ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাতেও রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের সামনের মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। মধ্যরাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে সড়কে ছিলেন ইশরাক হোসেন।

মধ্যরাতে ওই মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক শ নেতা–কর্মী সড়কে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় তাঁদেরকে ‘লড়াই, লড়াই, লড়াই চাই/ লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘যমুনারে যমুনা/ আমি কিন্তু যাব না,’ ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা/ চলবে না, চলবে না,’ ‘আদালতে হস্তক্ষেপ/ চলবে না, চলবে না,’ ‘এ লড়াইয়ে জিতবে কারা/ ইশরাক ভাইয়ের সৈনিকেরা’সহ নানা স্লোগান দেন তাঁরা। এই বিক্ষোভ ঘিরে এলাকাটিতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

বিএনপির নেতা–কর্মীদের এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয় বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। মৎস্য ভবন মোড়, কাকরাইল মসজিদের সামনের মোড়সহ আশপাশের এলাকায় তাঁরা অবস্থান নেন। দিনভর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যান তাঁরা।

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অবস্থান কর্মসূচিতে এসে ঘোষণা দেন, মেয়র পদে দায়িত্ব বুঝে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

পাশাপাশি তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি বলেন, সরকারের নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনতে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ করা উচিত। পরে তিনি আন্দোলনস্থলে অবস্থান নেন। রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অবস্থান করেন তিনি।

আন্দোলনস্থল ছেড়ে যাওয়ার আগে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন ইশরাক হোসেন। অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনতে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জনগণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে আদালতের রায় পাওয়ার পর থেকে পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ করতে গিয়ে এখানে প্রমাণিত হয়েছে বর্তমান সরকার পুরোপুরি নিরপেক্ষ নন। এখানে বিভিন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন, যাঁরা বিশেষত বিএনপির বিরুদ্ধে কাজ করছেন এবং আমাদেরকে বাধাগ্রস্ত করছেন। এ রকম একটি রাজনৈতিক মনোভাবসম্পন্ন অথবা একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি সফট কর্নার রয়েছে এ রকম যদি একটি সরকার থাকে, তাদের অধীনে কোনো দিনও নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।’

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমাদের দাবি হচ্ছে, উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা দলের সাথে সম্পৃক্ত, তাদেরকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ করে তারা তাদের দলে গিয়ে রাজনীতি করুক, সংগঠন করুক, তাদেরকে স্বাগতম, কোনো সমস্যা নাই।’

একজন উপদেষ্টার বিষয়ে অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আদালত থেকে আমরা রায় পাওয়ার পর একজন উপদেষ্টা রায় দেওয়া বিচারককে ফোন করে একধরনের হুমকি প্রদান করে। যেহেতু অফিশিয়াল প্রমাণ নাই, তাই এত দিন বিষয়টি সবাইকে বলি নাই। এরপর নির্বাচন কমিশন, আইন মন্ত্রণালয়সহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আমি যাতে শপথ নিতে না পারি, তাতে তাঁরা হস্তক্ষেপ করেন।’

এই উপদেষ্টা পরিষদ বহাল থাকা অবস্থায় সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও সঠিক নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় মন্তব্য করে ইশরাক বলেন, ‘তাই এটাকে (উপদেষ্টা পরিষদকে) পরিবর্তন করতে হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন দ ই উপদ ষ ট র পদত য গ অবস থ ন ন উপদ ষ ট র সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শিক্ষার্থী নিহত, মা-ভাবি আহত

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুন্দশী-মল্লিকপুর-পাঁচুড়িয়া আঞ্চলিক সড়কে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সালমান মল্লিক (১৬) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার মা চায়না বেগম ও ভাবি তাহেরা খানম। 

বুধবার (২১ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মল্লিকপুর গ্রামের ডাক্তার আজিজুর রহমান মোয়াজের বাড়ির সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহত সালমান মল্লিক দোয়া-মল্লিকপুর গ্রামের মৃত শহীদ মল্লিকের ছেলে। সে মঙ্গলহাটা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। 

পরিবার ও পুলিশ জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সালমান তার মা চায়না বেগম ও ভাবি তাহেরা খানমকে নিয়ে লোহাগড়া বাজার থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি রওনা হয়। পথিমধ্যে মল্লিকপুর ডাক্তার আজিজুর রহমান মোয়াজের বাড়ির সামনে পৌঁছালে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা একটি রোড রোলারে সজোরে আঘাত হানে। পরে স্থানীয় লাকজন আহতদের উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার বেলাল সানী সালমানকে মৃত ঘোষণা করেন। 

অন্যদিকে আহত চায়না বেগম ও তাহেরা খানমকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহত সালমানের মরদেহ পরিবারের কাছে হন্তান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা/শরিফুল/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ