হতে পারেননি। সেদিন আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু হাজির না থাকায় আদালত মিল্টন সমাদ্দার ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। আজ তাঁরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নাকচ করেন।
আরও পড়ুনমৃত্যুসনদ জাল করার অভিযোগে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মামলা০২ মে ২০২৪মারধর করার অভিযোগ এনে গত বছরের ২ মে মিল্টন সমাদ্দার ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা করেন দারুস সালাম এলাকার বাসিন্দা মতিউর রহমান। মামলায় অভিযোগ করা হয়, মতিউর তিন বছর আগে মিরপুর-১ নম্বরের দক্ষিণ বিশিলে মোতালেব হোসেন নামের এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি এ ব্যাপারে দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ওই ব্যক্তিকে সুচিকিৎসা ও দেখভাল করার জন্য মিল্টন সমাদ্দারের প্রতিষ্ঠানে দেন।
আরও পড়ুনমিল্টনের আশ্রম থেকে উদ্ধার সেলিমকে সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে চায় পরিবার১২ মে ২০২৪পরে মতিউর রহমান খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারেন, মিল্টন সমাদ্দার ওই ব্যক্তিকে তাঁর স্বজনদের কাছে দিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে ওই আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে মিল্টন ও তাঁর সহযোগীরা মতিউর ও তাঁর দুই বন্ধুকে লাঠিপেটা করে আহত করেন। তাঁরা তাঁর কাছে থাকা জিডির কপি ও মোতালেবের বিষয়ে আশ্রয়কেন্দ্রটি থেকে যে কাগজ দেওয়া হয়েছিল, তা ছিনিয়ে নেন। পাশাপাশি মিল্টন ও তাঁর সহযোগীরা মতিউরদের মুঠোফোন থেকে মারধরের ভিডিও মুছে ফেলেন এবং সাদা কাগজে তাঁদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মিল্টন সমাদ্দার। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। জালিয়াতির মাধ্যমে চিকিৎসক সেজে মৃত্যুসনদ দেওয়াসহ নানা অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুনমিল্টনের অনেক ভয়াবহ-রোমহর্ষক ঘটনা আছে: হারুন অর রশীদ০৬ মে ২০২৪