বিএসএফের গুলিতে সুনামগঞ্জের যুবক আহত
Published: 19th, May 2025 GMT
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মো. সামছু মিয়া (২৭) নামে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) ভোররাতে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ব্যাটালিয়ন ২৮ বিজিবি'র চিনাকান্দি বিওপি সংলগ্ন ১২১০/১০-এস সীমান্ত পিলারের পাশে এ ঘটনাটি ঘটে।
আহত সামছু মিয়া বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা রাজাপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ সত্তার মিয়ার ছেলে।
বিজিবি জানায়, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ৪ জন চোরাচালানী মালামাল আনার উদ্দেশ্যে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করে। প্রথমে বিএসএফ সদস্যরা তাদের বাধা দেন। এক পর্যায়ে ওপারের রাজাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের টহল দল তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে সামছু মিয়া বাম কাঁধে গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় সাথের তিনজন তাকে নিয়ে দ্রুত বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। পরে আহত অবস্থায় সামছু মিয়াকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সুনামগঞ্জ ব্যাটেলিয়ন (২৮ বিজিবির) অধিনায়ক এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, “ঘটনার পর থেকে সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল এবং গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে, সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
তিনি বলেন, “যেহেতু সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমানায় কারফিউ চলছে। তাই আমাদের দেশের নাগরিক সতর্ক থাকা জরুরী। আর অবৈধভাবে প্রবেশ ঠেকাতে আমাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।”
ঢাকা/মনোয়ার/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন মগঞ জ ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
রাত জেগে সীমান্ত পাহারা দিল বিজিবি-জনতা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে গত বৃহস্পতিবার রাতে পুশইনের (ঠেলে পাঠানো) চেষ্টা করেছে ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)। এ খবর পেয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সীমান্তে জড়ো হন স্থানীয়রা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে রাত জেগে পাহারা দেয় জনতা। এ নিয়ে সীমান্তে উদ্বেগ-উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যায় বিএসএফ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা বিমানবন্দরের পাশের গেটের কাছে প্রায় ১৫০ ভারতীয় নাগরিককে জড়ো করা হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি জানার পর বিজিবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি সতর্কতা অবলম্বন করে। রাতভর টহল জোরদার করে।
অন্য একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে ৭৫০ নারী-পুরুষকে পুশইন করতে জড়ো করে বিএসএফ। খবর পেয়ে সতর্ক অবস্থান নেয় বিজিবি। তখন স্থানীয় মসজিদগুলোতে মাইকিং করা হয়। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদের মাইকে ঘোষণা শুনে সিঙ্গারবিল, বিষ্ণুপুর, নলঘরিয়া, মেরাসানী, নোয়াবাদী সীমান্তে কয়েকশ লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে জড়ো হয়। অনেকে ফেসবুকে লাইভে এসে লোকজনকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান। কয়েকশ লোক জড়ো হলে পিছু হটে বিএসএফ।
সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, বিজিবির টহল তৎপরতা বেড়ে গেলে সীমান্ত এলাকার গ্রামবাসীর মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় কয়েকটি মসজিদ থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।
এ ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ রাত ৩টা ৩৩ মিনিটে ফেসবুকে সিঙ্গারবিল ইউনিয়নে যাদের যা কিছু আছে, তা নিয়ে সীমান্তে চলে আসার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বিজিবিকে সহায়তা করার অনুরোধ করেন।
নোয়াবাদী গ্রামের আনিস মিয়া ও নলগড়িয়া গ্রামের ফজলুল হক জানান, বিজিবির টহল তৎপরতা বেড়ে গেলে সীমান্ত এলাকায় গ্রামবাসীর মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় কয়েকটি মসজিদ থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। এটি বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ঘটে। এর পরপর ফেসবুকে ঘটনাস্থলের ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধনা ত্রিপুরা বলেন, ‘সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। পুশইনের চেষ্টার খবরে জনগণ বিজিবির সঙ্গে থেকে প্রতিহত করেছে। এখনও সতর্ক অবস্থানে আছেন সবাই।’
২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাব্বার আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে আমরা সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছি। বিএসএফ পুশইন করবে বলে খবর আসে। এ অবস্থায় বিজিবি সতর্ক অবস্থান নেয়। পাশাপাশি স্থানীয় জনতা সীমান্তে জড়ো হয়। এখন পর্যন্ত এ সীমান্ত দিয়ে কোনো অনুপ্রবেশ ঘটেনি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে।’
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারতের নানা রাজ্যে অনুপ্রবেশকারী খোঁজার অভিযান শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারীদের আটক করা হয়। এদের অনেককে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ। ফিরে আসার পর অনেকে নির্যাতনের অভিযোগও করছেন। ৪ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের পাঁচ জেলার সীমান্ত দিয়ে ৩১৮ জনকে ঠেলে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪ মে মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১০ জন, ৭ মে খাগড়াছড়ি ও সাতক্ষীরা দিয়ে যথাক্রমে ৬৬ ও ৭৮, মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৭, ৮, ১৪ ও ১৫ মে ১৪৮ এবং ১৪ মে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ১৬ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়।