জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মামলায় গণহারে আসামি করার ঘটনায় ব্লাস্টের উদ্বেগ
Published: 20th, May 2025 GMT
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঘটনায় হওয়া মামলাগুলোতে হয়রানিমূলকভাবে গণহারে আসামি করার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। সংস্থাটি প্রকৃত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতেরও দাবি জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ব্লাস্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে, হয়রানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অনেককে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। এভাবে গণহারে মামলায় সম্পৃক্ত করা এবং গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে ব্লাস্ট।
মানবাধিকার ও আইনি সহায়তা প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থাটি গণগ্রেপ্তার এবং হয়রানি বন্ধে সরকারেরর প্রতি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গণহত্যা এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রকৃত দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে আটকের বিষয়টি উল্লেখ করে বিবৃতিতে ব্লাস্ট বলেছে, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছাড়া, যথাযথ প্রমাণ দাখিল না করে শুধু হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এমন ঢালাওভাবে আসামি হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত করে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এভাবে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হলে মামলাগুলোর তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন এবং প্রকৃত অপরাধীদের যথাযথ বিচার নিশ্চিত করা দুরূহ হয়ে পড়বে; যা মূলত জুলাই-আগস্টে ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানের মূল ধারাকে বিঘ্নিত করবে।
বিবৃতিতে মামলা দায়ের এবং আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও সুষ্ঠু তদন্তের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কাউকে হয়রানি না করে নিরপেক্ষ ও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তির যথাযথ বিচার নিশ্চিতের দাবি জানায় বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থাটি।
গত রোববার সকালে থাইল্যান্ডে যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকার ভাটারা এলাকায় একজনকে হত্যাচেষ্টার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ অনুসারে ২২ মে তাঁর জামিন শুনানির দিন ধার্য করে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার সকালে নুসরাত ফারিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন। এরপর জামিনে মুক্তি পেয়ে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে তিনি বেরিয়ে আসেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ল ই আগস ট র ঘটন হয়র ন
এছাড়াও পড়ুন:
৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা
সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী